শিল্পাঞ্চল নরসিংদীর মাধবদীতে নিত্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতা চলছেই। নতুন করে বেড়েছে সবজির দাম। গরিবের একমাত্র পুষ্ঠিকর খাবার বলতে ডিমের দামও অস্বাভাবিক বাড়তি। সেই সাথে আবারো বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। এরই সাথে মাছের বাজারেও দেখা দিয়েছে অস্থিরতা। মুরগির দামও বেড়ে রয়েছে গত সপ্তাহ থেকেই। সবজি বাজারে দেখা গেছে, গত সপ্তাহের তুলনায় প্রায় সব সবজিই কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ৩০ টাকা বেশিতে। ক্রেতারা বলছেন, সরকারের মনিটরিংয়ের অভাবে সব কিছুর দাম বাড়ছে। মাধবদী বাজারে এখন সবচেয়ে আলোচিত পণ্য ডিম। সপ্তাহজুড়ে দেশে ডিমের বাজারে চলছে অস্থিরতা। প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে ডিমের দাম। প্রতি হালি ফার্মের মুরগির ডিমের দাম পাঁচ থেকে ১০ টাকা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা। এক ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৬৫ টাকা। যা পাড়া-মহল্লার খুচরা দোকানে ১৭০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হতে দেখা গেছে। এক পিস ডিম কিনতে হচ্ছে ১৫ টাকায়। গত সপ্তাহেও এক পিস ডিম বিক্রি হয়েছে ১১ থেকে ১২ টাকায়। ডিমের ডজন ছিলো ১৪৫-১৫০ টাকা। শুক্রবার মাধবদী বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। গতকাল মাধবদী বাজার ঘুরে দেখা গেছে, লম্বা বেগুন ৭০ টাকা কেজি, গোল বেগুন ৮০ টাকা কেজি, শসা ১২০ টাকা, করল্লা ১০০ টাকা, উচ্ছে ৮০, পেঁপে ৪০ টাকা, পটল ৮০ টাকা, কাঁকরোল ৬০ টাকা, গাজর ১২০ টাকা, টমেটো ২৪০ টাকা, এক টুকরো মিষ্টি কুমড়া ৩০-৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৮০ টাকা, ধুন্দল ৮০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা, কচুরমুখী ১০০ টাকা, কাঁচামরিচ ২৪০ টাকা, ধনেপাতা ৩০০ টাকা কেজি। লাউ ৮০ টাকা পিস, চালকুমড়া ৭০-৮০ টাকা পিস। কাঁচাকলা ৩৫-৪০ টাকা হালি। গত সপ্তাহের সঙ্গে তুলনা করলে সব সবজির দাম বেড়েছে ১০ থেকে ৩০ টাকা। তবে শসার দাম বেড়েছে দ্বিগুণ। গত সপ্তাহে প্রতিটি পণ্য ৪০-৬০ টাকে কেজিতে বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে তা বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজিতে। এদিকে দেশি পেঁয়াজ ৯০ টাকা, ক্রস জাতের পেঁয়াজ ৮০-৯০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ৬০ টাকা, আদা১৮০-২০০ টাকা, চায়না রসুন ২২০, দেশি রসুন ২৪০ টাকা, আলু ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহের সঙ্গে তুলনা করলে দেশি পেঁয়াজ ১৫ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ১০ টাকা, ক্রস জাতের পেঁয়াজ ১৫-২০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। মাধবদী বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এক ডজন ডিমের দাম ১৭০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। ডজনের কমে ডিম কিনলে প্রতিটির দাম ১৫ টাকা। অপেক্ষাকৃত কম আয়ের লোকেদের জন্য এ যেন বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এদিকে ইলিশের ভরা মৌসুম হলেও দাম চড়া। ২৫০ থেকে ৩০০ গ্রাম ইলিশের দাম ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। আধা কেজি থেকে এক কেজির ইলিশ ৯০০ থেকে এক হাজার ৭০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশের দাম এক হাজার ৮০০ থেকে দুই হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত । আগের বাড়তি দামেই গরুর গোশতের কেজি বাজারভেদে ৭৫০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। খাসির গোশতের কেজি ১১’শ থেকে ১২’শ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। ব্রয়লার মুরগির কেজি বাজারভেদে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা। সোনালি ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা, লেয়ার ৩৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। দেশি প্রতি কেজি মুরগি বাজারভেদে ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে মাছের বাজারে সব ধরনের মাছ আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে। কম আয়ের শ্রমজীবী মানুষের আমিষের জোগানদাতা সিলভার কার্পের কেজি ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা। দেড় থেকে দুই কেজি বা তার বেশি ওজনের সিলভার কার্পের কেজি ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা। তেলাপিয়ার কেজি ২০০ টাকা, কই মাছ ২০০ থেকে ২৬০ টাকা পর্যন্ত। চাষের পাঙাশ মাছের কেজি ১৫০ টাকা থেকে ১৬০ টাকা পর্যন্ত। রুই ও কাতলার কেজি ৩০০ থেকে সাড়ে ৩০০ টাকা, বাইম ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে ৭০০ টাকা, বড় বোয়াল ৮০০ টাকা, ছোট ৫০০ টাকা, চিংড়ি ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, বেলে ১ হাজার ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এক কেজি ওজনের আইড় ৭৫০ টাকা। চাষের শিং মাছ ৫৫০ টাকা। পাবদার কেজি ৬০০ টাকা। মলা মাছের কেজি ৫০০ টাকা। মাধবদীর চালের বাজারে নতুন করে বাড়েনি চালের দাম। আগে দাম বেড়ে যাওয়া প্রতি কেজি চিকন চাল বাজার ও ধরনভেদে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি মানের চিকন চালের কেজি ৬৫ টাকা, পাইজাম ৫৫ থেকে ৫৮ টাকা, স্বর্ণা ও আটাশ চালের কেজি ৫৫ টাকা। মোটা মসুর ডালের কেজি ১০০ টাকা, চিকন মসুর ডাল ১৪০ টাকা, মুগ ডাল ১৩০ টাকা। ছোলার ডাল ৯০ টাকা কেজি। খোলা চিনি ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা, প্যাকেটজাত চিনি ১৫০ টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৪০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১২০ টাকা, আলুর কেজি ৪০ টাকা, আদা ২৪০ টাকা। ভোজ্য তেলের দাম নতুন করে বাড়েনি। প্রতি লিটার সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়। বোতলজাত পামওয়েলের লিটার ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। স্বস্তি নেই মাছ, মাংস, সবজিসহ নিত্যপণ্যের বাজারে। একেক সময় একেক পণ্যের দাম কিছুটা ওঠানামা করলেও বাজার ছুটছে ঊর্ধ্বমুখী। আগে থেকেই অনেক নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে আছে। এরই মধ্যে সপ্তাহজুড়ে বেড়েছে ডিম, পেঁয়াজ, সবজি ও মাছের দাম। নতুন করে ডিমের বাজারে অস্থিরতা ভোগাচ্ছে মাধবদীর সাধারণ মানুষকে।