সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, পদ্মা সেতুতে দৈনিক গড়ে সাড়ে ১৫ হাজার গাড়ি চলাচল করে। এতে প্রতিদিন গড়ে প্রায় দুই কোটি ১৮ লাখ টাকা আয় হয়।
এক বছরে গাড়ি চলাচল ও আয় সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘২০২২ সালের ২৫ জুন থেকে গতকাল ২৪ জুন পর্যন্ত ৫৬ লাখ ৭৫ হাজার যানবাহন চলাচল করে পদ্মা সেতুতে। এক বছরে প্রায় ৭৯৮ কোটি ২৩ লাখ ৯৬ হাজার টাকা আয় হয়েছে।’ গতকাল রোববার সেতু ভবনের সম্মেলন কক্ষে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘এক বছর আগে ঠিক এইদিনে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের রূপকার, সময়ের সাহসী নেতৃত্ব, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্মাণ কাজ শেষে পদ্মা সেতু যানবাহন চলাচলের জন্য আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।’ ‘এর পরদিন ২৬ জুন সকাল থেকে যানবাহন চলাচল শুরু করে আমাদের স্বপ্ন ও সম্ভাবনার প্রতীক পদ্মাসেতুর ওপর দিয়ে। বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় উন্মোচিত হয় নবদিগন্ত। শেখ হাসিনা সরকারের সাফল্যের মুকুট যোগ হয় আরেকটি হিরন্ময় পালক’ বলেন তিনি। সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘২৫ জুন ২০২২ থেকে গতকাল অর্থাৎ ২৪ জুন রাত ১২টা পর্যন্ত এ সেতু দিয়ে পারাপার হয়েছে সর্বমোট ৫৬ লাখ ৭৫ হাজার যানবাহন। দৈনিক গড়ে সাড়ে ১৫ হাজার যানবাহন পারাপার হচ্ছে এ সেতু দিয়ে, যা আমাদের পূর্বানুমানের চেয়েও বেশি। এ থেকে বোঝা যায়, পদ্মা সেতু যাত্রী ও পণ্য পরিবহনে অসামান্য অবদান রেখে চলেছে। শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়ন জনগণের জন্য। এর সুফল ভোগ করছে।’
টোল বিষয়ক পরিসংখ্যান দিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন গড়ে টোল আদায় হচ্ছে প্রায় দুই কোটি ১৮ লাখ টাকা করে। গত শনিবার রাত পর্যন্ত পদ্মা সেতুর টোল-রাজস্ব আদায় হয়েছে ৭৯৮ কোটি ২৩ লাখ ১৬ হাজার টাকা। যা আজ বিকাল নাগাদ ৮০০ কোটিতে উন্নীত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘পদ্মা সেতুর টোল নিয়ে একটি বিষয় স্পষ্ট করতে চাই, পদ্মা সেতু পারাপারে একমাত্র রাষ্ট্রপতি ছাড়া রাষ্ট্রের সব নাগরিকের টোল প্রদানে বাধ্যবাধকতা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীও সেতু পারাপারে টোল প্রদান করেছেন। তিনি উদ্বোধনের দিনেই ৫৯ হাজার ৬০০ টাকা টোল দিয়েছেন। এছাড়া বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও অন্যান্য সংস্থা তাদের যানবাহনের বিপরীতে ৯১ লাখ ৭০ হাজার টাকা টোল দিয়েছে।’
সেতু নির্মাণ ব্যয়ের অর্থ বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ (বিবিএ) সরকারের কাছ হতে ঋণ হিসেবে নিয়েছে উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘এ ঋণের টাকা ধাপে ধাপে সরকারি কোষাগারে ফেরত দেবে বিবিএ। এরই মধ্যে সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে চারটি কিস্তি পরিশোধ করা হয়েছে। প্রথম দুটি কিস্তি বাবদ প্রায় ৩১৬ কোটি ৯১ লাখ এবং তৃতীয় ও চতুর্থ কিস্তি বাবদ প্রায় ৩১৬ কোটি তিন লাখ টাকাসহ সর্বমোট প্রায় ৬৩২ কোটি ৯৪ লাখ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিয়েছে।’ চুক্তি অনুযায়ী ৩৫ বছরের মধ্যেই বিবিএ সম্পূর্ণ অর্থ সরকারকে ফেরত দেয়ার কথা রয়েছে বলে জানান মন্ত্রী। সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন সেতু বিভাগের সচিব মো: মনজুর হোসেন এবং পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (পিডি) প্রকৌশলী মো: শফিকুল ইসলাম।