শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১০:০১ অপরাহ্ন

দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন: প্রধানমন্ত্রী

বাসস :
  • আপডেট সময় শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অন্যান্য খেলার পাশাপাশি দেশীয় খেলাকেও সুযোগ প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেছেন, এর মাধ্যমে কোমলমতিদের মেধা বিকাশের সুযোগ হবে। তিনি বলেন, “শুধু ফুটবল বলে নয়, আমাদের দেশিয় অনেক খেলা আছে এবং অন্যান্য খেলাও রয়েছে। তাতে আমাদের ক্ষুদে খেলোয়াড়রা যেন সুযোগ পেতে পারে। কারণ খেলাধুলার মধ্য দিয়েই আমাদের ছেলেমেয়েদের আরো মেধা বিকাশের সুযোগ হবে।” তিনি গতকাল শনিবার রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে ‘বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট’ ও ‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট’ এর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি যখনই সরকার এসেছেন, তখনই চেষ্টা করেছেন ছেলে মেয়েদেরকে খেলাধুলার প্রতি আরো বেশি অনুরাগী করে তুলতে। কেননা খেলাধুলা মানুষের শারীরিক ও মানসিক শক্তির বিকাশ ঘটায়। ডিসিপ্লিন শিখায়, আনুগত্য শিক্ষা দেয় এবং সেই সাথে সাথে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করে। এই খেলাধুলার মধ্যে দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি। সারা বিশ্বের কাছে পরিচিত করতে পারি। সরকার প্রধান বলেন, সব ধরনের খেলাধুলার বিকাশে তাঁর সরকার প্রতিটি উপজেলায় একটি করে মিনি স্টেডিয়াম করে দিচ্ছে, যাতে করে প্রত্যেকটি উপজেলাতেই খেলাধুলার সুযোগ সৃষ্টি হয়। শেখ হাসিনা বলেন,“আমি চাই, আমাদের ছেলে মেয়েরা লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলা শরীর চর্চা ওর সাংস্কৃতিক চর্চার মধ্য দিয়ে নিজেদেরকে উপযুক্ত হিসেবে গড়ে তুলবে। সবাই শিক্ষা দীক্ষা খেলাধুলা সবদিক থেকে আরও বেশি উন্নত হবে, সারা বিশ্বে আমরা মাথা উঁচু করে চলবো। জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলবে আমাদের আজকের এই সোনার ছেলে মেয়েরা। সকলের প্রতি আমার অভিনন্দন ও আশীর্বাদ রইল। প্রধানমন্ত্রী দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে এসে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট ২০২৩ এর চূড়ান্ত খেলা উপভোগ করেন। বঙ্গমাতা গোল্ডকাপের ফাইনালে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম টেপুরগাড়ি বি কে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৩-১ গোলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হবার গৌরব অর্জন করে। এরআগে, বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের ফাইনালে জামালপুরের মাদারগঞ্জ চরগোলাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ২-১ গোলে রংপুরের মিঠাপুকুর তালিমগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয়। প্রধানমন্ত্রী দু’টি টুর্নামেন্টের চূড়ান্ত খেলায় বিজয়ী এবং বিজিত উভয় দলের খেলোয়াড়দের মাঝে ট্রফি, প্রাইজমানির চেকের রেপ্লিকা এবং খেলোয়াড়দের ব্যক্তিগত পুরস্কার প্রদান করেন। টেপুরগাড়ি বি কে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাহমুদা আক্তার সর্বোচ্চ গোলদাতা হিসেবে গোল্ডেন বুট এবং একই বিদ্যালয়ের রিশা আক্তার সেরা খেলোয়াড়ের গোল্ডেন বল লাভ করেন। বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের চ্যাম্পিয়ন জামালপুরের মাদারগঞ্জ চরগোলাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মো. সাজ্জাদ হোসেন গোল্ডেন বুট এবং মো. আকাশ গোল্ডেন বল লাভ করেন।
পুরস্কার বিতরণী পর্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ বক্তৃতা করেন।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ২০১০ সাল থেকে স্বাধীনতার মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে ‘বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট’ এবং ২০১১ সাল থেকে বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণীর নামে ‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট’ আয়োজন করে আসছে। চারমাস ব্যাপী অনুষ্ঠিত এবারের এ দু’টি টুর্নামেন্টে পুরুষ ও প্রমিলা বিভাগে ৬৫ হাজার ৩৫৪ টি স্কুলের ১১ লাখ ১১ হাজার ১৮ জন ছাত্র ও ৬৫ হাজার ৩৫৪টি স্কুলের ১১ লাখ ১১ হাজার ১৮ জন ছাত্রী ইউনিয়ন থেকে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত অংশগ্রহণ করেছে। প্রধানমন্ত্রী প্রচন্ড তাপপ্রবাহের মধ্যে অনুষ্ঠিত এ খেলায় নৈপুণ্য প্রদর্শনের জন্য বক্তৃতার শুরুতেই খুদে খেলোয়াড়দের অভিনন্দন জানান। দু’টি টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন ও রানার্স আপ দলকে অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি, এই প্রচন্ড দাবদাহের মধ্যে খেলার কারণে কোমলমতিদের শারীরিক কোন সমস্যা হয় কিনা, সে বিষয়ে তিনি চিন্তিত ছিলেন বলেও জানান। প্রধানমন্ত্রী বক্তৃতার শুরুতেই শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, যিনি নিজেও একজন ফুটবল খেলোয়াড় ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর দাদাও ফুটবল খেলতেন। ভাইয়েরাও খেলাধুলা করেছেন এবং খেলাধুলায় পারদর্শিতা দেখিয়েছেন। তাঁর ছোট ভাই মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন শেখ কামালের অনুপ্রেরণায় বাংলাদেশে আধুনিক ফুটবলের পথপ্রদর্শক আবাহনী ক্রিড়া চক্র গড়ে উঠেছিল। তার মেজ ভাই লেফটেন্যান্ট শেখ জামালও যেমন খেলোয়ার ছিলেন, তেমনি দুই দুই ভ্রাতৃবধূও খেলাধুলায় সম্পৃক্ত ছিলেন। তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় এই ফুটবল খেলা প্রেরণা যুগিয়েছে মুক্তিযোদ্ধাদের।
দেশের ক্রীড়াঙ্গন অনেক দূর এগিয়েছে বলে আনন্দানুভূতি ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছেলেরাই শুধু নয়, আমাদের মেয়েরাও এখন বিদেশে গিয়ে তাদের পারদর্শিতা দেখাতে পারছে। ‘সাফ প্রমিলা ফুটবল ফুটবল ২০২২’ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ দলের সাফল্যের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, এই বঙ্গমাতা টুর্নামেন্ট অংশগ্রহণকারী পাঁচজন খেলোয়াড় সে দলে রয়েছেন। তিনি বলেন, “আজ আমি খুবই আনন্দিত, কেননা এখান থেকে শুরু। আমি বিশ্বাস করি, আমাদেরই খুঁদে ফুটবলাররা একদিন বাংলাদেশের জন্য আন্তর্জাতিক পর্যায়ে থেকে আরো বেশি সম্মান বয়ে নিয়ে আসবে। যেমন এখন আমাদের মেয়ে ফুটবলাররা সম্মান বয়ে আনছে, আগামীতে আমাদের ছেলে মেয়ে উভয়ই আনতে পারবে বলে আমি বিশ্বাস করি।”




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com