চাঁদপুর-লক্ষ্মীপুর-রামগঞ্জ-রায়পুর-হাইমচর-ফরিদগঞ্জ সহ আরো কয়েকটি উপজেলা বেষ্টিত চাঁদপুর সেচ প্রকল্পের আওতাধীন ১০০ কিলোমিটার সড়কের এক অংশ থেকে মাটি কেটে ইট তৈরি করছে স্থানীয় প্রভাবশালী ইট প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স নুরুল আলম ব্রিকফিল্ড (এনবিএফ)। স্থানীয়দের মধ্যে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে বলেন, এরা রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘদিন এ ধরনের জাতীয় মানের অপরাধ করে যাচ্ছেন। ঘটনার সত্যতা জানতে সরজমিনে ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৩ নং সুবিদপুর ইউনিয়নের সুবিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের রাস্তার উপর গেলে দেখা যায় স্থানীয় প্রভাবশালী মোঃ নুরুল আলম কবির পাটোয়ারীর প্রতিষ্ঠিত মেসার্স এনবিএফ ব্রিকফিল্ড এর ইট প্রস্তুত করতে চাঁদপুর সেচ প্রকল্প বাঁধের অথবা চাঁদপুর-চান্দ্রা- রামগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের পাঁকা রাস্তার এজিন পর্যন্ত মাটি কেটে নিয়ে যায়। জানাজায় প্রায় ৫০ বছর আগে কৃষি ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটানের লক্ষ্যে এবং বন্যা কবলিত বাংলাদেশের এই অংশের মানুষদের অতি বন্যা থেকে রক্ষার জন্য চাঁদপুর সেচ প্রকল্প বাঁধ হিসেবে এই বাঁধকে চাঁদপুর-লক্ষীপুর-রায়পুর- ফরিদগঞ্জ-রামগঞ্জ-হাইমচর সহ কয়েকটি এলাকা মিলে ১০০ কিলোমিটার বাঁধকে সি আই পি বেড়িবাঁধ হিসেবে তৈরি করা হয়। বর্তমানে এই বাঁধটি সড়ক ভবনের আওতায় নিয়ে এই অঞ্চলের লাখো মানুষের আঞ্চলিক মহাসড়ক হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। রাস্তাটির দুপাশে করা হয় সবুজ বনায়ন। এবং ইতিপূর্বে কয়েক ধাপে সরকারিভাবে এই বনায়ন বিক্রি করে সরকারি কোষাগারে জমা হয় কোটি কোটি টাকা। কিন্তু সে সড়কের দুপাশের উন্নত মাটির উপর নজর পড়ে এই অঞ্চলের মাটি খেকোদের। এমনই একজন ইট বাটা মালিক যার নাম মোঃ নুরুল আলম কবির পাটোয়ারী। নুরুল আলম কবির পাটওয়ারীর ব্রিকফিল্ডের নাম এনবিএফ। তার নজর পড়ে এই আঞ্চলিক মহাসড়কের উন্নত মাটির উপর। তাই তার নিজস্ব বেকু ব্যবহার করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের এই রাস্তা এবং আঞ্চলিক মহাসড়কের এজিন পর্যন্ত মাটি কেটে নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য প্রস্তুত করছেন ইট। এলাকার সচেতন মহল এবং স্থানীয় পথচারীদের সাথে এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে প্রভাবশালী ব্রিক ফিল্ড মালিকদের অত্যাচারের ভয়ে তারা কিছু বলতে চায়না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই বলেছেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং সড়ক ভবনের কিছু কর্মকর্তা এই অঞ্চলে মাঝেমধ্যেই ঘোরাফেরা করতে দেখা গেছে। এবং তাদের সহযোগিতা ছাড়া ব্রিক ফিল্ড মালিকরা এত বড় অপরাধ করতে সাহস পাওয়ার কথা নয়। রহস্যজনক কারণে দেশের জাতীয় মানের এই ক্ষতি নীরবেই থেকে যাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে এনবিএফ ফিল্ডের পরিচালক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম পাটোয়ারীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ব্রিক ফিল্ডে মাটির দরকার। কোথাও মাটি পাইনা তাই এখান থেকে মাটি কেটেছি। পরে আবার মাটি ফেলে ভরাট করে দিবেন বলে তিনি জানন। এ সময় তিনি একটি রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন নেতাদের নাম বলে নিজের ভাবমূর্তি বৃদ্ধি করতে চান। এ বিষয়ে চাঁদপুর সড়ক বিভাগের সাথে কথা হলে তারা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপর দায়িত্ব চাপিয়ে দেন। অন্যদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের চাঁদপুর জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ জহুরুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমরা অবগত ছিলাম না, যেহেতু আপনাদের মাধ্যমে জেনেছি, তাহলে আমরা লোক পাঠিয়ে সমস্যাটি দেখব। এবং আইনগত ব্যবস্থা নিবেন বলে তিনি এই প্রতিনিধিকে জানান। ফরিদগঞ্জের উত্তর পূর্বাঞ্চল দিয়ে ভয়ে যাওয়া চাঁদপুর সেচ প্রকল্প বাঁধ অথবা চাঁদপুর-চান্দ্রা মুন্সিহাট-রামগঞ্জ আঞ্চলিক এই মহাসড়কের পাশে শুধু এনবিএফ ব্রেকফিল্ডই নয়। এই অঞ্চলের এ সড়কের পাশে অসংখ্য ব্রিক ফিল্ড রয়েছে। যারা প্রত্যেকেই এ সড়কের মাটি কেটে নিয়ে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য জাতীয় মানের ক্ষতি করে আসছে।