পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী নির্বাচন ভয় পায় বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। ‘বিবিসি হার্ডটক’ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি সামরিক বাহিনীর তীব্র সমালোচনা করেন। পাশাপাশি তিনি পাকিস্তানের বর্তমান সরকারকে ‘ফ্যাসিবাদী’ বলে আখ্যায়িত করেন। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।
খবরে জানানো হয়, এ বছরের শেষেরদিকে পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে এর আগে ইমরানের অভিযোগ, দেশের ক্ষমতায় থাকা ‘ফ্যাসিবাদীরা’ পাকিস্তানকে অন্ধকার যুগে নিয়ে যাচ্ছে। এর আগে ইমরান খান ২০১৮ সালে নির্বাচিত হয়েছিলেন। কিন্তু তিনিও পাকিস্তানের ইতিহাসের অন্য শাসকদের মতোই তার ক্ষমতার মেয়াদ শেষ করতে পারেননি। গত বছর সংসদে এক অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগে তিনি প্রায় চার বছর দেশের প্রধান ছিলেন।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, তার ক্ষমতাচ্যুতির একটি বড় কারণ ছিল শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর আক্রোশে পড়া। মূলত, কয়েক দশক ধরে দেশটি পরিচালিত হচ্ছে সামরিক বাহিনীর নির্দেশিত পথে। বিবিসির কাছে ইমরান খান দাবি করেন যে, তার দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দেশটির একমাত্র দল যারা সামরিক স্বৈরশাসকদের হাতে তৈরি হয়নি।
এ কারণেই দলটিকে ভেঙে দেয়ার চেষ্টা চলছে।
গত কয়েক মাসে দলটির উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নেতা দলত্যাগ করেছেন এবং গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে ইমরান খান জোর দিয়ে বলেছেন যে, তার দল অক্ষত রয়েছে। বিবিসির স্টিফেন স্যাকুরকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো প্রকাশ্যে আমাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। আমাদের দলকে ভেঙে দেয়ার চেষ্টা করেছে। এরপরও আমরা সরকার থেকে বেরিয়ে এসে ৩৭টি উপনির্বাচনের মধ্যে ৩০টিতে জয়ী হয়েছি। ইমরান খান বলেন, সরকার আশা করেছিল যে তার ক্ষমতাচ্যুতি পিটিআই দলকে দুর্বল করবে। কিন্তু এতে তার দলের জনপ্রিয়তা আরও বেড়েছে। ইমরান খান বলেন, তারা সব চেষ্টা করেছে। তারা ১০ হাজার জনকে জেলে ভরেছে। এরমধ্যে নারী এবং শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীও রয়েছেন। তারা এই মানুষদের নির্যাতন করেছে। খানের সমর্থকরা মনে করেন, তিনি পুরোপুরি দুর্নীতি মুক্ত একজন মানুষ। তার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার জন্য তারা সেনাবাহিনীকেই প্রধান কারণ মনে করে। পাকিস্তান সেনাবাহিনী যদিও এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। ক্ষমতা ছাড়ার পর থেকেই একের পর এক মামলার জালে আটকা পড়ছেন ইমরান খান। তার দল বলছে যে, খানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ, সন্ত্রাসবাদ এবং হত্যাকা-ে সহায়তা করা সহ প্রায় ২০০টি মামলা রয়েছে। পাকিস্তানে তিনি কতটা জনপ্রিয় তার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছিল গত মে মাসে। সেসময় তাকে আদালতের ভিতর থেকে গ্রেপ্তার করা হলে নজিরবিহীন বিক্ষোভে ফেটে পড়েছিল পাকিস্তান।