বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ১২:২৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::

প্রতিবিপ্লব রুখার আহ্বান মেজর হাফিজের

নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৪

ছাত্র-জনতার বিপ্লবের বিরুদ্ধে পতিত স্বৈরাচারের প্রতিবিপ্লব রুখতে প্রধান উপদেষ্টাকে কঠোর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদে। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দলের উদ্যোগে সংগঠনটির প্রয়াত আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম মাহতাবের স্মরণে এক আলোচনা সভায় তিনি এ আহ্বান জানান। সভার পরে প্রয়াত নেতার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। মৎস্যজীবী দলের যুগ্ম আহ্বায়ক সেলিম মিঞার সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা চাই বিপ্লব যেন পথ হারিয়ে না ফেলে। উপদেষ্টা পরিষদে যারা আছেন, আপনারা বিপ্লবকে ধারণ করুন। বিপ্লবের মর্মকথা উপলব্ধি করে প্রতিবিপ্লবকে নস্যাৎ করার জন্য যা কিছু করা প্রয়োজন, এখনো রাষ্ট্র ও সমাজের দেহে শেখ হাসিনার বংশধররাই বসে আছেন, প্রত্যেকটা বাহিনীতে বিশেষ করে পুলিশ বাহিনীতে এবং প্রশাসনে যারা ১৬ বছর ওই অবৈধ সরকারকে (শেখ হাসিনার সরকার) টিকিয়ে রেখেছে তারাই রয়েছে। এই বিপ্লব সফল পরিণতির দিকে যাক আমরা এটাই চাই। আপনি (অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস) আমাদের গৌরব, আপনি শক্ত হন, নিজেকে দুর্বল ভাববেন না। বাংলাদেশের জনতা আপনাদের সঙ্গে আছে। সুতরাং কোনো দুর্বৃত্ত যাতে বাংলাদেশ অধিকার করতে না পারে সেজন্য আপনারা ভূমিকা রাখবেন। বিপ্লবী চরিত্র গ্রহণ করে বিপ্লবীর মতো বাংলাদেশের সেবা করবেন- এটাই আমরা আশা করি। তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার বিপ্লবের বিরুদ্ধে প্রতিবিপ্লব রুখতে সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।
আমি আশা করব, ভবিষ্যতে কেউ যদি প্রতিবিপ্লব শুরু করতে চায়, ভারতে আশ্রয় গ্রহণকারী আওয়ামী লীগ নেত্রী (শেখ হাসিনা) ও পতিত সরকারের সদস্যরা এই বিপ্লবের বিরুদ্ধে প্রতিবিপ্লব করতে গেলে বর্তমান সরকারের উচিত হবে প্রথমে বিডিআরকে (বিজিবি) ডাকা, বিডিআর না পারলে সেনাবাহিনীকে ডাকেন। আমরা প্রত্যেকটি বাহিনীর আসল চরিত্র দেখতে চাই, বর্তমান চরিত্র দেখতে চাই। তারা কি জনগণের পক্ষে, না জনগণের বিপক্ষে তা আমরা দেখতে চাই। কোন সাহসে আনসার বাহিনী সচিবালয়ের দেয়াল টপকিয়ে উপদেষ্টাদেরকে এবং সরকারি কর্মকর্তাদেরকে ঘেরাও করার মতো সাহস দেখায়। তবে কি বিপ্লব অসম্পূর্ণ? অসম্পূর্ণ হলে আবারো যারা এই বিপ্লবকে নস্যাৎ করতে চায়, আমরা সবাই মিলে ছাত্র-জনতা-যুবকসহ সকলে মিলে এই প্রতিবিপ্লবের চেষ্টাকে ব্যর্থ করে দেবো।
মেজর হাফিজ বলেন, প্রধান উপদেষ্টা এবং উপদেষ্টা পরিষদের কাছে আমাদের অনুরোধ হলো এদেশের জনগণের স্টেকহোল্ডার হলো পলিটিক্যাল পার্টিগুলো। যদি গণতন্ত্র চান পলিটিক্যাল পার্টিগুলোর সঙ্গে কথা বলুন। সংসদে অতীতে প্রতিনিধিত্ব আছে এই ধরনের রাজনৈতিক দল অতীতে প্রতিনিধিত্ব পেয়েছে তাদের সঙ্গে দ্রুত আলাপ করুন। কিভাবে গণতন্ত্র উত্তরণ করা যায়, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ করে তাদের কাছ থেকে সুপারিশ গ্রহণ করুন।
তিনি বলেন, গণতন্ত্র উত্তরণ করতে হলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই নির্বাচন কমিশনকে বিলুপ্ত করেন। এরা তো জনগণের নির্বাচন কমিশন কমিশন না। এই নির্বাচন কমিশন দিনের ভোট রাতে করেছে, একদিন আগে করেছে। নির্বাচনের দিন প্রধান নির্বাচন কমিশন ঘুমায়, তিনি বলেছেন যে, দুপুর বেলা দেখলাম যে, চব্বিশ শতাংশ ভোট পড়েছে একটা নির্বাচনে, যখন একটা ঘুম দিলাম, ঘুম থেকে উঠে দেখি ৫৫ শতাংশ হয়ে গেছে। যেদেশে নির্বাচনের দিন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ঘুমায় তাহলে এদেশে কিভাবে গণতন্ত্র আসবে? যদি গণতন্ত্র উত্তরণ করতে চান তাহলে এই বশংধর কমিশন বিলুপ্ত করুন।
বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, এদেশে গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে গণতন্ত্রের কোনো বিকল্প নাই। অতি অল্প সময়ের মধ্যে আপনারা (প্রধান উপদেষ্টা) রোডম্যাপ ঘোষণা করুন। একটি যৌক্তিক সময়ে নির্বাচন দিয়ে জনগণের প্রতিনিধিদের দায়িত্বভার গ্রহণ করার সুযোগ করে দেন। রোডম্যাপ ঘোষণা করতে অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের কোনো আপত্তি থাকার কথা নয়।
হাফিজ বলেন, যদি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ বিএনপিকে দায়িত্ব দেয় আমরা পুরো জাতিকে মিলিটারি ট্রেনিং দিয়ে সৈনিকে পরিণত করব। কোনো প্রতিবেশী দেশ যাতে আমাদের দিকে রক্তচক্ষু না দেখাতে পারে, আমরা যাতে আগ্রাসনের শিকার না হই সেজন্য আমরা সিটিজেন আর্মি গড়ে তুলব। ছাত্ররা বছরে দুই মাস বেসিক সামরিক ট্রেনিং নিয়ে তারপর আবার ছুটি শেষ হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা শুরু করবে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com