কুড়িগ্রামের উলিপুরে কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পানির ঢলে ধরলা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় দেখা দিয়েছে ব্যাপক ভাঙ্গন। উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নে কমপক্ষে ১শ ৫৫টি পরিবারের ঘর-বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে নদী গর্ভে বিলিন হয়েছে প্রান্তিক মানুষের চিকিৎসার একমাত্র আশ্রয়স্থল খুটিরকুটি কমিউনিটি ক্লিনিক। এছাড়া ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে বেগমগঞ্জ বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র ও খুদির কুটি আব্দুল হামিদ উচ্চ বিদ্যালয়ের দ্বিতল ভবন। বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের সদস্য শফিকুল ইসলাম ও ৭নং ওয়ার্ডের সদস্য জালাল মন্ডল জানান, গত তিন দিনের টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পানির ঢলে ধরলার নদী তীরে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনে মন্ডলপাড়া এলাকার প্রায় ৫০টি, আল আমিন বাজার এলাকায় ৩০টি ও আব্দুল হামিদ উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন ব্যাপারী পাড়া রসুলপুর এলাকার ৫০টি পরিবারের বসতভিটাসহ প্রায় ৫০ একর ফসলি জমি, অসংখ্য গাছপালা নদীগর্ভে বিলিন হয়েছে। এছাড়া পাশ্ববর্তী দুধকুমার নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় একই ইউনিয়নের মোল্লারহাট এলাকার দুলাল ব্যপারীর গ্রামের প্রায় ২৫টি পরিবারের বসতভিটা নদীতে বিলিন হয়ে গেছে। এদিকে সোমবার সকালে ধরলার ভাঙনে নদীগর্ভে চলে গেছে খুটিরকুটি কমিউনিটি ক্লিনিকটি। নদীর ভাঙনে ঝুঁকিতে রয়েছে বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র ও খুদিরকুটি আব্দুল হামিদ উচ্চ বিদ্যালয়। ভাঙনের তীব্রতায় ঝুঁকিতে থাকা শত শত পরিবারের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। অনেকে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য বসতভিটা থেকে ঘর ভেঙে অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তিন দিন ধরে ভাঙ্গন অব্যাহত থাকলেও প্রশাসন বা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন কর্মকর্তা খোঁজ নিতে আসেননি। এছাড়া উপজেলার তিস্তা নদী বেষ্টিত দলদলিয়া, থেতরাই, গুনাইগাছ ও বজরা ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে তলিয়ে গেছে বাড়িঘর, ফসলি জমি। উপজেলা ত্রান ও পূনবাসন কর্মকর্তা সিরাজুদৌল্লা জানান, ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার গুলোর মাঝে ত্রান সামগ্রি বিতরনের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। ক্ষয়ক্ষতির প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডে নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, নদী ভাঙ্গনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ভাঙ্গন রোধের জন্য জিও ব্যাগ পাঠানো হয়েছে। অতি দ্রুতই জিও ব্যাগ ফেলার ব্যবস্থা করা হবে। ব্যাগ ফেলানোর সময় অফিসের লোক সেখানে উপস্থিত থাকবে বলে তিনি জানান।