বিশ্বকাপের ঠিক আগ মুর্হূতে মাঠের বাইরের ঘটনা, বিশেষ করে তামিম ইকবালের বিষয়টি নিয়ে বলতে গেলে চাপেই ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। এর ফলে কারণেই অনেকেরই সন্দেহ ছিল বাংলাদেশ নিজেদের লক্ষ্য অর্জনে মনোনিবেশ করতে পারে কি-না! পরে তামিম বিষয়ে সাকিবের মন্তব্যে তাদের সম্পর্ক নিয়ে সমালোচনার সৃষ্টি করে। এসব বিষয়গুলো এবং সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের অধারাবাহিকতা দলের সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্নের সৃষ্টি করে। এমনকি অনেকেই আফগানিস্তানের কাছে বাংলাদেশ হারবে বলে ভবিষ্যদ্বানীও করেছিল। কিন্তু আফগানিস্তানের বিপক্ষে সহজ জয়ের পর ধারণা করা হচ্ছে বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে খেলার স্বপ্ন পূরণের পথেই আছে বাংলাদেশ।
খেলোয়াড়দের শারীরিক ভাষা এবং দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই স্পষ্ট, বিভ্রান্তিকর সমস্যাগুলো পেছনে ফেলে নিজেদের লক্ষ্য অর্জনের ব্যাপারে অনেক বেশি মরিয়া বাংলাদেশ। এর পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচের আগে খেলোয়াড়দের সাথে কথা বলেছেন এবং তাদের অনুপ্রাণিত করেছেন তিনি। ম্যাচে সাকিব নিজেও আত্মবিশ্বাসী ছিলেন। কারণ তার আবেগ ছিল চোখে পড়ার মতো এবং উদযাপনেও উচ্ছ্বসিত ছিলেন তিনি, যা সত্যিই ছিল বিরল। আফগানিস্তানের বিপক্ষে মাঠে সাকিবের আচরণ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে পেসার শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘এটি বিশ্বকাপ ম্যাচ এবং সে উইকেট পেয়েছে।’
কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ ক্রিকেটের আলোচিত পরিস্থিতি সম্পর্কে যারা অবগত ছিল তারা ভালো করেই জানে, কেন সাকিবকে খুব বেশি অভিযুক্ত করা হয়েছিল। ম্যাচে সাকিবের তিন উইকেট বিশ্বকাপে শিকার সংখ্যা ৩৬-এ নিয়ে যায়। ব্রেট লি, ড্যানিয়েল ভেট্টরিকে ছাড়িয়ে গেলেও বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী হতে বাংলাদেশের বর্তমান পেস বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ড টপকাতে মাত্র ২ উইকেট পেছনে আছেন সাকিব।
আসলে দলকে ঐক্যবদ্ধ এবং মনোযোগী করতে চান সাকিব। এর জন্য সামনে থেকে দলকে নেতৃত্ব দিতে হবে তাকে। কৌশলের দিক দিয়ে সাকিবের নিখুঁত অধিনায়কত্বের প্রশংসা করেছেন বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা অধিনায়ক হিসেবে বিবেচিত মাশরাফী বিন মর্তুজা। যখন দক্ষতা ও প্রেরণামূলক অধিনায়কত্বের সমন্বয় ঘটে তখন অন্য দলকে হারাতে শক্তিশালী হয়ে উঠে বাংলাদেশ। অধিনায়ক নিজে ও দল কিছুটা উদ্বিগ্ন থাকা অবস্থাতেও পরিসংখ্যান মতে নিজের সেরাটাই দিয়েছেন সাকিব। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান তানভীর আহমেদ টিটু বলেন, ‘এই মুর্হূতে আমাদের অনেক খেলোয়াড় আছে যাদের অধিনায়কত্ব করার দক্ষতা আছে। কিন্ত সেরা বিকল্প সাকিবই। সে অভিজ্ঞ এবং সে জানেন কিভাবে চাপ সামলাতে হয় এবং কিভাবে তার খেলোয়াড়দের ওপর খেকে চাপ দূর করতে হয়।’ তিনি আরো বলেন, ‘সত্যি বলতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের আগে আমরা চিন্তায় ছিলাম। ভক্তরা, এমনকি আপনারাও চিন্তায় ছিলেন। কিন্তু খেলোয়াড়দের মধ্যে চাপের কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি। মানসিকভাবে শক্তিশালী এবং অনেক বেশি মনোযোগী ছিলেন তারা।’ সূত্র : বাসস