ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে থানাপাড়া কলেজ পড়া পূজা মন্ডপের দুর্গোৎসব ম্লান হয়ে যাবে সামনের বেহাল রাস্তার কারণে। উপজেলায় এবছর ১০১ টি পূজা মন্ডপে দুর্গোৎসব পালিত হবে। কয়েকদিন পরেই হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে।সে লক্ষ্যে ইউনিয়ন এবং পৌরসভার পূজা মন্ডপ গুলোতে শেষ সময়ের কাজ চলছে বেশ জোরেশরে। কিন্তু শহরের থানাপাড়া কলেজপাড়া পূজা মন্ডপের সামনে দিয়ে নিমতলা বাসস্ট্যান্ডের দিকে প্রায় ৪ শত মিটার রাস্তার বেহাল দশার কারণে শঙ্কিত মন্দিরটির পূজা উদযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ সনাতন ধর্মাবলম্বী জনগণ। রাস্তাটিতে সৃষ্ট খানা খন্দ ও গর্তের কারণে যাতায়াতের পরিবেশ এতটাই খারাপ হয়েছে যে সাধারণ জনগণের হেঁটে চলাচল করা অসাধ্য হয়ে পড়েছে। এই রাস্তাটির মাথায় অর্থাৎ মুরগিহাট, কবুতরহাট,কাচাবাজার, কাপুড়িয়া বাজারের মাঝ বরাবর থানাপাড়া কলেজপাড়া পূজা মন্ডপ। এই পূজা মন্ডপকে ঘিরে সামনের রাস্তার দুধার দিয়ে এবং পাশের কাপুড়িয়া পট্টির গলিতে অস্থায়ী মেলা বসে। রাস্তার বেহাল দশার কারণে পূর্বে যারা পূজার দিন গুলোতে মেলায় অস্থায়ী দোকান বসিয়ে কিছুটা বাড়তি আয় রোজগার করতেন তারাও এ বছর দোকানের পরসা সাজিয়ে বসতে পারবেন কিনা এ নিয়ে উদ্বিগ্ন। রাস্তার এই বেহাল দশার কারণে এবার পূজা মন্ডপে আগত দর্শনার্থীদের সুষ্ঠুভাবে প্রতিমা দর্শন নিয়ে শংকার সৃষ্টি হয়েছে। এই মন্ডপের কাছাকাছি সার্বজনীন কালীবাড়ি পূজা মন্ডপ, থানাপাড়া পূজা মন্ডপ, কলেজ রোডের কলেজপাড়া পূজামন্ডপ, নলডাঙ্গা রোডের বঙ্গপলি পূজামন্ডপে অন্যান্য বারের ন্যায় মহা ধুমধামে এবারও শারদীয় দুর্গা উৎসব পালিত হবে। প্রতিটি মন্ডপে আসা নারী-পুরুষের চলাচলের ক্ষেত্রে প্রধান অন্তরায় হলো মুরগিহাট থেকে নিমতলা বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত ৪ শত মিটার এই রাস্তা।শহরের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তাটি নির্মাণের কিছুদিন পর থেকেই খানা গর্ত সৃষ্টি হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। গত বছর দুর্গোৎসব সামনে রেখে রাস্তাটি সংস্কার করা হলেও এবছর সংস্কারের কথা মাথায় নেই পৌর কর্তৃপক্ষের। এখনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি রাস্তাটি সংস্কারের। পূজা শুরুর পূর্বে বেহাল দশার এই রাস্তাটি তাই সংস্কারের দাবি তুলেছে হিন্দু ধর্মাবলম্বী সাধারণ জনগণসহ সকলে। বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ কালীগঞ্জ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল কুমার অধিকারী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাটির বেহাল দশায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষের।বর্তমানে অবস্থা এতটাই খারাপ যে রাস্তাটিতে স্বাভাবিক চলাচলও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। দুর্গোৎসবের সময় সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমীতে গ্রামগঞ্জ থেকে আসা ভক্ত পূর্ণার্থীদের ব্যাপক সমাগম ঘটে। তারা মন্ডপে মন্ডপে প্রতিমা দর্শনে আসেন। দুর্গোৎসবটি যাতে উৎসব মুখর হয় সেদিকে লক্ষ রেখে পৌর প্রশাসকের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি ব্যবহার অনুপযোগী এই রাস্তাটি দ্রুত সংস্কারে। কলেজপাড়া ও থানাপাড়া পূজা মন্ডপের সভাপতি নয়ন দেবনাথ বলেন,শহরের নিমতলা থেকে থানার সামনে দিয়ে মুরগীহাটা মোড় পর্যন্ত ৪ শত মিটার সড়ক ভেঙ্গেচুরে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। যার প্রভাব আমাদের দুর্গোৎসবে পড়বে। বেহাল রাস্তাটির কারণে মন্ডপে পূজা অর্চনার জন্য আগত ভক্তবৃন্দকে পড়তে হয় বিপাকে। তাই আমি অতি সত্তর দুর্গোৎসব শুরুর পূর্বেই রাস্তাটি সংস্কারের দাবি জানাচ্ছি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট। কালীগঞ্জ পৌরসভার পৌর প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেদারুল ইসলাম বলেন,আমি পূজা মন্ডপগুলো পরিদর্শন করব। থানা রোডের পূজা মন্ডপের সড়কও দেখবো। দুর্গোৎসব যাতে নির্বিঘ্নে আনন্দঘন পরিবেশে হয় সে জন্য বেহাল রাস্তাটি সংস্কারের উদ্যোগ অতিসত্তর নেওয়া হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।