টাঙ্গাইলের ঐতিহ্যবাহী উপজেলা ধনবাড়ী। জমিদার, নবাব এইসব পুরোনো ঐতিহ্যের সাথে ধনবাড়ীর নাম জড়িয়ে আছে। এক সময়ের প্রাচ্যের অক্সফোর্ট খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠায় ধনবাড়ী ও ধনবাড়ীর নবাব জমিদারদের যোগসূত্র খুব নিবিড়। এই ধনবাড়ীর নানা ঐতিহ্যের সাথে এবার যুক্ত হতে যাচ্ছে কন্যা পাইস্কা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের শিশুদের ফুটবল। ধনবাড়ীর পাইস্কা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অনন্যা সূত্রধর, শিফা, ঝর্ণা, রোকসানা, হ্যাপি, তানিয়া, শিলাসহ, সাদিয়া, কবিতা, খুশি, তামান্না এক ঝাঁক কন্যা শিশু ফুটবল তারকা ধনবাড়ী তথা সারা টাঙ্গাইলের ক্রিড়ামোদীদের স্বপ্নবাজ করে তুলছে। মাঠের সংশ্লিষ্টদের মুখে মুখে এখন ফিরে এইসব শিশু ফুটবল তারাকাদের নাম। এদের পাশে প্রাথমিকের শিশুরাও নাম লেখাচ্ছে। ধনবাড়ীর দড়িচন্দ্রবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী মীম তাদের অন্যতম। গত বছর বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্টের জাতীয় পর্যায়ে প্রথম রানার আপ হওয়া টাঙ্গাইলের কন্যা শিশু দলের গর্বিত সদস্য এই মীম। একই বছর অনুর্ধ্ব ১৭ বালিকা গ্রুপে ধনবাড়ী উপজেলা দল জেলা পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ান হয়েছে। মীম এখন চ্যাম্পিয়ান দলের সদস্য। ওইদলে সিনিয়র আপুদের সাথে খেলছে। চলতি বছরের বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ফুটবল টুর্নামেন্টে জেলায় খেলেছে ধনবাড়ীর কন্যা শিশু ফুটবলার ওই তারকারা। তারা টাঙ্গাইল পৌরসভার টিমকে কোয়ার্টার ফাইনালে ৮-০ গোলে হারিয়ে এবং সেমিফাইনালে ট্রাইবেকারে ৪-২ গোলে গোপালপুরকে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছে। ফাইনালে মির্জাপুর উপজেলার টিমের মুখোমুখি হয়ে ৬-০ গোলের জয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে। বালিকা (অনূর্ধ্ব-১৭) বিভাগের প্রথম খেলায় ধনবাড়ী উপজেলা (৬-০) গোলে মির্জাপুর উপজেলাকে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয়। ধনবাড়ী উপজেলার পক্ষে স্ট্রাইকার অন্যন্যা রানী সূত্রধর হ্যাট্রিক করে। এছাড়া রোকসানা, মীম ও ঝর্না আক্তার ওন্যরা ৩টি গোল করে। বালিকা বিভাগে ধনবাড়ী উপজেলার অন্যন্যা রানী সূত্রধর টুর্নামেন্টে মোট ৫টি গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা ও সেরা খেলোয়াড় এবং গোলরক্ষক তানিয়া সেরা গোলরক্ষ নির্বাচিত হয়। তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, গত বছর ঢাকা বিভাগীয় কন্যা শিশুদের ফুটবল টুর্নামেন্টে টাঙ্গাইলকে চ্যাম্পিয়ান তারাই করেছে। একই বছর আন্তঃ স্কুল ফুটবল প্রতিযোগিতায় আঞ্চলিক পর্যায়ে ময়মনসিংহে অনুষ্ঠিত ধোবাউড়ার বিখ্যাত কলসিন্দুর বালিকা টিমের মুখোমুখি হয়ে খেলেছে তারা। ফাইনালি ১-০ গোলে হারলেও ক্রীড়া নৈপুন্য দেখিয়েছে। জে এফ এ ফুটবল টুর্নামেন্ট অনূর্ধ্ব ১৪ টাঙ্গাইল জেলার হয়ে আঞ্চলিক পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয়ে রাজশাহীতে অনন্যারা খেলেছে অনন্য। শেরপুর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত একই টুর্নামেন্টর অনুর্ধ্ব -১২ ফুটবল টুর্নামেন্টের ধনবাড়ীর এই শিশু তারকা দল সেমিফাইনালে গিয়েছিল। কক্সবাজারের বিচ্ ফুটবল টুর্নামেন্টে টাঙ্গাইলের একমাত্র সদস্য ছিল ধনবাড়ীর অনন্যা সূত্রধর। ফুটবলে তারা টাঙ্গাইলের প্রতিনিধিত্ব করছে। গর্বিত করছে ধনবাড়ীকে। এই কন্যা শিশু তারকারা ধনবাড়ী টাঙ্গাইলের অহংকার মন্তব্য করে টাঙ্গাইল জেলা ক্রীড়া অফিসার আল আমিন জানান, নারী শিক্ষার অন্তরায় বাল্য বিয়েসহ নানা বাধা দূর করতে তাদের ফুটবল খেলা গুরুত্বপূর্ণ ভূ’মিকা রাখছে। তিনি কন্যা শিশুদের এ ফুটবল খেলাকে এগিয়ে নিতে সকলের প্রতি সহযোগিতার আহবান জানান। তাদের কৃতিত্বকে স্বীকৃতির ব্যবস্থা করতেও সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন। ক্রীড়া অফিসার আরও জানান, এ খেলার মাধ্যমে কন্যা শিশুদের ভবিষ্যৎ জীবন গঠনে নানা সুযোগ সৃষ্টি করেছে সরকার। সাধারণ শিক্ষার সাথে ক্রীড়া শিক্ষা বৃত্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে। নারী শিক্ষা ও ক্রীড়ায় তারা দেশ তথা ধনবাড়ীকে মেলে ধরতে চায়। জানা গেছে, নিজেরা করি নামের উন্নয়ন সংগঠনের উদ্যোগে এই ধনবাড়ীতে কন্যা শিশুদের ফুটবল চর্চা শুরু হয়েছে ২০১৯ সালের জুলাই থেকে।কন্যাদের ফুটবল কোচ জহিরুল ইসলাম মিলন বলেন, সারা দেশের কন্যা শিশুদের সাথে ফুটবল খেলায় ধনবাড়ীর কন্যা শিশুরা সর্বদা প্রস্তুত। ভবিষ্যতে তারা জাতীয় টিমে খেলবে বলেও প্রত্যাশা করেন। ধনবাড়ী- মধুপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় কৃষিমন্ত্রী বলেন, ধনবাড়ী উপজেলার বালিকা ফুটবলাররা অত্যন্ত পরিশ্রমি তারা ইতিমধ্যেই তাদের সক্ষমতাকে জানান দিয়েছে। তারা ধনবাড়ী উপজেলাকে সারা বাংলাদেশ তথা বিশ্বের মাঝে তুলে ধরেছে ফুটবল খেলার নৈপুণ্যের মাধ্যমে। আমাদের ধনবাড়ী বাসির উচিত তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়ানো যাতে করে সহযোগিতা পেয়ে আরো ধনবাড়ী উপজেলার হয়ে সম্মান বয়ে আনতে পারে ধনবাড়ীতে অনেক প্রভাবশালী টাকা-পয়সার ওয়ালা মানুষ আছে এবং ধনবাড়ী উপজেলার অনেকে দেশে এবং দেশের বাইরে ভালো অবস্থানে আছেন তাদের কে বলবো আপনা দেরকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই এদের পাশে এসে দাঁড়ান তারা আপনাদের অনেক সম্মান উপহার দিবে।