বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, জামায়াতকে রাজনীতি করার সুযোগ দিতে হবে। একদেশে দুই আইন চলতে পারে না। দেশের প্রত্যেক নাগরিককে সমান অধিকার দিতে হবে। জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ বন্ধ সকল শাখা অফিস খুলে দিয়ে স্বাভাবিক দলীয় কার্যক্রম এবং সকল রাজনৈতিক তৎপরতা পরিচালনার সুযোগ দিতে হবে।গতকাল বৃহস্পতিবার (৮ জুন) দিনাজপুর দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা শাখার উদ্যোগে ভার্চুয়ালি আয়োজিত বিশাল কর্মী সম্মেলনে প্রধান মেহমানের আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকার জনগণের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। দেশের মানুষের জানমালের কোনো নিরাপত্তা নেই। জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার নেই। দেশের মানুষ এ সরকারের বিদায়ের প্রহর গুনছে। জেল জুলুমের ভয় না করে শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন সংগ্রাম বেগবান করতে হবে। কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি আদায়ে রাজপথে সোচ্চার ভূমিকা রাখতে হবে। দেশের মানুষ কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে আন্দোলন করছে। সরকারকে জনগণের ন্যায্য দাবি মেনে নিয়ে আগামী সংসদ নির্বাচন কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে দিতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, দিনাজপুর দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা সম্ভাবনাময় এলাকা। এখান থেকে আমাদের মনোনীত প্রার্থী মো: আনোয়ারুল ইসলামকে বিজয়ী করে সংসদে পাঠাতে সর্বাত্মক ভূমিকা পালন করতে হবে।
তিনি জামায়াতের সকল কর্মী সমর্থকদের কুরআন, হাদিস ও ইসলামী সাহিত্য অধ্যয়ন করতে এবং জামায়াতে সালাত আদায়ে জোর নির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি শাহাদাতের তামান্না নিয়ে দীন কায়েমের পথে অটল থাকতে জনশক্তিদের অনুরোধ জানান। আমাদেরকে জিহাদ ফী সাবিলিল্লাহর পথে ইনফাকের সর্বোচ্চ পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করতে হবে। কারাগারে আটক আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানসহ জামায়াতের সকল নেতাকর্মী এবং আলিম উলামাদের মুক্তির দেয়ার জন্য তিনি সরকারের প্রতি দাবি জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের পরিচালক মাওলানা আবদুল হালিম বলেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে বিজয় লাভ করার জন্য সাধারণ মানুষের কাছে ব্যাপক দাওয়াত দিতে হবে। কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি আদায়ে সর্বস্তরের জনগণকে সাথে নিয়ে আন্দোলন-সংগ্রাম বেগবান করতে হবে। এ সরকারের পতনের হাওয়া পরিলক্ষিত হচ্ছে। তারা প্রলাপ বকতে শুরু করেছে। তিনি জামায়াতের সকল জনশক্তিকে আত্মগঠন, কর্মী গঠন, পরিবার গঠন ও সমাজ গঠনে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি দেলোয়ার হোসেন বলেন, ইসলামী আন্দোলনে জান ও মালের ত্যাগ এবং কুরবানির মাধ্যমে আল্লাহর যমীনে তার দীন কায়েমে সোচ্চার হতে হবে। ইক্বামাতে দীনের আন্দোলনে ও ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে শহীদি কাফেলার সকলকে ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।
জেলা আমির মো: আনোয়ারুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও জেলা সেক্রেটারি সাইদুল ইসলাম সৈকতের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত কর্মী সম্মেলনে অন্যানের মধ্যে আলোচনা রাখেন জয়পুরহাট জেলা আমির ডা. ফজলুর রহমান সাঈদ, ঠাকুরগাঁও জেলা আমির মাওলানা আব্দুল হাকিম, দিনাজপুরের সাবেক জেলা আমির আফতাব উদ্দিন মোল্লা, গাইবান্ধা জেলার সাবেক আমির ডা. আব্দুর রহীম, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও দিনাজপুর দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার নায়েবে আমির মুহাদ্দিস ডক্টর এনামুল হক ও ছাত্র শিবির দিনাজপুর দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা শাখার সভাপতি মিনারুল ইসলাম প্রমুখ।
উপস্থিত ছিলেন জেলা সহকারী সেক্রেটারি হাফিজুল ইসলাম, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আবুল কাসেম, সুলতানুল আলম, মঞ্জুরুল কাদের বাবু, মাওলানা আবু হুদা ও আলমগীর হোসেন প্রমুখ। প্রেস বিজ্ঞপ্তি