মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:২৪ অপরাহ্ন

বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদল দিল্লির জন্য উদ্বেগের নয়: শশী থারুর

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় সোমবার, ১২ আগস্ট, ২০২৪

গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগে বাধ্য হওয়ার পর ভারত সরকার তাকে আশ্রয় দিয়েছে। দিল্লির এই পদক্ষেপকে প্রশংসা করেছেন কংগ্রেস নেতা এবং সংসদ সদস্য শশী থারুর। ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, প্রতিবেশী দেশে ক্ষমতার পালাবদল ভারতের জন্য কোনোভাবেই উদ্বেগের বিষয় নয়।
শশী থারুরের কাছে সাংবাদিক জানতে চান, বাংলাদেশের উন্নয়ন কীভাবে ভারতের সাথে দেশটির সম্পর্ককে প্রভাবিত করে? জবাবে তিনি বলেছেন, আমাদের মৌলিক স্বার্থ বাংলাদেশের সাথে ঘনিষ্ঠ যা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের মধ্যে নিহিত। আমাদের মৌলিক প্রতিশ্রুতি বাংলাদেশের জনগণের মঙ্গল কামনা করা। সম্পর্কের প্রশ্নে রাষ্ট্র দ্বিতীয় এবং নেতৃত্ব তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। আমরা বাংলাদেশের জনগণের সাথে আছি, যেমনভাবে ১৯৭১ সালে তাদের সাথে ছিলাম। ভালো এবং খারাপ মুহূর্তে আমরা তাদের সাথে আছি। তাদের সরকার যদি আমাদের জন্য বন্ধুত্বপূর্ণ নাও হয় তবুও আমরা বাংলাদেশের জনগণের সাথে আছি। ভবিষ্যতেও এই সম্পর্কের অবনতি হওয়া উচিত নয়। অন্তর্র্বতী সরকার এবং এর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্পর্কে শশী বলেছেন, এ বিষয়ে দিল্লির উদ্বেগের কোনো কারণ নেই। কেননা আমি ইউনূসকে যদ্দূর জানি তিনি একজন সম্মানিত ব্যক্তি।
তিনি ওয়াশিংটনের খুবই ঘনিষ্ঠ একজন। আপনি যদি পুরো অন্তর্র্বতী সরকারের দিকে তাকান দেখবেন, ভারতের এ নিয়ে উদ্বেগের কারণ নেই।
তবে ভারতের জন্য বড় চিন্তার কারণ হচ্ছে পাকিস্তান এবং চীন। কেননা তারা এখন ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে নামতে পারে। এসব পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে চীনের উপস্থিতি সম্প্রসারণের সুযোগ বৃদ্ধি পাওয়া অস্বাভাবিক নয়। তবে ভারতের ইউনূসকে নিয়ে কোনোরকম উদ্বেগে পড়ার কারণ নেই। শেখ হাসিনাকে ভারতে আশ্রয় দেয়ার বিষয়ে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি নরেন্দ্র মোদির প্রশংসা করে বলেছেন, আমরা যদি হাসিনাকে সাহায্য না করতাম তাহলে এ বিষয়টি ভারতের জন্য অসম্মানজনক হত। আমরা যদি আমাদের বন্ধুর সাথে খারাপ আচরণ করি তাহলে কেউই আমাদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক করতে রাজী হবে না। হাসিনা যেমন ভারতের বন্ধু, তেমনি ভারতও হাসিনার বন্ধু। এক্ষেত্রে বন্ধু যখন বিপদে পড়ে তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পাশে দাঁড়াতে দ্বিতীয়বার ভাবার কোনো সুযোগ নেই। ভারত এক্ষেত্রে বন্ধুর কাজটিই করেছে। হাসিনার পাশে থাকার জন্য আমি সরকারকে সাধুবাদ জানাই। সরকার হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে সঠিক কাজটিই করেছে এবং বিশ্বে একটি ভারতীয়দের মান নিশ্চিত করতে সঠিক কাজটিই করেছে।
এক্ষেত্রে হাসিনা ভারতে কতদিন স্থায়ী হবেন সে বিষয়েও প্রশ্ন করা সমীচিন হবেনা বলে মনে করেন শশী থারুর। তিনি বলেছেন আপনি একজনকে আপনার বাড়িতে দাওয়াত দিয়ে এনে তাকে জিজ্ঞাস করতে পারেন না যে, তিনি কতদিন আপনার বাড়িতে স্থায়ী হবেন। এখানে আমার কথা হচ্ছে অপেক্ষা করা এবং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা যতদিন না পর্যন্ত হাসিনা নিজ থেকে ভারত ত্যাগ করার ইচ্ছা ব্যক্ত করছেন। কেননা এখানে অনেক বিষয় জড়িত, এখানে অন্য দেশে অনুমতি বা ভিসার প্রশ্ন জড়িত রয়েছে। সুতরাং আমাদের এ বিষয়ে গর্বিত হতে হবে যে আমরা আমাদের বন্ধুর খারাপ সময়ে তার পাশে নিরাপত্তা প্রহরী হয়ে দাঁড়াতে পেরেছি।

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু ইস্যুতে শশী থারুরকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেছেন, সেখানে (বাংলাদেশে) এমন কিছু ঘটনা যে ঘটেছে তা সকলেই স্বীকার করছে। তবে এই সংবাদ পাওয়ার পাশাপাশি আমরাতো এ খবরও পাচ্ছি সেখানে মুসলিমরা হিন্দুদের ঘর-বাড়ি, মন্দির পাহাড়া দিচ্ছে। সুতরাং সেখান থেকে আমরা কিছু খারাপ সংবাদের পাশাপাশি ভালো সংবাদও পাচ্ছি।
কংগ্রেসের এই নেতা অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ভাষণে আশার আলোর কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, প্রফেসর ইউনূস তার বিবৃতিতে সংখ্যালঘুদের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন এবং জনগণকে শান্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। ইউনূসের বক্তব্যকে ইতিবাচক হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন শশী থারুর।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com