২০০৯ সালের ২৫, ২৬শে ফেব্রয়ারী পিলখানা পরিকল্পিত হত্যাকান্ডের সুষ্ঠ তদন্ত ও চাকুরীচ্যুত বিডিআর সদস্যদের চাকুরীতে পূর্ণবহালের দাবীতে বরিশালে সংবাদ সম্মেলন ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। রবিবার (১৫) সেপ্টেম্বর) বেলা ১২ টায় বরিশাল প্রেস ক্লাবের হলরুমে বরিশাল জেলা বিডিআর কল্যাণ পরিষদের ব্যানারে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে এসময় তাদের ৯ দফা দাবিসহ লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন চাকুরীচ্যুত এনসিও হাবিলদার শহিদুল ইসলাম। তাদের দাবি গুলো হলো-১। ২০০৯ইং সালে ২৫-২৬ ফেব্রয়ারী বিডিআর পিলখানা সংঘঠিত সুপরিকল্পিত হত্যাকান্ডকে তথা কথিত বিদ্রোহ সংঙ্গায়িত না করে পরিকল্পিত হত্যাকান্ড হিসাবে আখ্যায়িত করতে হবে। ২। উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে গঠিত সকল প্রহসনের বিশেষ আদালতকে নির্বাহী আদেশে বাতিল করতে হবে। ৩। চাকুরীচ্যুত সকল পদবীর বিডিআর সদস্যকে সুযোগ সুবিধা সহ চাকুরীতে পূর্নবহাল করতে হবে। ৪। হত্যাকান্ড মামলার মহামান্য হাইকোর্টের বিচারকগনের রায়ের পর্যবেক্ষন অনুযায়ী পিলখানার হত্যাকান্ডের ঘটনার মোটিভ উদ্ধার ও কুশিলবদের সনাক্তকল্পে স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে। ৫। পিলখানা হত্যাকান্ডে শাহাদাৎ বরনকারী ৫৭ মেধাবী সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে শহীদের মর্যাদা দিতে হবে। ৬। ২৫ ফেব্রয়ারী দিনটিকে পিলখানার ট্রাজেডি দিবস হিসাবে ঘোষনা করতে হবে। ৭। পিলখানা হত্যাকান্ডের ঘটনা পরবর্তী তদন্ত/জিজ্ঞাসাবাদে নিরাপত্তা হেফাজতে যে সকল নিরীহ বিডিআর সদস্যদের নির্যাতন পূর্বক হত্যা করা হয়েছে তাদের তালিকা প্রকাশ ও মৃত সকল পদবীর পরিবারকে ক্ষতিপূরন সহ পূর্নাবাসন করতে হবে। ৮। তদন্ত/জিজ্ঞাসাবাদে নিযুক্ত হত্যাকান্ডে জড়িত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সনাক্ত পূর্বক বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। ৯। বিশেষ আদালত কর্তৃক বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ভোগ শেষকারী বিডিআর সদস্যগন যারা প্রহসনের বিষ্ফোরক মামলায় দীর্ঘ ১৬ বছর যাবৎ কারা অন্তরীন আছে। তাদেরকে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে জামিন অথবা মামলা হতে অব্যাহতি পূর্বক মুক্ত করতে হবে। এসময় তারা বলেন তৎকালনি ফ্যাসিষ্ট সরকার পাশ^বর্তী প্রভু দেশকে স্বন্তুষ্ট ও সেনা বাহিনীর সামর্থ ক্ষুন্ন করতে বাংলাদেশ রাইফেলস কে ধ্বংস করার জন্য প্রতিশোধ, স্পৃহা থেকে এবং ক্ষমতাকে সুদৃড় করতে নিল নকশার অংশ হিসাবে সুপরিকল্পিত ভাবে ষড়যন্ত্র পূর্বক পিলখানায় হত্যাকান্ড সংগঠিত করে। উক্ত পরিকল্পিত হত্যাকান্ডে ৫৭ জন এদেশের মেধাবী সেনা কর্মকর্তা সহ ৭৪ জন শাহাদৎবরন করে। পরবর্তীতে ফ্যাসিষ্ট সরকার প্রহসনের বিচারের নামে আমলাতন্ত্র ধ্বংস ও নিরীহ ৫৪ জন বিডিআর সদস্যকে নিরাপত্তা হেফাজতে হত্যাকরে। আর এক বিডিআর হত্যাকান্ডের মাধ্যমে দেশের সিমান্ত অরক্ষিত করার ফলে এদেশের ফালানী সহ নিরিহ সাধারন মানুষ প্রতিদিনই গুলিতে মারা যাচ্ছে। এসময় প্রধান উপদেষ্টা মোসারেফ হোসেন বলেন আমরা বিডিআর সেনাবাহিনী দ্বারা প্রশিক্ষিত সদস্য ওরা আমাদের সবসময় চক্ষুসুল হিসাবে থাকতাম ওদের কাছে। তাই ফ্যাসিষ্ট সরকারকে দিয়ে আমাদের হত্য করে ওদের স্বার্থ হাসিল করে নিয়ে সিমান্ত এখন যা ইচ্ছে তাই করে যাচ্ছে যা বিগত সরকার কোন কিছুরই প্রতিবাদ করেনি। তারা দাবী করেন এদেশের বিডিআর সদস্য কোন বিদ্রোহ করেনি ফ্যাসিষ্ট সরকার আমাদের বিদ্রোহ বানিয়েছে। তারা আরো বলেন পিলখানা হত্যান্ডের ঘটনাকে তথাকথিত বিদ্রোহ সাংঙ্গায়িত করে ১৮ হাজার ৫শত ২০ জন বিডিআর সদস্যকে চাকরীচ্যুত করা সহ তাদেরকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি প্রদান করে। সংবাদ সম্মেলনে চাকুরীচ্যুতদের বিডিআর কল্যান পরিষদের প্রধান উপদেষ্ঠা হাবিলদার মোশারফ হোসেন, সিপাহী মনিরুজ্জামান, জসিম উদ্দিন, মাহাবুবুর রহমান, শহিদুল ইসলাম, আঃ রহিম, আতাইর রহমান, আলম হোসেন, আতিকুর রহমান সহ প্রায় ৫০ জন বিডিআর সদস্য উপস্থিত ছিলেন। বরিশাল জেলায় ১২০ জন সদস্য রয়েছে। সংবাদ সম্মেলন শেষে চাকরীচ্যুত বিডিআর সদস্যরা বরিশাল জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট উপদেষ্টা,আইন উপদেষ্টা ও বিডিবি মহা পরিচালক বরাবর স্বারকলিপি প্রদান করে।