বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:১৫ অপরাহ্ন

পায়ের রং বদলে যাওয়া পিএডি’র লক্ষণ নয় তো?

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যাওয়া হৃদরোগের অন্যতম কারণ। বিশেষ করে খারাপ কোলেস্টেরল ধমনীতে প্লেক তৈরি করে। কোলেস্টেরল একটি মোমযুক্ত পদার্থ, যা শরীরের সুস্থ কোষ তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় এক উপাদান। যখন রক্তনালিতে অতিরিক্ত খারাপ কোলেস্টেরল বা চর্বি জমা হয়, তখন এটি ধমনীগুলো বন্ধ করে দেয়। ফলে ধমনী দিয়ে রক্ত প্রবাহ কঠিন হয়ে যায় ও হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের মতো ঘটনা ঘটে। বংশে কোনো উচ্চ কোলেস্টেরলের রোগী থাকলে অন্যদের মধ্যেও পরে তা দেখা দিতে পারে।
এর ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে তোলে অস্বাস্থ্যকর খাবার, শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা, অতিরিক্ত ওজনসহ অস্বাস্থ্যকর জীবনধারা অনুসরণ করা। সবচেয়ে দুশ্চিন্তার বিষয় হলো, কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়লেও এর কোনো গুরুতর লক্ষণ তেমন প্রকাশ পায় না। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, উচ্চ মাত্রার কোলেস্টেরল টের পাওয়া যায় পায়ের এক লক্ষণে। এক্ষেত্রে পায়ের রং বদলে যেতে শুরু করে। এই সমস্যা দ্রুত নির্ণয় না করা হলে কিংবা চিকিৎসা না নিলে উচ্চ কোলেস্টেরল এথেরোস্ক্লেরোসিস নামক অবস্থার কারণ হতে পারে। অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস হলো চর্বি, কোলেস্টেরল, ধমনীর দেওয়ালে জমা হওয়া, যাকে প্লেকও বলা হয়। এই ফ্যাট বা ফলক ধমনীকে সংকুচিত করতে পারে। যা পা’সহ শরীরের বিভিন্ন অংশের রক্ত প্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করে তোলে।
ফলে ফলকটি ভেঙ্গে যেতে পারে, যার ফলে রক্ত জমাট বাঁধে ও বিপদ আরও বাড়ে। যখন পায়ে রক্ত প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয় বা অবরুদ্ধ হয়, তখন এটি পেরিফেরাল আর্টারি ডিজিজ (পিএডি) নামক অবস্থার দিকে নিয়ে যেতে পারে।
পেরিফেরাল আর্টারি ডিজিজ কি? পেরিফেরাল আর্টারি ডিজিজ হলো প্লেক তৈরির কারণে সরু ধমনীর সাথে যুক্ত একটি অবস্থা, যার ফলে হাত ও পায়ে রক্ত প্রবাহ কমে যায়। পিএডি’তে আক্রান্ত ব্যক্তি পা বা বাহুতে (সাধারণত পা) পর্যাপ্ত রক্ত পায় না, হাঁটার সময় পায়ে ব্যথা হয়। এটি ‘ক্লাউডিকশন’ নামেও পরিচিত।
যদি সময়মতো চিকিৎসা না করা হয়, তাহলে এটি গুরুতর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ইসকেমিয়া ও তীব্র অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ইসকেমিয়া হতে পারে। যা পেরিফেরাল আর্টারিয়াল ডিজিজের একটি উন্নত রূপ। এ প্রভাবেই অঙ্গপ্রত্যঙ্গে রক্ত প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়।
পায়ের রং কেন বদলে যায়? যেহেতু পিএডি’র কারণে পায়ে রক্তের প্রবাহ কমে যায়, তাই এটি পায়ে নির্দিষ্ট রঙের পরিবর্তন ঘটাতে পারে। যদি সময়মতো শনাক্ত না করা হয় তাহলে পা ফ্যাকাশে বা নীল হতে পারে। পায়ে রক্ত চলাচল কম বা কমে যাওয়ার কারণে এমনটি ঘটে। এছাড়া হাঁটার সময় পায়ে ব্যথাও অনুভব করতে পারেন। তবে কয়েক মিনিটের বিশ্রামে এই ব্যথা কমতে পারে।
পিএডি’র অন্যান্য লক্ষণ কী কী? >> নীচের পা বা পায়ে ঠান্ডা, অসাড়তা ও দুর্বলতা। >> পা বা পায়ের স্পন্দন দুর্বল হয়ে যাওয়া >> হাঁটা বা সিঁড়ি বেয়ে ওঠার মতো নির্দিষ্ট ক্রিয়াকলাপের পরে নিতম্ব কিংবা উরুর পেশিতে টান লাগা। >> পায়ের নখের বৃদ্ধি কম হওয়া >> পায়ের আঙুল বা পায়ে ঘা হওয়া ও ক্ষত না সারা >> হাত দিয়ে কোনো কাজ করার সময় ব্যথা অনুভব করা বা টান ধরার অনুভূতি >> ইরেক্টাইল ডিসফাংশন >> চুল পড়া বা পায়ে চুলের ধীর বৃদ্ধি ইত্যাদি।
কীভাবে শনাক্ত করবেন? রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে উচ্চ কোলেস্টেরল সহজেই শনাক্ত করতে পারবেন। যা একটি লিপিড প্রোফাইল বা লিপিড প্যানেল নামে পরিচিত। রক্ত নেওয়ার আগে ৮-১২ ঘণ্টা না খেয়ে থাকার পরামর্শ দিতে পারেন চিকিৎসক।
কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের উপায়: >> সঠিক জীবনধারা কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
>> পুষ্টিকর ও সুষম খাদ্য খান। >> নিয়মিত ব্যায়াম করা জরুরি। >> যদি এ রোগের জন্য কোনো ওষুধ সেবন করেন, তাহলে ডাক্তারের নির্দেশ অনুসারণ করুন। >> ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন। সূত্র: মায়োক্লিনিক/টাইমস অব ইন্ডিয়া




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com