বিবিসির অনুসন্ধান
ইসরাইল-হামাস যুদ্ধের পর বিবিসির এক অনুসন্ধানে দেখা গেছে, গাজার পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার অর্ধেকই ধ্বংস হয়ে গেছে, না হয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এক্ষেত্রে স্যাটেলাইটে পাওয়া ফুটেজ যাচাই করে দেখেছে বিবিসি। তাতে দেখা গেছে, পানির লবণক্তা মুক্তকরণের ৬০৩টি প্লান্ট এবং গভীর নলকূপ ব্যবস্থার অর্ধেকেরই এই পরিণতি হয়েছে। ৬টি বর্জ্যপানি শোধনকেন্দ্রের মধ্যে চারটির একই অবস্থা। বিবিসি একটি ত্রাণ সংস্থাকে উদ্ধৃত করে বলেছে, পানি শোধনের বাকি দুটি প্লান্ট জ্বালানি অথবা সরবরাহের অভাবে বন্ধ রয়েছে। একটি বড় মজুদাগার হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এর মেরামত কাজ মারাত্মকভাবে বিঘিœত হচ্ছে। এসব স্থাপনা ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে গাজায় গাদাগাদি করে অবস্থান করা নিরীহ মানুষের মধ্যে পানিবাহিত রোগের আধিক্য দেখা গেছে। এর ফলে পুরো জনগোষ্ঠীর মধ্যে, বিশেষ করে শিশু ও অন্তঃসত্ত্বা মায়েদের স্বাস্থ্যঝুঁকি গুরুতর হয়ে উঠেছে। নাটকীয়ভাবে বেড়েছে ডায়রিয়া, হেপাটাইটিস এ, কলেরা সহ বিভিন্ন রোগ। মেডিসিন্স সান্স ফ্রন্টিয়ার্স ইউকে’র নির্বাহী পরিচালক ড. নাতালি রবার্টস বলেন, পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন স্থাপনা ধ্বংস করে দেয়ার ফলে ওই জনগোষ্ঠীর মৃত্যুসহ বিপর্যয়কর পরিণতি ডেকে আনছে। এক্ষেত্রে তিনি গাজার দক্ষিণে সীমান্ত অঞ্চল এবং রাফা এলাকার কথা জোর দিয়ে তুলে ধরেন। বিবিসি বলেছে, গাজার ওইসব স্থাপনার প্রতিটির প্রকৃত অবস্থা তারা নিশ্চিতভাবে নির্ধারণ করতে পারেনি। তারা বলেছে, স্যাটেলাইটের ছবিতে সব ক্ষয়ক্ষতি দৃশ্যমান হয় না। ফলে অনেক স্থাপনা এক্ষেত্রে মিস হয়ে থাকতে পারে। গাজার ‘কোস্টাল মিউনিসিপ্যালিটিজ ওয়াটার ইউটিলিটি’ এবং ইউনিসেফের প্রধান সার্ভিস ডিপোর মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। এসবের মেরামত চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠেছে। মানবাধিকারের বিশেষজ্ঞরা আহ্বান জানিয়েছেন নিরীহ বেসামরিক লোকজনকে সুরক্ষিত রাখতে গুরুত্বপূর্ণ এসব স্থাপনাকে টিকিয়ে রাখতে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত আইসিসির সাবেক বিশেষ উপদেষ্টা লেইলা সাদাত মনে করেন, যে ধারায় এই ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে তাতে মনে হচ্ছে বেসামরিক অবকাঠামোকে ইচ্ছাকৃতভাবে টার্গেট করা হয়েছে। তিনি বলেন, সম্ভবত তারা (ইসরাইল) যা করেছে তার সবটাই ভুল নয়। বিবিসির জিজ্ঞাসার জবাবে ইসরাইল ডিফেন্স ফোর্সেস বলেছে, সামরিক উদ্দেশে বেসামরিক স্থাপনা ব্যবহার করেছে হামাস। তারা সেখানে অস্ত্র ও গোলাবারুদ মজুদ করে রাখতো।