টকশোর বক্তব্যে আদালত অবমাননার অভিযোগে সাংবাদিক কনক সরওয়ার ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মহসীন রশিদকে অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ৬ বিচারপতির আপিল বিভাগ এই আদেশ দেন। আদেশের আগে সর্বোচ্চ আদালত কক্ষের ডিজিটাল স্ক্রিনে কনক সরওয়ারের ওই টকশোর কিছু কিছু অংশ প্রদর্শন করা হয়। আদালত অবমাননার অভিযোগের আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী তাপস কান্তি বল।
আদেশে আইনজীবী মহসীন রশিদ ও কনক সরওয়ারকে আগামী ২১শে জুলাই সকালে আপিল বিভাগে উপস্থিত হয়ে তার ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে এই সময় পর্যন্ত তিনি সুপ্রিম কোর্টের কোনো বিভাগে আইন পেশা পরিচালনা করতে পারবেন না বলে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি আদালত অবমাননার অভিযোগ আসা টকশোর ওই পর্বের ভিডিও কন্টেন্টটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে অপসারণ করতে বিটিআরসির প্রতি নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদ-প্রাপ্ত চৌধুরী মঈনুদ্দীনকে যুক্তরাজ্যের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি প্যাটেলের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করার সুযোগ দিয়ে সম্প্রতি রায় দিয়েছে যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্ট। এই রায় নিয়ে গত ২১শে জুন প্রবাসী সাংবাদিক কনক সরওয়ার পরিচালিত টকশোতে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মহসীন রশিদ বাংলাদেশের আদালত ও বিচারব্যবস্থা নিয়ে অবমাননাকর বক্তব্য দিয়েছেন বলে অভিযোগ আনা হয়েছে। শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরীর করা আদালত অবমাননার আবেদনটি বুধবার আপিল বিভাগের বিচারপতি শাহিনুর ইসলামের চেম্বার আদালতে উপস্থাপন করা হলে বিষয়টি ৪ঠা জুলাই আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেে শুনানির জন্য নির্ধারণ করা হয়।
মানবতাবিরোধী অপরাধে ২০১৩ সালে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মৃত্যুদ- পান চৌধুরী মঈনুদ্দীন। পরবর্তীকালে ২০১৯ সালে মুঈনুদ্দীনের ফৌজদারি অপরাধের বিবরণসহ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি প্যাটেল সেই প্রতিবেদন তখনকার টুইটার (বর্তমানে এক্স) হ্যান্ডলে শেয়ার করেন। তবে নিজেকে ‘নির্দোষ’ দাবি করে ‘যুদ্ধাপরাধী’ বলায় সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রিরুদ্ধে হাইকোর্টে মানহীন মামলার আবেদন করে মঈনুদ্দীন।
পরে তা দুই দফায় খারিজ হলেও সুপ্রিম কোর্টে ফের মামলা করার আবেদন করলে গত ২০শে জুন যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্ট মঈনুদ্দীনকে মামলা করার সুযোগ দিয়ে রায় দেয়। এই রায়ের অনুলিপি যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।