সাগর-রুনি হত্যা মামলা
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামালার প্রকৃত অপরাধীদের শনাক্তে দেরি হওয়ায় প্রতিবেদন দিতে বিলম্ব হচ্ছে। সন্দেহভাজন ২৫ জনের ডিএনএ ও বিভিন্ন আলামত পরীক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হলে সেই প্রতিবেদন র্যাব পেয়েছে। এর বাইরে দু’জনের ডিএনএ পাওয়া গেছে, যাদের আমরা শনাক্ত করতে পারিনি। গতকাল সোমবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান র্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
র্যাব জানায়, মামলাটি অধিক তদন্ত ও ঘটনার রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আজ সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার তারিখ শততম বারের মতো পেছানো হয়েছে। আগামী ১১ সেপ্টেম্বর নতুন তারিখ ধার্য করেছেন আদালত। সোমবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো: রশিদুল আলম এ দিন ধার্য করেন।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকা-ের রহস্য উদঘাটন ও জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে র্যাব তদন্ত করছে। এ মামলায় র্যাবের হাতে আটক ও সন্দেহজনক আসামিসহ মোট ২৫ জনের ডিএনএ টেস্টের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের আইএফএস (ইন্ডিপেনডেন্ট ফরেনসিক সার্ভিস) পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়। র্যাবে কর্মরত অভিজ্ঞ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার শফিকুল আলম মামলাটি তদন্ত করছেন। যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা প্রতিবেদনের তদন্ত চলছে। ডিএনএ প্রতিবেদনে পাওয়া অজ্ঞাত দু’জন আসামিকে শনাক্ত করতে অধিকতর তদন্ত ও ঘটনা উদঘাটনের চেষ্টা অব্যাহত আছে।’ কোনো নির্দোষ ও নিরপরাধ ব্যক্তি যাতে হয়রানির শিকার না হন সে বিষয় মাথায় নিয়ে র্যাব মামলাটি তদন্ত করছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কোনো নির্দোষ ব্যক্তি যাতে সাজা না পায় এবং প্রকৃত দোষীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী র্যাব সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বাদি পক্ষ আদালতের অনুমোদন সাপেক্ষে প্রয়োজনে অন্যান্য সংস্থার মাধ্যমে তদন্তের ব্যবস্থা করতে পারেন।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকার পশ্চিম রাজাবাজারে মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সারোয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি নিজেদের ভাড়া বাসায় নির্মমভাবে খুন হন। পরদিন ভোরে তাদের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়। এরপর রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহত রুনির ভাই নওশের আলম রোমান।
প্রথমে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন ওই থানার এক এসআই। চার দিন পর চা ল্যকর এ হত্যা মামলার তদন্তভার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়। দুই মাসেরও বেশি সময় তদন্ত করে রহস্য উদঘাটনে ব্যর্থ হয় ডিবি। পরে হাইকোর্টের নির্দেশে একই বছরের ১৮ এপ্রিল হত্যা মামলাটির তদন্তভার র্যাবের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সেই থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও এখনো মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি সংস্থাটি।