শীতের আগমনে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ভৈরব পৌর শহরের পাড়ায় পাড়ায় বসছে পিঠার দোকান। পৌর শহরের পঞ্চবটি, ঘোড়াকান্দা, আমলাপাড়া, গাছতলাঘাট, মনামরা ব্রীজ, চন্ডিবের, কালিপুরসহ বিভিন্ন গ্রামের পাড়ায় পাড়ায় শতাধিক মৌসুমী পিঠার দোকান গড়ে উঠেছে। জন সমাগমস্থলে, সড়কের পাশে পুরাতন ব্াঁশ, টিন, মোটা প্লাস্টিকের কাগজ ও খড়ের বেড়া দিয়ে তৈরী ঘরে চলছে পিঠার ব্যবসা। মাটি দিয়ে তৈরী ৪/৫টি চুলা ও ডাল পালা ইত্যাদি লাকড়ি দিয়ে জ¦ালানির কাজ চলছে। এছাড়াও অনেকে এলপি গ্যাস ব্যবহার করছে দোকানে। ভোর হতেই দোকানে মিলছে ভাপা পিঠা, পুরি, চোয়া পিঠা, তেলের পিঠা ও হালুয়া। বিকাল ৪টা থেকে রাত ১০টা অবধী দোকানে চলে বেচা-কেনা। পিঠার দোকানে শিশু, যুবক, বৃদ্ধসহ মহিলারা লাইনে দাড়িঁয়ে পিঠা খাচ্ছে। নানান রকমের পিঠার মধ্যে গুড়, নারিকেল ও লাড্ডু দিয়ে ভাপা পিঠা, তেলের পিঠা, সরিষা ভাটা, শুটকি, মরিচ ও ধনেপাতা সহ বিভিন্ন ভর্তা দিয়ে চিতই পিঠার চাহিদা বেশ। অনেক দোকানে গুড় নারিকেল দিয়ে পুলি পিঠা বিক্রি হচ্ছে। বেশীর ভাগ দোকানী অন্য পেশার পাশাপাশি পরিবারের লোকজন নিয়ে এবং স্বামী স্ত্রী মিলে দোকানে পিঠা বিক্রির আয় দিয়ে সংসারের ব্যায় নির্বাহ করছে। বাজারে প্রচলিত প্যাকেটজাত আতপ চাউলের গুড়া দিয়ে তৈরী হচ্ছে পিঠা। অনেকে চাউল কিনে মেশিনে গুড়া করে পিঠা তৈরী করছে । কমলপুর গ্রামের লাল ভিলার সামনের দোকানী মোঃ সুমন মিয়া জানান- কাঠ মিস্ত্রির কাজ শেষে পিঠা বিক্রি করে। সে তার ৩ মেয়ে ১ ছেলে ও স্ত্রী সহ ৬ জন সদস্য। পিঠার দোকানের বাড়তি আয়ে সে ভালোভাবে সংসার চালাচ্ছে। আমলাপাড়া গ্রামের পুরাতন টি এন্ড টি অফিসের সামনের দোকানী হোসেন তার স্ত্রী ফেরদৌসী বেগমকে নিয়ে পিঠার দোকান চালাচ্ছে। তার ২ ছেলে ১ মেয়ে সহ সংসারের ৫জন। হোসেন বাবুর্চি কাজের পাশাপাশি পিঠার দোকান করছেন। গাছতলাঘাট এলাকার দোকানী আল আমিন ভাংগারী ব্যবসার পাশাপাশি স্ত্রী জয়াকে নিয়ে পিঠার দোকান দিয়েছেন। তাদের সংসারে ৩ ছেলে। পিঠার ক্রেতা তপু বলেন, পিঠার মান ভালো এবং দামেও সাশ্রয় তাই বেশীর ভাগ সময়ই দোকান থেকে পিঠা কিনে নাস্তার কাজ চলে। পিঠা দোকানীরা নিজ জায়গায়, সামান্য ভাড়া বা সড়কের পাশে বিনা ভাড়ায় ব্যবসা করে থাকে। অগ্রহায়ণ থেকে ফাল্গুন মাস পযর্ন্ত বছরের প্রায় ৪ মাস লোকজনের মধ্যে পিঠার চাহিদা থাকায় অস্থায়ী দোকান বসে। প্রতিটি পিঠার দোকানে প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ কেজি চাউলের গুড়া কাটতি হয়। ভৈরবের এসব দোকানে প্রতিদিন প্রায় ১ থেকে দেড় টন চাউলের গুড়া দিয়ে পিঠা তৈরী হয়। ভৈরব রানীর বাজারের মেসার্স আবদুল্লাহ এন্ড ব্রাদার্স এর স্বত্বাধিকারী মোঃ কবির জানান, উনাদের উৎপাদিত মোরগ মার্কা ১কেজি ওজনের প্যাকেট আতব চাউলের গুড়া প্রতিদিন প্রায় দেড় টন বিক্রি হয়ে থাকে। ভৈরবে এছাড়াও হরিণ মার্কা, বাঘ মার্কা সহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের আতব চাউলের গুড়া বিক্রি হয়ে থাকে। শীত মৌসুমে তাদের পন্য বিক্রি বেড়ে যায়।