শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩৮ পূর্বাহ্ন

শরীয়তপুর শহরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা না রেখেই চলছে বহুতল ভবনের নির্মাণ কাজ: দুর্ঘটনা এড়াতে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ উপজেলা প্রশাসনের

মঞ্জুরুল ইসলাম রনি শরীয়তপুর :
  • আপডেট সময় বুধবার, ২ আগস্ট, ২০২৩

শরীয়তপুর শহরের উপর নিরাপত্তা ব্যবস্থা না রেখেই চলছে বহুতল ভবনের নির্মাণ কাজ। এতে যে কোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দূর্ঘটনা। আশংকা পথচারী ও স্থানীয়দের। স্থানীয়রা বলছেন, অতি দ্রুত প্রশাসন যদি ব্যবস্থা গ্রহণ না করে তাহলে যেকোনো সময়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তবে ঘটনার বিষয় জানার সাথে সাথে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ প্রদান করেন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পৌরসভার শান্তিনগর ১নং ওয়ার্ড সাবেক মেয়র মরহুম নুরু মোহাম্মদ কোতোয়ালের বাড়ির পাশে নির্মাণ হচ্ছে ৭ তলা ভবন। নির্মাণকৃত ভবনের পাশেই রয়েছে এলাকার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক।
প্রতিনিয়ত সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এই সড়ক দিয়ে চলাচল করে স্কুল পড়ুয়া কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। এছাড়া প্রতিদিন দিনে ও রাতে এই সড়কটি দিয়ে ছোট বড় যানবাহন চলাচলের পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ চলাচল করে। রিক্সা চালক আজাহার বলেন, এখানে একটা জালজুল দিয়া রাখলে ভালো হতো। তাইলে ইট-উট পরতো না। পইরা গেলেতো আমরাও শেষ, যাত্রী ও শেষ হইয়া যাইব। পথচারী মিলন খান বলেন, এতোটাকা খরচ করে বিল্ডিং করতে পারে। আর জনগণের সেফটির জন্য ব্যবস্থা নিতে পারে না। তাদের উচিত এখানে সিফটির ব্যবস্থা করা। শান্তিনগর এলাকার বাসিন্দা আঃ মান্নান বলেন, সড়কের এই পাশে অবশ্যই সেফটি দেয়ার একান্তই প্রয়োজন ছিল। এটা সবাই বলবে। কারণ ভবণের উপর থেকে একটা ইট অথবা বাঁশ খসে পরতে পারে। কি জন্য দেয় নাই তা বলতে পারবো না। স্থানীয় সম্ভু প্রসাদ চৌধুরী বলেন, এটা মেইন রোড, এখান দিয়ে সব সময় মানুষ যাতায়ত করে, পাশেই একটা স্কুলও আছে। অবশ্যই এখানে সেফটি দিয়ে কাজ করা উচিত। এখন থেকে একটা ইটের কণাও যদি মাথায় পরে তাহলে মৃত্যু নিশ্চিত। এতো বড় একটা রিস্কি নিয়ে কাজ করছে। তারা বুদ্ধিমানের মতো কাজ করতেছে না। এজন্য আমি তাদের আইনের আওতায় আনার অনুরোধ করছি। স্থানীয় যুবক জিসান বলেন, এখানে সেফটির বিষয়টা আরো ভালো ভাবে করতে পারতো। যে কোন সময় এখানে দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। এই রাস্তা দিয়ে অনেক মানুষ যাতায়ত করে। একটা স্কুলও রয়েছে। দূর্ঘটনা তো বলে কওয়ে আসে না। রাস্তাটার অবস্থাও খুব খারাপ হয়ে থাকে একটু বৃষ্টি এলেই পানি কাঁদা হয়ে যায়। আমার বাবা অসুস্থ রোগী, তাকে নিয়ে রিক্সায় করে ভেতরে ঢুকতে পারিনা। আমাদের এই খানে অন্যান্য বিল্ডিং গুলো আগে হয়েছে। আমরা যারা আগে বিল্ডিং করেছি তারা সাবাই রাস্তার জন্য জায়গা রাখছি। নতুন করে উঁচুতলা বিল্ডিং করতে রাস্তাটা ডাউন হয়ে গেছে। আমাদের কথা ছিলো,সামনের দুইটা বিল্ডিং এর অল্প-অল্প করে একটু জায়গা রাখলে একটা গাড়ি ঢুকতে পারতো। এখানে কেউ অসুস্থ হলেও একটা এম্বুলেন্স ঢুকতে পারবে না। নির্মাণাধীন ৭ তলা ভবণে গিয়ে জানাযায়, ভবণটি সাজনপুর সমিতি থেকে করছে। এরা সবাই ইটালী প্রবাসী। এখানে দায়িত্বে রয়েছে দৈনিক হুংকার স্থানীয় পত্রিকার সম্পাদক হারুন ভাই। আপনারা তার সাথে কথা বলেন। এব্যাপারে হারুন এর কাছ থেকে জানতে চাইলে তিনি জানান, সিক্স স্টার গ্রুপ ভবন নির্মাণ করছেন।
এরা ১৯ জন ইটালি প্রবাসী। আমি এই ভবনের কোন দায়িত্বে নাই। ছোট ভাই ব্রাদার তাই মানবিক কারণে দেখে রাখি। ঠিকাদার জাকির মিস্ত্রী,তাকে বলেছি তিনি বলেছেন, ঢালাই কাজ শুরু হলে শুক্র-শনিবার ঠিক করে দিবে। এবিষয়ে ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর বেপারি বলেন, এবিষয়ে আমার কাছে একাধিক অভিযোগ এসেছে। হুংকারের সাংবাদিক হারুণ ভাইয়ের সাথে কথা হয়েছে। সে এই বিষয়ে দেখবেন বলে আমাকে আশ্বাস দিয়েছেন। সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র বলেন, আপনারা জানেন,যে কোন নির্মাণ কাজ করতে গেলে জনসাধারণের যে সেফটির বিষয়টি আছে তা নিশ্চিত করেই ঠিকাদার ও মালিক পক্ষকে কাজ করতে হবে। আমরা জানতে পেরেছি, এখানে কোন রকম সেফটি না রেখে ৭ তলা ভবণের কাজ করছে। আমরা উপজেলা প্রাশাসনের পক্ষ থেকে খুব দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com