সম্প্রচারমন্ত্রী, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড.হাছান মাহমুদ বলেন, ‘নির্বাচন প্রতিহত করার চেষ্টা যদি কেউ করে, তাহলে দেশের মানুষ কঠোর হস্তে সেটি প্রতিহত করবে। এটি ২০১৪ সাল নয়, এটি ২০২৩ সাল। এখন ২০১৩-১৪ সালের পুনরাবৃত্তি করবেন, সেটি এই দেশের মানুষ করতে দেবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘দেশ থেকে যদি অপরাজনীতি, মানুষ হত্যার রাজনীতি, জিঘাংসার রাজনীতি, প্রতিহিংসার রাজনীতি বন্ধ করতে হয়, তাহলে যারা প্রতিহিংসা ও অপরাজনীতি করে, তাদের (বিএনপি) রাজনৈতিক দৃশ্যপট থেকে বিদায় করা দরকার। নইলে এই অপরাজনীতি বন্ধ হবে না।’
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানের ১৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে রবিবার (২৭ আগস্ট) এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে ‘আইভি রহমান পরিষদ’।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশে পরিচালনা করা হয়েছিল। এই হামলার মূল পরিকল্পনাকারী হচ্ছে তারেক রহমান। তার পরিকল্পনায় হাওয়া ভবনে কয়েক দফা বৈঠক হয়। সেগুলো ২১ আগস্টের মামলার এজাহারে আছে। কখন, কোথায় বৈঠক হয়? হাওয়া ভবনে কয়বার বৈঠক হয়। আমি ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার সাক্ষী।’
২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় বঙ্গবন্ধুর খুনিদেরও যুক্ত করা হয়েছিল অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘এই গ্রেনেড হামলা পরিচালনা করা হবে, সেজন্য ফারুক ও রশিদ তখন ঢাকায় এসেছিল। বঙ্গবন্ধুর খুনিদেরও এই হামলায় যুক্ত করা হয়েছিল। যেই শুনেছে, শেখ হাসিনা মৃত্যুবরণ করেনি, তারপর তারা চলে গেছে। এই হামলার পর হাওয়া ভবনের প্রথম প্রশ্ন ছিলÍ শেখ হাসিনা বেঁচে আছে? যখন শুনেছে উনি (শেখ হাসিনা) বেঁচে আছেন, তারা হতাশায় নিমজ্জিত হয়। তাদের উদ্দেশ্য ছিল শেখ হাসিনাকে হত্যা করা।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে মোশতাক এবং জিয়া। আর ২১ আগস্টের হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তারেক জিয়া। তারা আসলে হত্যার রাজনীতিটাই করে। হত্যার রাজনীতির মাধ্যমেই জিয়াউর রহমানের উত্থান এবং ক্ষমতায় টিকে থাকাটাও হত্যার রাজনীতির মাধ্যমে অব্যাহত রেখেছে। তার (জিয়াউর রহমান) বিরুদ্ধে যখনই সেনাবাহিনীতে ক্যু এর প্রচেষ্টা হয়েছে, তখনই নির্বিচারে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা ও সৈনিকদের হত্যা করা হয়েছিল। এভাবে জিয়াউর রহমান ক্ষমতাকে নিষ্কন্টক করার চেষ্টা করেছিল, করতে পারেনি। তার লোকেরাই তাকে হত্যা করেছে।’
জিয়াউর রহমানকে তার লোকেরা হত্যা করেছিল মন্তব্য করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘খালেদা জিয়া সোয়া দুই দফায় ১০ বছর ক্ষমতায় ছিলেন, কিন্তু জিয়াউর রহমানের হত্যাকাণ্ডের বিচার করেনি। কারণ কী? কেঁচো খুঁড়তে সাপ বের হবে, সেজন্য জিয়াউর রহমানের হত্যাকাণ্ডের বিচার করেনি। খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়ার নেতৃত্বে আজকের বিএনপিও সেই হত্যার রাজনীতি থেকে বের হয়ে আসতে পারেনি।’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও আইভি রহমান পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক আ আ স ম আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল।