শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫৪ পূর্বাহ্ন

ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠির দোসররা তৎপর: কমছে না নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

আবার সক্রিয় হচ্ছে সিন্ডিকেট। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারের অস্থিরতা ঠেকাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্যোগকে টেক্কা দিতে নানান অপকৌশল শুরু করেছে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী। পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণ করতে তৎপর ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠির দোসরদের কারণে শুল্ক কমানো,চাঁদাবাজি বন্ধের পরও কমছে নিত্য পণ্যের দাম। পাইকারি ও খুচরা বাজারে বিক্রির দাম নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে ডিম-মুরগির। আমদানি শুল্ক কমানো হয়েছে পেঁয়াজের। তবে এসবের কোনো প্রভাব পড়ছে না খুচরা বাজারে। আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে এসব নিত্যপণ্য। এতে বাজার করতে এসে ক্রেতাদের নাভিশ্বাস উঠছে। গতকাল বাজার ঘুরে দেখা যায়, ডিম খুচরা বাজারে বিক্রির জন্য সরকার নির্ধারণ করে প্রতি হালি ৪৭ টাকায়। কিন্তু বাজারে এই ডিম ক্রেতাদের কিনতে হচ্ছে ৫৫ টাকায়। বাজারভেদে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি কিনতে হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায়; যা বেঁধে দেয়ার দামের চেয়ে ১০ টাকা পর্যন্ত বেশি। আর যৌক্তিক দামের চেয়ে ১০ টাকা কমে মিলছে সোনালি মুরগি। পেঁয়াজ রফতানিতে ভারত শুল্ক কমালেও বাজারে এর প্রভাব নেই। আগের দামেই ১৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি পেঁয়াজ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাজারে পণ্যের দাম বেঁধে দেয়া এবং সেটি কার্যকর না হওয়া নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে গেছে। বিগত সরকারও দাম বেড়ে গেলে সরকার কিছু পণ্যের যৌক্তিক দর নির্ধারণ করে দিয়েছে, কিন্তু বাজারে তা বাস্তবায়ন হতে দেখা যায়নি। শেষ গত মার্চে উৎপাদক থেকে ভোক্তাপর্যায়ে ২৯ পণ্যের দাম বেঁধে দিয়েছিল আওয়ামী লীগ সরকার। এর কোনো সুফল আসেনি। গত বছরের এ সময়েও সরকার ডিমের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছিল। কিন্তু তখনো তা মানা হয়নি। এখন নতুন সরকারের ক্ষেত্রেও একই রাস্তায় হাঁটছেন বাজারের ব্যবসায়ীরা। ক্রেতাদের অভিযোগ, আগেও বাজারে পণ্যের দাম বেঁধে দেয়া হতো, যা কার্যকর হতো না। তখন রাজনৈতিক সরকার ছিল, নানা কারণ ছিল। কিন্তু এখন ভেবেছিলাম কিছুটা পরিবর্তন হবে। কিন্তু যে লাউ সেই কদু। নতুন সরকার কিছু পদক্ষেপ নিলেও এর সুফল আমরা পাচ্ছি না।
বিক্রেতারা বলছেন, গত ১৫ সেপ্টেম্বর প্রাণিসম্পদ অধিদফতর খুচরা পর্যায়ে প্রতিটি ডিমের দর ১১ টাকা ৮৭ পয়সা নির্ধারণ করে দেয়। সে হিসেবে প্রতি ডজনের দর দাঁড়ায় প্রায় ১৪৩ টাকা। যখন ডিমের দাম বেঁধে দেয়া হয়েছিল, তখন প্রতি ডজন বিক্রি হতো ১৫০-১৫৫ টাকা দরে; যা এরপর আরো বেড়ে এখন ১৬৫ টাকা হয়েছে। অর্থাৎ দাম বেঁধে দেয়ার পর হালিতে আরো ১০ টাকা বেড়েছে ডিমের দাম।
একই অবস্থা ব্রয়লার ও সোনালি জাতের মুরগির ক্ষেত্রেও। বাজারে যখন প্রতি কেজি ব্রয়লারের দাম ১৭০ টাকা এবং সোনালি জাতের মুরগি ২৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছিল, তখন সরকার দাম বেঁধে দেয় প্রতি কেজি যথাক্রমে ১৭৯ টাকা ৫৯ পয়সা ও ২৬৯ টাকা ৬৪ পয়সা। এরপর কেজিপ্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে এসব মুরগির দাম। এখন বাজারে ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা, সোনালি জাতের মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৬০ থেকে ২৮০ টাকায়।
সবজির বাজারগুলোতে ঘুরে দেখা যায়, মানভেদে বেগুন প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চিচিঙ্গা ও পটোল কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকায়, ধুন্দল কেজি ৬০ টাকায়, পেঁপে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়, করলা ৮০ টাকায়, টমেটো ১৬০ টাকায়, লাউ প্রতিটি ৫০ থেকে ৬০ টাকায়, চালকুমড়া প্রতিটি ৪০ থেকে ৫০ টাকায়, ঢেঁড়স ৪০ থেকে ৫০, কাঁকরোল ৬০, শসা ৪০, বরবটি ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি কাঁচামরিচ ২০০-২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে আগের চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে রসুন। দেশী রসুন কেজি ২২০ টাকায় এবং আমদানি করা রসুন কেজি ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি ছোট দানার মসুর ডাল ১৪০ টাকায় এবং বড় দানার মসুর ডাল ১১৫ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।
মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এক কেজি ইলিশের দাম ১৪০০-১৬০০ ও এক কেজির নিচে ১২০০ টাকা। বাজারে প্রতি কেজি পাঙ্গাশ মাছ ২০০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তেলাপিয়া প্রতি কেজি ২০০ থেকে ২৩০ টাকা, রুই-কাতল প্রতি কেজি আকারভেদে ৩০০-৪০০, শিং প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ট্যাংরা প্রতি কেজি ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা, পাবদা প্রতি কেজি ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকা, চিংড়ি প্রতি কেজি ৭০০ টাকা, কই প্রতি কেজি ২৪০ থেকে ২৬০ টাকা ও বোয়াল প্রতি কেজি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com