নারায়নগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে বাংলাদেশ লোক কারুশিল্প ফাউন্ডেশন চত্বরে মাসব্যাপী লোক কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব ২০২৫ উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ফাউন্ডেশনের পঙ্খীরাজ নাট্যমঞ্চে মেলা উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্যে উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন”দেশীয় সংস্কৃতি টিকিয়ে রাখতে এবং নতুন প্রজন্মের মাঝে ইতিহাস ঐতিহ্যের সেতু বন্ধন তৈরী করতে এমন আয়োজন খুব ভালো ভূমিকা পালন করে। বর্তমান সরকারের নির্দেশনায় সংস্কৃতি টিকিয়ে রাখতে আমাদের মন্ত্রণালয় কাজ করছে। অতীতে এ দেশে ফ্যাশিস্ট আওয়ামীলীগ সরকার যে জুলুম অত্যাচার করেছে তাদের হটিয়ে ছাত্র জনতার আন্দোলনে আমরা নতুন স্বাধীনতা পেয়েছি,সেই স্বাধীনতার ফল সর্ব মহলে পৌঁছে দিতে হবে। সম্মানিয় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মফিদুর রহমান। ফাউন্ডেশন পরিচালক কাজী মাহাবুবুল আলমের সভাপতিত্বে ও মোজাম্মেল হক মাসুদের পরিচালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোঃ জাহিদুল ইসলাম মিয়া, পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার, পুলিশ সুপার মোঃ নাইমুল হক (ট্যুরিষ্ট পুলিশ) ঢাকা রিজিয়ন, সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সোনারগাঁও পৌরসভা প্রশাসক ফারজানা রহমান, ফাউন্ডেশনের উপ পরিচালক এ কে এম আজাদ সরকার, সংরক্ষণ কর্মকর্তা নাসিম ইসলাম অভি, সোনারগাঁও থানার ওসি মোঃ আব্দুল বারী, বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী এর নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিকস মিডিয়ার সাংবাদিক বৃন্দ, ফাউন্ডেশনের অন্যান্য কর্মকর্তাগণ ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ প্রমুখ। বাংলাদেশ লোক কারুশিল্প ফাউন্ডেশন কতৃক পাঁচজন খুদ্র-নৃ-গোষ্ঠীর কারুশিল্পীকে ১ থেকে ৩ লক্ষ টাকার ব্যাংক চেক সহ এক ভরি ওজনের স্বর্ণের মেডেল প্রদান করা হয়। মাসব্যাপী লোক কারুশিল্প মেলা ১৮ জানুয়ারি থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে। ঐতিহাসিক সোনারগাঁয়ের প্রাণকেন্দ্রে আয়োজিত মেলায় দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রথিতযশা কারুশিল্পীগণ জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে তাঁদের নিজ নিজ পেশার সম্ভারে পসরা সাজান। কারুশিল্পীদের সৃষ্টিশীল কর্মের উপস্থাপন, ঐতিহ্যবাহী বাউল ও লোকসংগীত, লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ খেলাধুলার প্রচার প্রসারের পাশাপাশি বাঙালি সংস্কৃতি লালন ও দেশীয় সংস্কৃতির পুনরুজ্জীবনে এই মেলার আয়োজন। মেলায় সাধারণ স্টল ও কর্মরত কারুশিল্পী প্রদর্শনীর ৩২টি স্টলসহ সর্বমোট স্টলের সংখ্যা ১০০টি, এতে গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রথিতযশা ৬৪ জন কারুশিল্পী সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছেন। সোনারগাঁওয়ের জামদানি, মৌলভীবাজার ও মুন্সিগঞ্জের শীতল পাটি, মাগুরা ও ঝিনাইদহের শোলাশিল্প, রাজশাহীর শখের হাঁড়ি ও মৃৎশিল্প, কক্সবাজারের ঝিনুকশিল্প, রংপুরের শতরঞ্জি, ঠাকুরগাঁয়ের বাঁশের কারুশিল্প, কাঠের চিত্রিত হাতি-ঘোড়া-পুতুল, কুমিল্লার খাদিশিল্প, তামা-কাঁসা-পিতলের কারুশিল্প, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান জেলার ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠীর কারুশিল্প, কিশোরগঞ্জের টেরাকোটা পুতুল, বগুড়ার লোকজ খেলনা ও বাদ্যযন্ত্র কারুশিল্পীগণ মেলায় অংশ নিয়েছেন।