বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক এবং পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান ইসলামী ব্যাংক কাঁচপুর শাখা স্থানান্তর দাউদকান্দিতে ১৭ বছরেও পাকা হয়নি ইউনিয়ন পরিষদের রাস্তা: সেবা নিতে আসা মানুষের চরম দুর্ভোগ রংপুরে সড়ক পরিবহন আইন ও ট্রাফিক সংক্রান্ত সচেতনতা মুলক সভা শ্রীমঙ্গলে লোকালয় থেকে রেসাস বানর উদ্ধার আওয়ামীল লীগ ক্যাডার নজরুল সিন্টিকেটের দখলে ৩০ একর বনভূমি দেওয়ানগঞ্জে জেলা প্রশাসকের মতবিনিময় সভা গলাচিপায় নবাগত উপজেলা প্রশাসনের সাথে রাজনৈতিক দলের মতবিনিময় সভা বাউফলে সড়ক নির্মাণে নিম্নমানের ইট ব্যবহার ও অনিয়মের অভিযোগ কেরানীগঞ্জে উপজেলা প্রশাসনের মাসিক সমন্বয় সভা

কুমিল্লার প্রাচীন কারু শিল্পের মসজিদগুলোর মধ্যে অন্যতম জানু মিয়া জামে মসজিদ

বাসস :
  • আপডেট সময় শনিবার, ২৬ আগস্ট, ২০২৩

কুমিল্লার নগরীর মুরাদপুরে সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ১৭৩ বছরের জানু মিয়া মসজিদটি। ১৮৪৯ সালে নির্মিত প্রচীন স্থাপত্যের এক অনন্য নিদর্শন ‘জানু মিয়া জামে মসজিদটি’। এটি প্রাচীন কারু শিল্পের মসজিদগুলোর মধ্যে অন্যতম। প্রাচীন স্থাপত্য শিল্পের ধারক ও বাহক ইসলামী ঐতিহ্য, কালের সাক্ষী হয়ে স্বমহিমায় দাঁড়িয়ে আছে আজও।
তিন গম্বুজ বিশিষ্ট ঐতিহ্যবাহী মসজিদটি জানু মিয়া মসজিদ নামে পরিচিত হলেও এর প্রতিষ্ঠাতা তাঁর দাদা খান বাহাদুর আশরাফ আলী। তিনি এ এলাকার জমিদার ছিলেন। তিনি ১৮৪৯ সালে মসজিদটি নির্মাণ করেন। পরিবর্তীতে পর্যায়ক্রমে মুসল্লির সংখ্যা বাড়তে থাকলে ১৯৯০ সালে এটি সম্প্রাসারণ করা হয়। ৭ হাজার বর্গফুটের মসজিদটি সম্প্রসারণের পর এখন এর আয়তন ১০ হাজার বর্গফুট। মসজিদটি খান বাহাদুর আশরাফ আলী প্রতিষ্ঠা করলেও তার নাতি প্রখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ এবং কবি কাজী নজরুল ইসলামের সহচর জানে আলম চৌধুরী (জানু মিয়া) এর নামে কালের আবর্তনে পরিচিত পেয়ে যায়। তার শিল্পী সত্ত্বার ফলেই এমনটি হয়েছে মনে করেন মসজিদটির বর্তমান মোতয়াল্লী ও তার নানা প্রফেসর আমীর আলী চৌধুরী।
এ প্রসঙ্গে প্রফেসর আলী চৌধুরী বাসসকে বলেন, ১৮৪৯ সালে মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন খান বাহাদুল আশরাফ আলী। এপ্রতিষ্ঠার পিছনে অনেক ইতিহাস আছে। তৎকালীন সময়ে দিল্লী থেকে কারিগর এনে মসজিদটি তৈরি করা হয়েছিলো। মসজিদের ভেতরে যত নকশা রয়েছে সবগুলো দিল্লীর কারিগররাই করেছেন। পরবর্তীতে তাঁর পুত্র আরবে রহমান মোতয়াল্লী হন। তিনি যতদিন জীবত ছিলেন ততোদিন তার নামে মসজিদটিকে বলা হতো। তার মৃত্যুর পর আরবে রহমানের পুত্র জানু মিয়া মোতয়াল্লী হলে পরে জানু মিয়া মসজিদ নামকরণ হয় এবং এটাই শেষ পর্যন্ত স্থায়ী হয়ে যায়। জানু মিয়ার শিল্প সাহিত্যর কারণে এটা স্থায়ী হয়। জানু মিয়ার সান্নিধ্য লাভ করেছেন জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম। গান বাজনা করেছেন। দুই দুইবার কবি নজরুল ইসলাম এসেছেন এ বাড়িতে। পরবর্তীতে এটা একটা পরিচিতি লাভ করেছে এবং এভাবেই চলছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মসজিদটির ভিতরে ফার্সী ভাষায় কষ্টি পাথর দিয়ে প্রতিষ্ঠাতার নাম ও সন লিপিবদ্ধ রয়েছে। মসজিদটির ভিতরের টেরাকোটার অসাধারণ কারুকার্য এখনও পর্যন্ত সজ্জিত রয়েছে। পুরো মসজিদটি চুন আর পাথর দিয়ে নির্মিত। তৎকালীন যুগে প্রতিষ্ঠিত এ অপূর্ব মসজিদটির কারুকার্য এখনও মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে থাকে। মসজিদটি মেহেরাব অন্যান্য মসজিদ থেকে অনেক ভিন্ন। অন্যান্য মসজিদের মেহেরাব মসজিদের বাহিরের দিকে অথচ এই মসজিদের মেহেরাব মসজিদের ভিতরের দিকে আর মসজিদের দেয়াল ৫৬ ইঞ্জি প্রস্থ যার কারণে মসজিদের মেহেরাব ভিতরের দিকে আছে। মসজিদটি ১০ হাজার বর্গফুটের এ মসজিদটির রয়েছে ৩ টি গম্বুজ, ৪টি মিনার ও ৩৬ ধরনের নকশা। মসজিদটিতে একসাথে ২ হাজার ৫শ’ মুসল্লি নামাজ পড়তে পারেন। এখানে নামায পড়ে অন্য রকম প্রশান্তি পান মুসল্লীরা।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, জানে আলম ছিলেন তৎকালীন সময়ের একনিষ্ঠ সংগীত-সাধক। মসজিদের পাশে রয়েছে জানে আলমের বাসভবন। উপমহাদেশের অনেক প্রখ্যাত সংগীত শিল্পীর মধ্যে কবি কাজী নজরুল ইসলাম, শচীন দেববর্মণসহ উপমহাদেশের খ্যাতনামা ব্যাক্তিবর্গরা ও তার সান্নিধ্যে বাসভবনে গানের আসর জমিয়েছেন। যার কারণে উক্ত স্থানে বিভিন্ন মানুষের আনাগনা ছিল। যে জন্য ‘আশরাফিয়া জামে মসজিদ’ জানু মিয়া মসজিদ নামে পরিচিতি লাভ করে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com