বাজারে ডিমের দাম অস্থিতিশীল। দুই-তিন সপ্তাহ ধরেই ডিম কিনতে কষ্ট হচ্ছে নি¤œবিত্ত ও নি¤œ মধ্যবিত্তদের। খুচরায় একটি ফার্মের মুরগির ডিমের দাম ১৪ টাকা, হালি বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকায়। তবে পাড়া-মহল্লার দোকানে একটি ডিম ১৫ টাকাও বিক্রি হতে দেখা গেছে। সে হিসাবে হালি ও ডজনের দাম দাঁড়ায় আরও বেশি। ডজন ১৭০ টাকাও উঠেছে। দাম নাগালে আসছে না বরং আরও অস্থিতিশীল হওয়ার কথা বলছেন খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতারা।
গতকাল শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ডিমের সঙ্গে সবজি ও মুরগির দাম আগের তুলনায় বেড়েছে। পেঁয়াজ-আলুর মতো অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমারও কোনো সুখবর নেই। বাজারে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম বেড়েছে। সপ্তাহ আগে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, যা এখন ১৯০ থেকে ২০০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। অর্থাৎ সপ্তাহ ব্যবধানে কেজিতে ২০ টাকা বেড়েছে। সোনালি মুরগির দামও ১০ টাকা বেড়ে ২৭০ থেকে ২৮০ টাকা হয়েছে। যা ২৬০ থেকে ২৭০ টাকা ছিল গেল সপ্তাহে।
অন্যদিকে বাজারে বেশ কয়েক মাস ধরে চড়া রয়েছে আলু ও পেঁয়াজের দাম। বর্তমানে প্রতি কেজি আলু ৬০ টাকা এবং দেশি পেঁয়াজ ১১০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে এক মাস আগে আলু ও পেঁয়াজের দাম কমাতে আমদানি পর্যায়ে শুল্ক কমিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। আলু আমদানিতে বিদ্যমান ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। এছাড়া আলু আমদানিতে থাকা ৩ শতাংশ এবং পেঁয়াজ আমদানিতে থাকা ৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে এর কোনো প্রভাব পড়েনি।
অন্যদিকে বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আগের সপ্তাহের তুলনায় বেশ কিছু সবজির দাম কেজিপ্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা করে বেড়েছে। বিক্রেতারা বলছেন, টানা কয়েকদিন বৃষ্টির কারণে সবজির সরবরাহ কমেছে। এর প্রভাবে দাম বেড়েছে।
পেঁপে ছাড়া বাজারে ৬০ টাকার নিচে কোনো সবজি পাওয়া যাচ্ছে না। তাও ৬০ থেকে ৭০ টাকায় শুধু পটোল মিলছে। ঢ্যাঁড়স, ধুন্দল, ঝিঙা, চিচিঙ্গা, কচুরমুখি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে। বরবটি, কাঁকরোল, করলা, বেগুন ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। এছাড়া বাজারে কাঁচামরিচের দাম বেশি। প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৮০ টাকা পর্যন্ত। এছাড়া বাজারে আগাম শীতকালীন সবজি শিম বিক্রি হতে দেখা গেছে ২২০ থেকে ২৮০ টাকা ও ছোট ছোট ফুলকপি ৬০ থেকে ৮০ টাকা পিস।
এছাড়া রুই, তেলাপিয়া, পাঙাশের মতো মাছ আগের দামেই বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি (চাষের) রুই ৩০০ থেকে ৩৬০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০ থেকে ২২০ টাকা ও পাঙাশ ১৮০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হয়। তবে ইলিশের দাম (এক কেজি আকারের) কেজিপ্রতি ১৫০ থেকে ২০০ টাকা বেড়ে এক হাজার ৬০০ থেকে এক হাজার ৭০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। বাজারে একজন ক্রেতা আয়নাল হোসেন বলেন, প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম না কমালে আমাদের মতো স্বল্প আয়ের মানুষদের স্বস্তি নেই। এখন সবকিছু যেন সাধ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে। ডিম-আলু-পেঁয়াজসহ অনেক অতিপ্রয়োজনীয় জিনিসই এখন বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে বেশ চড়া।