আলোচিত চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে ভোট কেন্দ্র থেকে ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের ঘটনায় স্থগিত হওয়ার এক সপ্তাহ পর কেন্দ্রটির ভোট কাল বুধবার। এ কেন্দ্র ৩ হাজার ৬১৫ জন ভোটার দুটি পদে ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ভোট দিতে পারবেন। বুধবার (৫ জুন) সকাল ৮ হতে শুরু হয়ে এ কেন্দ্রে একটানা ভোট গ্রহন চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। কেন্দ্রটিতে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্টেটসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন। জানা যায়, গত ২৯ মে সকালে ভোট গ্রহন শুরুর ঘন্টা খানেক পর কাশিয়াইশ ইউনিয়নের পূর্ব পিঙ্গলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩৪ নং ভোট কেন্দ্রে ২৫০-৩০০ জনের সংঘবদ্ধ বহিরাগত সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে কেন্দ্রটির প্রিজাইডিং অফিসার মো. শহিদুল্লাহ রায়হানের কাছ থেকে জোর পূর্বক বেশ কিছু অব্যবহ্ত ব্যালট পেপারসহ নির্বাচনী সরান্জম ছিনতাই করে নিয়ে যায়। সাথে সাথে ঘটনাটি প্রিজাইডিং অফিসার তার সংশ্লিষ্টদের জানালে তাৎক্ষণিকভাবে ভোট কেন্দ্রে ভোট গ্রহন বন্ধ রাখা হয়। এরপর সেদিন দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এরপর নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে কেন্দ্রটির ভোট গ্রহন স্থগিত করা হয়। এ ঘটনায় ১ লা জুন রাতে কেন্দ্রটি প্রিজাইডিং অফিসার মো. শহীদুল্লাহ রায়হান বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলাটি ২৫০/৩০০ জন অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে। এর আগে, গত ৩০ মে অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন অফিসার ও ৬ষ্ট উপজেলা পরিষদ সাধারণ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম প্রামানিক স্বাক্ষরিত এক গন বিজ্ঞপ্তিতে ৫ জুন স্থগিত হওয়া কেন্দ্রটির পুনরায় ভোট গ্রহনের আদেশ জারি করা হয়। উল্লেখ্য, ২৯ মে তৃতীয় ধাপের পটিয়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে ১২৮টি কেন্দ্রের মধ্যে ১২৭ টি কেন্দ্রের কমিশনের প্রাপ্ত ফলাফল অনুয়ায়ী চেয়ারম্যান পদে দোয়াত কলম প্রতীকের প্রার্থী যুবলীগ নেতা মো. দিদারুল আলম পেয়েছেন ৫৬ হাজার ৫৪১ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ নেতা আনারস প্রতীকের প্রার্থী হাজী মু. হারুনুর রশিদ পেয়েছেন ৪৬ হাজার ১৪২ভোট। এ উপজেলা মোট ভোটার ছিল ৩ লাখ ৩৪ হাজার ৫৪৫ জন। তৃতীয় ধাপের এ উপজেলা নির্বাচনে ভোট পড়েছে ১ লাখ ৬ হাজার ২৯১ টি।
যা মোট ভোটের ৩১ দশমিক ৭৭ শতাংশ। নির্বাচনে ভোট বাতিল হয়েছে ৩ হাজার ৬০৮টি। অপরদিকে, নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে যুবলীগ নেতা আবু সালেহ মোহাম্মদ শাহরিয়ার শাহরু উড়োজাহাজ প্রতীকে পেয়েছেন ২৩ হাজার ৮৫০ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্ধী ডা. এমদাদুল হাসান বই প্রতিতে পেয়েছেন ২৩ হাজার ৭৩ ভোট। শাহরু এগিয়ে আছেন ৭৭৭ ভোটে। তাদের মধ্যে এ কেন্দ্রের ভোটে ৮ জন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে এ ২ জনের হাড্ডা হাড্ডি লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তবে দুই জনের মধ্যে যে নির্বাচিত হোক না কেন তিনিই হবেন তাদের প্রথম বারের মতো কোন ¯হানীয় সরকার নির্বাচনে বিজয়ী হওয়া প্রথম কোন জনপ্রতিনিধি। অন্য দিকে, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬ জন প্রার্থীর মধ্যে লড়াই হবে ২ প্রার্থীর মধ্যে। ভোটের পরিসংখ্যানে এগিয়ে থাকা কলস প্রতীকের প্রার্থী মাজেদা বেগম শিরু আর প্রজাপতি প্রতীকের সাজেদা বেগমের সাথে। ১২৭ টি কেন্দ্রে নারী নেত্রী শিরু ভোট পান ২৪ হাজার ৮৯৪। বিপরীতে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্ধী মহিলা আ: লীগ নেত্রী পান ২৪ হাজার ৭৩১ ভোট। সে পরিসংখ্যানে ৮৩ ভোটে এগিয়ে থেকে জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা আছে মাজেদা বেগম শিরুর। এবার নির্বাচিত হলে তার হ্যাট্রিক বিজয় হবে এ নারী নেত্রী। আর সাজেদা বেগম নির্বাচিত হলে তিনি হবেন একমাত্র নির্বাচিত নারী জনপ্রতিনিধি যিনি পূর্বে স্হানীয় সরকার নির্বাচনে ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত নারী সদস্যের সিড়ি বেয়ে প্রথম বারের মতো মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বড়ো পরিসরে জনপ্রতিনিধির আসনে আসীন হবেন।