ইলন মাস্ক নন, বিশ্বের শীর্ষ ধনী ব্যক্তি এখন জেফ বেজোস। সোমবার ব্লুমবার্গ বিলিয়নিয়ারস ইনডেক্সের তথ্য অনুযায়ী, অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোসের কাছে বিশ্বের শীর্ষ ধনীর তকমা হারিয়েছেন টেসলার প্রধান এবং সামাজিক মাধ্যম এক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইলন মাস্ক। জেফ বেজোসের মোট সম্পদ এখন ২০০ বিলিয়ন ডলার। অপরদিকে ইলন মাস্কের মোট সম্পদের পরিমাণ ১৯৮ বিলিয়ন ডলার। ব্লুমবার্গের তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে ইলন মাস্ক প্রায় ৩১ বিলিয়ন ডলার সম্পদ হারিয়েছেন। অপরদিকে জেফ বেজোস আরও ২৩ বিলিয়ন ডলার সম্পদের মালিক হয়েছেন। গত সোমবার টেসলার শেয়ারের ৭ শতাংশের বেশি দরপতন হয়েছে। ২০২৩ সালের মে মাসে বিশ্বের শীর্ষ ধনীর তালিকায় প্রথম অবস্থান অর্জন করেন ইলন মাস্ক। সে সময় তিনি ফরাসি ব্যবসায়ী ও এলভিএমএইচের সিইও বার্নার্ড আর্নল্টকে পেছনে ফেলেন। এর কয়েক মাস পর্যন্ত ইলন মাস্ক, আর্নল্ট এবং জেফ বেজোসের মধ্যে বেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতা চোখে পড়েছে।
এলভিএমএইচের সিইও আর্নল্ট গত চার দশক ধরে বিলাসবহুল ব্রান্ডের সাম্রাজ্য তৈরি করেছেন। তার সংস্থার অধীনে রয়েছে লুই ভুতোঁ, ডিওর, সেফোরা ট্যাগ, ডোম পেরিনন, ফেন্ডি, টিফিন অ্যান্ড কোং, মার্ক জেকব, ফেন্ডি ও সেলিনের মতো ব্রান্ড। গত এপ্রিলেই এলভিএমএইচ প্রথম ইউরোপিয়ান কোম্পানি হয়ে উঠেছিল, যার মার্কেট ভ্যালু বা ৫০০ বিলিয়ন বা ৫০ হাজার কোটি ডলার পার করেছে। এদিকে চলতি বছরের জানয়ারিতে এক প্রতিবেদনে বলা হয়,গত চার বছরে বিশ্বের ধনী ব্যক্তিদের মোট সম্পদ দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে। অথচ একই সময়ে বিশ্বের প্রায় ৫০০ কোটি মানুষ আরও বেশি গরিব হয়েছে। আন্তর্জাতিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান অক্সফামের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে। একই সময়ের মধ্যে, দরিদ্রতম চার ৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন বা ৪৭৭ কোটি মানুষের (বিশ্ব জনসংখ্যার ৬০ শতাংশ) মোট সম্পদ ০ দশমিক ২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। মূল্যস্ফীতি, যুদ্ধ ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সংকটের কারণে তাদের দারিদ্র্য আরও বেড়েছে। অক্সফাম বলছে, এই দারিদ্র্য দূর করতে ২৩০ বছরের মতো সময় লেগে যাবে।
অক্সফাম জানিয়েছে, সামগ্রিকভাবে বিশ্বের সব বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ ২০২০ সাল থেকে ২০২৩ সালের শেষ পর্যন্ত ৩ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন ডলার বা ৩৪ শতাংশ বেড়েছে। এবং তাদের সম্পদ বৃদ্ধির হার বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতি হারের চেয়েও তিন গুণ বেশি। ইনইকুয়ালিটি ইনকরপোরেশনের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বিশ্বের ১০টি বড় করপোরেশনের মধ্যে ৭টিরই বিলিয়নেয়ার সিইও কিংবা শেয়ারহোল্ডার রয়েছে। যদিও বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ শ্রমিকের জীবনযাত্রার মান স্থবির রয়েছে। বিশ্বের ৫২টি দেশে প্রায় ৮০ কোটি শ্রমিকের গড় প্রকৃত মজুরি কমেছে। এই শ্রমিকরা গত দুই বছরে সম্মিলিতভাবে ১ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন ১ লাখ ৫০ হাজার কোটি ডলার হারিয়েছে।