গাজায় দীর্ঘ হচ্ছে লাশের সারি। প্রায় প্রতিদিনই সেখানে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় প্রাণ হারাচ্ছে নিরীহ ফিলিস্তিনিরা। এখন পর্যন্ত সেখানে ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৩৩ হাজার ৮৪৩ জন প্রাণ হারিয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছে আরও ৭৬ হাজার ৫৭৫ জন। গাজায় সংঘাত থামার কোনো লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না। খবর আল জাজিরার। ফিলিস্তিনি ভূখ-ে ইসরায়েলি বাহিনীর বোমাবর্ষণে মধ্য গাজার মাগাজি শরণার্থী শিবিরে শিশুসহ ১১ জন নিহত হয়েছে। এছাড়া রাফাহ শহরের ইয়াবনা শরণার্থী শিবিরের একটি বাড়িতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় চার শিশুসহ সাতজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
ইসরায়েলের মাটিতে সরাসরি হামলা করেছে ইরান। সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে হামলার প্রতিশোধ নিতে গত শনিবার (১৩ এপ্রিল) রাতে ইসরায়েলের দিকে ঝাঁকে ঝাঁকে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইরান। একরাতেই ইসরায়েলে তিন শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়।
ইসরায়েলে নজিরবিহীন এই হামলা ঠেকাতে মোতায়েন ছিল যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সেনাবাহিনী। তিন শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন দিয়ে হামলা চালায় তেহরান। যদিও এগুলোর অধিকাংশই আকাশে ধ্বংসের দাবি করেছে ইসরায়েল। ইরানের ছোড়া ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্রের ৯৯ শতাংশই ভূপাতিত করার দাবি করা হয়েছে। তবে এই হামলায় মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত আরও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ইরান এরই মধ্যে হুঁশিয়ারি দিয়েছে যে, ইসরায়েল বা তার সবচেয়ে বড় মিত্র যুক্তরাষ্ট্র যদি কোনো ধরনের প্রতিশোধ নেওয়ার চেষ্টা করে, তাহলে আরও বড় আক্রমণ চালাবে তারা। অন্যথায়, সংঘাত এখানেই সমাপ্ত।
অপরদিকে ইসরায়েলি ভূখ-ে প্রথমবারের মতো ইরানের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনায় ‘সীমিত’ প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে ইসরায়েল। সেক্ষেত্রে, ইরানের বাইরে ইরান-সমর্থিত শক্তিগুলোর ওপর হামলা চালাতে পারে ইসরায়েলি বাহিনী। মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন, ইসরায়েল গত সপ্তাহে যখন সম্ভাব্য ইরানি হামলার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল, তখন ইসরায়েলি কর্মকর্তারা সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রকে অবহিত করেছিলেন।
তবে মার্কিন কর্মকর্তারা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, প্রতিক্রিয়া কীভাবে জানানো হবে সে বিষয়ে ইসরায়েলের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সম্পর্কে তাদের এখনো অবহিত করা হয়নি এবং সপ্তাহান্তে ইরানি হামলার পর তাদের পরিকল্পনাগুলো পরিবর্তিতও হতে পারে। তারা আরও বলেছেন, ইসরায়েলের পাল্টা হামলা কখন শুরু হবে, তা স্পষ্ট নয়। তবে এটি যে কোনো সময় ঘটতে পারে। ফলে গাজায় ইসরায়েলের চলমান অভিযান এবং ইসরায়েলে ইরানের হামলা সবকিছু মিলিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে তা এখনি বলা যাচ্ছে না।