ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার সরিষা ইউনিয়নের গুইলাকান্দা গ্রামের ৬ ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র রাব্বিকে নির্মম ভাবে হত্যাকারী ও তার সাথে যারা জড়িত তাদের সকলের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে শিক্ষক,শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দ। রোববার সকাল ১১ টায় মহেশপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে ঈশ্বরগঞ্জ-আঠারবাড়ি সড়কে ওই মানববন্ধন করা হয়। মানববন্ধনে রাব্বি হত্যাকারীর সর্ব্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির দাবি করেন। তবে এঘটনায় রাব্বি হত্যাকারী মাজহারুলকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ। উল্লেখ্য-উপজেলার সরিষা ইউনিয়নের গুইলাকান্দা গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে রাব্বি মিয়া(১৩) গত বৃহস্পতিবার নিখোঁজ হয়। শুক্রবার দুপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ত্রিশাল উপজেলার সাইনবোর্ড এলাকার বানার নদের সেতুর নিচ থেকে রাব্বির লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত রাব্বি(১৩) স্থানীয় মহেশপুর উচ্চবিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ছিলো।বৃহস্পতিবার অটোরিকশা চালক বাবা দুপুরের পর বাড়িতে খাবার খেতে এলে রাব্বি অটোরিকশা নিয়ে বের হয়। কিন্তু সে রাতে আর ফেরেনি। রাতভর না পেয়ে রাব্বির বাবা শুক্রবার সকালে ঈশ্বরগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। দুপুরের দিকে খবর পান রাব্বির লাশ ত্রিশাল উপজেলার সাইনবোর্ড এলাকার বানার নদের সেতুর নিচ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় লোকজন থানায় খবর দিলে ত্রিশাল থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে রাব্বির লাশ উদ্ধার করে। পরিবার জানায়, বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে প্রতিবেশী মাজহারুল ইসলাম তাঁর শ্বশুরবাড়িতে যেতে রাব্বি মিয়ার ইজিবাইকে উঠে। ওই সময় মাজহারুলের সঙ্গে তার স্ত্রীও ছিলেন। তারপর থেকে আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না রাব্বির। গভীর রাতেও বাড়িতে না ফেরায় তার পরিবারের লোকজন খোঁজাখুজি শুরু করেন। মাজহারুলের পরিবারের কাছ থেকে জানতে পারেন, মাজহারুল তাঁর স্ত্রীকে শশুরবাড়ি পৌঁছে দিয়ে একই অটোরিকশায় ফিরে এসেছে। তখন থেকে মাজহারুলেরও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। এদিকে বৃহস্পতিবার রাত দুইটার দিকে ত্রিশালের আমিরাবাড়ি ইউনিয়নের সাইনবোর্ড এলাকায় একটি অটোরিকশায় চার্জ শেষ হয়ে যায়। ওই সময় ব্যাটারি খোলার চেষ্টা করলে স্থানীয় লোকজন চোর সন্দেহে মাজহারুলকে আটক করে। পরে পুলিশ তাঁকে হেফাজতে নেয়। পুলিশকে মাজহারুল জানায়, তিনি অটোরিকশাটি চুরি করে এনেছেন। ত্রিশাল থানার উপপরিদর্শক আসাদুজ্জামান বলেন, শুক্রবার সকালে চোর সন্দেহে আটক মাজহারুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তার বাড়ি ঈশ্বরগঞ্জ বলে জানায়। পরে সেই ঠিকানা যাচাই করতে গিয়ে বেরিয়ে আসে রাব্বির নিখোঁজের ঘটনা। পরবর্তীতে রাব্বিকে হত্যার কথা স্বীকার করে মাজহারুল। সুরতহালে নিহত রাব্বির মাথার পেছন দিকে ভারী বস্তু দিয়ে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় রাব্বির বাবা বাদী হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ময়নাতদন্তের জন্য শুক্রবার বিকেলে লাশ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে। আটক মাজহারুল কে শনিবার দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হবে। এদিকে গত শনিবার ময়নাতদন্ত শেষে রাত সাড়ে আটটায় জানাযার পর পারিবারিক কবরস্থানে রাব্বিকে দাফন করা হয়েছে। ঈশ্বরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ওবায়দুর রহমান বলেন, ঘটনাটি নিয়ে গত শুক্রবার একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। দুপুরের দিকে ত্রিশাল থেকে রাব্বির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।