ডাক্তারের নিকট মানুষ সহজে যেতে চায় না। বিশেষ করে গ্রামের মানুষগুলো বিরাট কোনো বিপদ না পড়লে ডাক্তারের কাছে যায় না। এর পেছনে কতগুলো কারণের মধ্যে হয়রানি একটি। নানা ধরনের হয়রানির মধ্যে দালালদের দৌরাত্ম্য অন্যতম কারণ। ওরা সরকারি হাসপাতালগুলোর সামনে নানা প্রলোভন দেখিয়ে রোগীদের সর্বস্ব লুট করে নেয়। তারা তাদের পছন্দ মতো ক্লিনিকে ভর্তি করার জন্য যুদ্ধ বাঁধিয়ে দেয়। এ ক্ষেত্রে টানাটানির জন্য রোগীরা আরো বেশি কাতর হয়ে যায়। বেসরকারি ক্লিনিকে ভর্তি হলে প্রথমে রোগীরা টেস্ট হয়রানির সম্মুখীন হয়। সাধারণ জ্বরের জন্য গেলেও রোগীকে অন্তত পাঁচ/সাতটি টেস্ট দেয়। টেস্টের মূল্যও রাখা হয় অস্বাভাবিক হারে। টেস্ট করতে করতে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে। সময় ও অর্থ দুইই যায়। ধৈর্যেরও একটা ব্যাপার আছে। রোগী ব্যথায় কাতরায়, কিন্তু টেস্ট ছাড়া তারা রোগীর চিকিৎসা করেন না। যত রোগী আসে সব রোগীকেই বিভিন্ন টেস্ট দেয় ফলে রিপোর্ট প্রস্তুত করতেও দেরি হয়। বেসরকারি ক্লিনিকগুলোতে কোনো কোনো সময় লাইসেন্স বিহীন ডাক্তাররাও সিজার করে থাকে বলে খবর প্রকাশিত হয়। ফলে রোগীরা নানা জটিলতায় পড়ে। চিকিৎসার নামে অসংখ্য টেস্ট রোগীর হাসপাতাল ভীতি বাড়িয়ে তোলে। অনেক সময় দেখা যায়, ডাক্তার টেস্ট রিপোর্ট ভালোভাবে না দেখেই প্রেসক্রিপশন করে দেয়। কারণ, তিনি হয়তো জানেন, এসব টেস্ট তো করার দরকার ছিলো না। প্রেসক্রিপশনে আবার অনেক রকমের ঔষধ লেখা হয়। প্রয়োজন থাকলেও লেখা হয়, আবার প্রয়োজন না থাকলেও লেখা হয়। ডাক্তারদের সঙ্গে দেশের প্রায় সকল ঔষধ কোম্পানির একটা অলিখিত চুক্তি থাকে। তাই হয়তো, প্রতিটি প্রেসক্রিপশনে যত বেশি সম্ভব কম্পানির ঔষধ রাখতে হয়। ইদানিং আবার ডাক্তারদের ভিজিটও বাড়ছে। বর্তমান এই লাগামহীন দ্রব্যমূল্যের বাজারে ডাক্তাররাও যদি এমন হয় তাহলে সাধারণ মানুষ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে? মানুষ, মা-বাবার পর ডাক্তারদেরই ভরসা করে। কিন্তু কিছু কিছু ডাক্তারের আচরণ অত্যন্ত কঠোর। রোগীদের অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে, এমন কি মারধরও করে। এসব অনৈতিক ব্যবহার থেকে ডাক্তারদের বেড়িয়ে আসতে হবে। আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় অনেক আগে থেকে নানা রকম অনিয়ম, দুর্নীতি হয়ে আসছে। কেউই সেভাবে নজর দেয়নি। এখন স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সাথে যারা জড়িত আছেন, সবাইকে বলব, আমরা সবাই মানুষ, আসুন আমরা সবাই মানবিক হই।,মধুখালী, ফরিদপুর