স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন
আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লড়াইকে চীন সবসময় সম্মান করে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা যেভাবে আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে লড়ে নিজ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন তা চীন সবসময় সম্মান করে। আন্তর্জাতিক নিয়ম-নীতি ও জাতিসংঘ সনদ অনুযায়ী কোনো দেশের অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা অনুচিত। গতকাল বৃহস্পতিবার (২২ জুন) স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। এ সময় এসব কথা বলেন চীনা রাষ্ট্রদূত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নতির ভূয়সী প্রশংসা করে ইয়াও ওয়েন বলেন, এশিয়ার দেশ হিসেবে বাংলাদেশের এগিয়ে চলা এশিয়ার অন্য দেশের জন্য অনুপ্রেরণার উদাহরণ। চীন বাংলাদেশের এই অগ্রগতিতে বিশস্ত সঙ্গী হিসাবে পাশে থাকতে চায়।
মো. তাজুল ইসলাম এ সময় ৯০ দশকে চীনের শেনজিং ভ্রমণের স্মৃতিচারণ করে বলেন, চীনের অবকাঠামো, সক্ষমতা এবং প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের প্রমাণ তখনই অনুধাবন করা যেতো। বর্তমানে চীন বিশ্বের দ্বিতীয় অর্থনৈতিক শক্তি উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এশিয়ার দেশ হিসেবে এ অর্জন আমাদের সবার জন্যই গর্বের।
এ সময় চীনা রাষ্ট্রদূত জানান, চীনের এখন জিডিপি ১৯ দশমিক ৩৭ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। তিনি বলেন, উভয় দেশ পারস্পরিক লাভ ও মানুষের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করতে পারে। অর্থনৈতিক জোট ব্রিকসে বাংলাদেশের যোগদানের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে ইয়াও ওয়েন বলেন, এতে বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের দ্বীপাক্ষিক সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে। রাষ্ট্রদূত দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগার প্রকল্পে চীনা অর্থায়নের বিষয় উল্লেখ করেন। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করার ফলে পরিবেশের সুরক্ষার সঙ্গে সঙ্গে প্রকল্প সংলগ্ন মানুষের জীবনমান উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে বলে জানান। রাজশাহীতে নির্মিতব্য উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ভূ-উপরস্থ পানি শোধনাগার প্রকল্পে চীনা সহযোগিতার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
বাংলাদেশের উন্নয়নে চীন আরও ভূমিকা রাখতে চায় জানিয়ে ইয়াও ওয়েন জানান, বাংলাদেশ যদি প্রকল্প প্রস্তাব দেয় তাহলে চীন দুইদেশের মধ্যে সম্পৃক্ততা আরও বাড়াতে চায়। এ সময় চীনা রাষ্ট্রদূত চীনের অর্থায়নে চলমান বিভিন্ন প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করেন। স্থানীয় সরকারমন্ত্রী এ সময় বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে চীনা সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানান। এ প্রকল্পকে একটি আদর্শ বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করে মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ক্রমবর্ধমান নগরায়ণের ফলে উৎপন্ন বর্জ্য নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে এ প্রকল্প বাংলাদেশে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।
আলোচনা শেষে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এবং চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন নিজ নিজ দেশের স্মারক উপহার বিনিময় করেন।