ঢাকাই সিনেমার আলোচিত নায়িকা নাসরিন আক্তার নিপুণ। তার পরিবারের কেউই অভিনয় জগতের মানুষ নন। আকস্মিকভাবে রুপালি জগতে পা রেখে, নিজের শক্ত অবস্থান গড়ে নেন নিপুণ। অভিনয় গুণে জাতীয় পুরস্কারও পেয়েছেন। কিন্তু শিল্পী সমিতির নির্বাচনে অংশ নিয়ে বহু বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন এই অভিনেত্রী।
১৯৮৪ সালের ৯ জুন কুমিল্লা জেলার বরুড়া উপজেলার জালগাঁও গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন নিপুণ। কখনো কল্পনা করেননি অভিনয়শিল্পী হবেন তিনি। ১৯৯৯ সালে এইচএসসি পাস করে উচ্চশিক্ষার জন্য পাড়ি জমান রাশিয়ায়। মস্কো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করার পর হুট করে নায়িকা হয়ে যান! কিন্তু সেটা কীভাবে? এক সাক্ষাৎকারে নিপুণ তার নায়িকা হওয়ার গল্প জানান। তিনি বলেন, ‘উচ্চমাধ্যমিকের পর ১৯৯৯ সালে আমি দেশ ছাড়ি। ২০০৪ সাল পর্যন্ত মস্কোতে পড়ালেখা করি। এর মধ্যে আমার বিয়ে হয়। সেই সূত্রে পাড়ি জমাই যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে আমি একটি ফার্মেসিতে চাকরি করতাম। ভালোই চলছিল জীবন। ২০০৬ সালের দিকে দেশে বেড়াতে আসি। দেশে এসেই সিনেমায় অভিনয়ের প্রস্তাব পাই!’
নিপুণের আগে তার পরিবারের কেউই অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। তা জানিয়ে এই অভিনেত্রী বলেন, “আমার আগে আমার চৌদ্দগুষ্টির কেউই সিনেমায় অভিনয় করেননি। শখের বসেই অভিনয় করলাম। মজার বিষয় হলো, আমি প্রথম অভিনয় করি ‘রতœগর্ভা মা’ সিনেমায়। কিন্তু সেই সিনেমা মুক্তি পায়নি! ‘পিতার আসন’ আমার মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম সিনেমা।”
২০০৬ সালে মুক্তি পায় নিপুণ অভিনীত ‘পিতার আসন’ সিনেমা। এ সিনেমা মুক্তির পর ছয় মাস যুক্তরাষ্ট্র, ছয় মাস বাংলাদেশে বসবাস করতে থাকেন নিপুণ। কিন্তু শখের অভিনেত্রী থেকে কীভাবে পেশাদার অভিনেত্রী হলেন নিপুণ? নিপুণ বলেন, “প্রেক্ষাগৃহগুলোতে নিজের বড় বড় পোস্টার দেখি, ভালোই তো লাগে। মনে হয়, এই একটা সিনেমা করব তারপর আবার ফিরে যাব। কিন্তু জীবনের মোড় ঘুরে যায় ২০০৮ সালে। ‘সাজঘর’ সিনেমার জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাই। ঠিক তার পরের বছর অর্থাৎ ২০০৯ সালে ‘চাঁদের মতো বউ’ সিনেমায় অভিনয় করে দ্বিতীয়বার জাতীয় পুরস্কার পাই। তারপরই ভাবি— না, অন্যকিছু নয়, চলচ্চিত্রই হবে আমার গন্তব্য। যুক্তরাষ্ট্র থেকে পাকাপাকিভাবে ঢাকায় চলে আসি।” অভিনয় ক্যারিয়ারে অনেক সিনেমায় অভিনয় করেছেন নিপুণ। ঢাকাই সিনেমার প্রথম সারির সব নায়কের সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয় করেছেন তিনি। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হলো— ‘আমার প্রাণের স্বামী’, ‘চাঁদের মতো বউ’, ‘শুভ বিবাহ’, ‘অবুঝ বউ’, ‘দুই পুরুষ’, ‘বস নাম্বার ওয়ান’, ‘এক কাপ চা’ প্রভৃতি।