মোংলা পৌর বিএনপির সদস্য সচিব মাহবুবুর রহমান মানিকের বসত বাড়িতে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। প্রতিবেশী আওয়ামী লীগ সমর্থিত খন্দকার তারিক নামক এক প্রভাবশালী ব্যক্তির নেতৃত্বে দুর্বৃত্তরা হামলা চালিয়ে বসত ঘর ভাংচুরসহ ব্যাপক সন্ত্রাসী তান্ডব চালিয়ে প্রায় ১০ লাখ টাকার বিভিন্ন মালামাল লুটপাট করেছে। মোংলা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ তারিকুল ইসলামের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানকে কেন্দ্র করে এ হামলা ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এদিকে অভিযানকালে ভ্রাম্যমাণ আদালতের পরিচালনাকারী নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ তারিকুল ইসলামকে মোংলা থেকে প্রত্যাহার করে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে বদলী করা হয়েছে। ভূক্তভোগী, প্রতিবেশী ও বিভিন্নভাবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মোংলা পৌর বিএনপির সদস্য সচিব মাহবুবুর রহমান মানিক ও তার স্বজনরা মিলে মোংলা পৌরসভার ৭নম্বর ওয়ার্ডের কলেজ রোড় এলাকায় দীর্ঘ প্রায় ৪০বছর ধরে ২৫শতাংশ ভিপি সম্পত্তি বন্দোবস্ত নিয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করে আসছেন। কয়েক বছর আগে তাদের প্রতিবেশী আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রভাবশালী খন্দকার তারিক ও তার সহযোগীদের সাথে জমি নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়। সম্প্রতি খন্দকার তারিক মোংলা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দপ্তরে মাহবুবুর রহমান মানিক ও তার স্বজনদের বিরুদ্ধে জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে অভিযোগ দেয়। সে অভিযোগের এক পর্যায়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ তারিকুল ইসলাম বুধবার বিকেলে সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে অভিযান চালায়। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে সহকারী কমিশণার তারিকুল ইসলাম নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট হিসেবে মাহবুবুর রহমান মানিককে ২লাখ টাকা নগদ অর্থদন্ড করেন। এদিকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান শেষ হতেই খন্দকার তারিকের নেতৃত্বে একদল সশস্ত্র দুর্বৃত্ত লাঠিশোটা নিয়ে মাহবুবুর রহমানের বসত বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক তান্ডব চালায়। দুর্বৃত্তরা তারিকের নির্দেশে বাড়ির বসত ঘরে অনুপ্রবেশ করে পরিবারের বৃদ্ধ নারী ও শিশু সদস্যদের ভয়ভীতি দিয়ে অনেকটা জিম্মি করে আসবাবপত্র ও নগদ টাকাসহ প্রায় ১০লাখ টাকার মালামাল লুটপাট করাসহ ঘর ও মালামাল ভাংচুর করে। বিএনপি নেতা মাহবুবুর রহমান মানিক অভিযোগ করে বলেন, প্রতিবেশী খন্দকার তারিক একজন চিহ্নিত ভূমিদস্যু। সে নিজেই এলাকায় বিপুল পরিমান সরকারী সম্পত্তি জবর দখল করে রেখেছেন। অথচ নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট পক্ষপাতিত্ব করে প্রভাবিত হয়ে তাকে ২লাখ টাকা অর্থদন্ড করেছেন। তাৎক্ষণিক অর্থদন্ড পরিশোধ করলেও এ ব্যাপারে তিনি জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটের কাছে আপিল করবেন। মানিক আরো বলেন, নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট অভিযানের নামে তাদের সাথে চরম অশোভন আচরণ ও দূর্ব্যবহার করেন। তিনি সরকারী স্বার্থ না দেখে ব্যক্তি তারিকের স্বার্থে কাজ করেছেন। এ ব্যাপারে খন্দকার তারিকের মোবাইল নাম্বারে কয়েক দফায় ফোন দেয়া হলেও তা রিসিভ না হওয়ায় তার বক্তব্য জানা যায়নি। এদিকে বৃহস্পতিবার খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় থেকে এক আদেশে মোংলা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ তারিকুল ইসলামকে মোংলা থেকে প্রত্যাহার করে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলায় বদলী করা হয়েছে। এ ব্যাপারে মোংলা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ তারিকুল ইসলাম বলেন, এটি দাপ্তরিক বদলী, কোন ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাকে বদলী করা হয়নি। তিনি আরো বলেন, অভিযোগের পর প্রক্রিয়া অনুসরণ করে সরেজমিনে অভিযানে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় বিধি অনুযায়ী অর্থদন্ড করা হয়েছে। তাকে কোন পক্ষ প্রভাবিত করেনি। কোন ধরনের হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের সাথে তিনি জড়িত নন। এ ছাড়া অভিযানের সময়ও কারো সাথে কোন অশোভন আচরণ বা দূর্ব্যবহার করা হয়নি।