বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপি ও ভারতের সম্পর্ক নিয়ে কিছু ভুল বোঝাবুঝি ছিল। আমি মনে করি- বরফ গলতে শুরু করেছে। আশা করি এই সম্পর্ক আরও ভালো হবে। এইবার তারা (ভারত) আমাদের অবস্থা বোঝার চেষ্টা করবে, বিশেষ করে ভারতকে এই দেশের মানুষের পালস বোঝার চেষ্টা করা উচিত। তাদের সব ডিম এক ঝুড়িতে রাখা উচিত নয়। তাদের উচিত (উভয় দেশের) জনগণের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে তোলা। গত বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ভারতীয় বার্তা সংস্থা এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন ফখরুল। এর আগে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মার সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি।
সাক্ষাৎকারে ফখরুল বলেন, বাংলাদেশে অন্তর্র্বতী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বরফ গলতে শুরু করেছে বলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) বিশ্বাস করে। প্রণয় ভার্মার সঙ্গে হওয়া এই বৈঠক উভয় দেশকে অনেক ইতিবাচক দিকে নিয়ে গেছে।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশে গত নির্বাচনের পর থেকেই আমাদের সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন ছিল। কিন্তু এবার আমাদের অফিসে (ভারতের) হাইকমিশনার আসায় অবশ্যই পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। বরফ গলতে শুরু করেছে।
২০২৪ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করেছিল বিএনপি। মির্জা ফখরুল বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সবসময়ই খুব ভালো সম্পর্ক রয়েছে এবং সম্পর্ক উন্নত হয়েছে। অবশ্যই এটি টার্নিং পয়েন্ট।
মির্জা ফখরুল বলেন, তার দল ভারতকে আশ্বস্ত করেছে, ক্ষমতায় এলে তারা বাংলাদেশের ভূখ- বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনকে ব্যবহার করতে দেবে না। আমরা দুই দেশের মধ্যে স্বাভাবিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করেছি। আমরা পানি ভাগাভাগি সমস্যা, সীমান্ত হত্যা, বিদ্যমান বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতার কথা উল্লেখ করেছি। একই সময়ে, ভারতের প্রধান ইস্যু ছিল নিরাপত্তা সমস্যা। আমরা আশ্বস্ত করেছি, আমরা ক্ষমতায় থাকলে, আমরা নিশ্চিত করব- এই ভূখ-টি বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ব্যবহার করবে না।
শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানোর বিষয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, আমি এখনও জানি না যে, সরকার তাকে (শেখ হাসিনা) বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর জন্য ভারতকে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ করেছে কিনা। তবে আমি মনে করি, তার বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগের মুখোমুখি হওয়ার জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ফিরে আসা উচিত এবং তার জবাবদিহি করা উচিত। সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায় গুরুতর সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে- এমন ভুল বর্ণনা নিয়ে আমরা খুব উদ্বিগ্ন। আমি মনে করি না, কোনও গুরুতর সমস্যা চলছে। প্রতিটি পরিবর্তনের পর কিছু সমস্যা থাকে যা পুরোটাই রাজনৈতিক, ধর্মীয় বা সাম্প্রদায়িক নয়। কিন্তু, আমরা আমাদের দেশের সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার জন্য খুবই সজাগ। বিশেষ করে, পূজার আগে আমরা ইতোমধ্যেই সারাদেশে আমাদের ইউনিটগুলোকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছি।