মুক্তিযোদ্ধা কোটা আপিল বিভাগের স্থিতাবস্থা প্রত্যাখ্যান
মুক্তিযোদ্ধা কোটা ইস্যুতে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর আপিল বিভাগের স্থিতাবস্থা প্রত্যাখ্যান করেছেন শিক্ষার্থীরা। তারা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এবিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন, আমরা কোনো ঝুলন্ত সিদ্ধান্ত মানছি না। আমাদের এক দফা দাবি “সংসদে আইন পাস করে সরকরি চাকরির সকল গ্রেডে শুধুমাত্র পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য ন্যূনতম (সর্বোচ্চ ৫শতাংশ) কোটা রেখে সকল ধরণের বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করতে হবে। ” এ দাবি নির্বাহী বিভাগ থেকে যতক্ষণ না পূরণ করা হবে আমরা রাজপথে থাকব।
রাজধানীর সায়েন্সল্যাব মোড় অবরোধ করা শিক্ষার্থীদের পক্ষে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ঢাকা কলেজ শাখার সমন্বয়ক নাজমুল হাসান বলেন, ‘আমরা স্থায়ী সমাধান চাই। কোটা নিয়ে বারবার টালবাহানা দেখতে চাই না। সব গ্রেডে অযৌক্তিক এবং বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লেখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে ন্যূনতম মাত্রায় এনে সংসদে আইন পাস করতে হবে। আমরা পড়ার টেবিলে ফিরে যেতে চাই। দাবি মেনে নেওয়া না পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।’
উল্লেখ্য, গত বুধবার (১০ জুলাই) সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর চার সপ্তাহের জন্য স্থিতাবস্থা জারি করেছেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে এসময়ের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ ও শিক্ষার্থীদের হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করতে বলেছেন আদালত। এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য ৭ আগস্ট দিন ধার্য করা হয়েছে। প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির আপিল বে এ আদেশ দেন। এ আদেশের ফলে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্র বহাল থাকছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ: ‘বাংলা ব্লকেড’-এর আওতায় রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট অবরোধ করেছে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীরা। সকল গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লেখিত অনগ্রসর গোষ্ঠী, বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের জন্য কোটাকে ন্যূনতম পর্যায়ে এনে সংসদে আইন পাশের দাবি। পাশাপাশি কোটা পদ্ধতি সংস্কার করার দাবিতে গতকাল বুধবার (১০ জুলাই) সকাল দশটা থেকে এ অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। গতকাল বুধবার সকাল এগারোটা প াশের দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও চাকুরি প্রত্যাশীরা কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অংশ প্রদক্ষিণ করে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন।
এদিকে সকাল এগারোটার দিকে শাহবাগ মোড় ছাড়াও কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী ঢাকা কলেজ ও ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা নীলক্ষেত মোড় ও সায়েন্সল্যাব মোড় অবরোধ করেছে। রাজধানীর অন্যতম ব্যস্ততম সড়ক গুলিস্তানের জিপিও মোড়ও অবরোধ করেছেন আন্দোলনকারীরা। মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারের ওঠা ও নামার র্যাম্পও অবরোধ করেছেন আন্দোলনকারীরা। শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অবরোধ করেছেন আগারগাঁও মোড়।
মহাখালীতে রেলপথ ও সড়কপথ অবরোধ করেছেন সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা। এর আগে গত মঙ্গলবার গতকাল বুধবার সকাল থেকে সন্ধ্যা কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে সড়ক ও রেল অবরোধ কর্মসূচি ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি ঘোষণা করে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত প্ল্যাটফর্ম ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন’।