কম দামে গরু কিনে বেশি দামে মাংস বিক্রি করছেন সিরাজগঞ্জের তাড়াশের মাংস ব্যবসায়ীরা। বাজার মনিটরিং না থাকায় অতিরিক্ত টাকা গুণতে হচ্ছে মাংস ক্রেতাদের। এদিকে গরু হাটে তুলে বাড়িতে ফেরৎ নিয়ে আসছেন অধিকাংশ গৃহস্থ। তারা এত কম বাজার মূল্যে গরু বিক্রি করতে পারছেন না। গত বৃহস্পতিবার প্রসিদ্ধ নওগাঁ হাট ঘুরে জানা যায়, যে দামে গরু কেনাবেচা হচ্ছে, দুই হাজার তিনশ টাকা পড়ছে প্রতিমণ মাংসের দাম। কেজি হিসেবে পাঁচশ পঁচাত্তুর টাকা প্রতিকেজি। চাটমোহর উপজেলার চাটমোহর নতুন বাজার এলাকার কুমার পাড়ার বাসিন্দা মাহাবুর রহমান নামে একজন গরুর ব্যাপারী বলেন, আমি নওগাঁ হাট থেকে গরু কিনে অন্যান্য গরুর হাটে বিক্রি করি। বৃহস্পতিবার হাটে যে দামে গরু কিনেছি, মাংসের দাম ছয়শর মধ্যে থাকবে। চাটমোহর নুরনগড় ঘাট এলাকার বাসিন্দা গরুর মাংসের ব্যবসায়ী আজমত আলী বলেন, বাহাত্তর হাজার টাকা দিয়ে গরু কিনলাম। এক বিয়ের অনুষ্ঠানে পঁচিশ হাজার টাকা মণ হিসেবে দেওয়ার বায়না নিয়েছি। মূলত আমার কেনা পড়েছে সারে বাইশ থেকে তেইশ হাজার টাকা মণ। সরেজমিনে শুক্রবার সকালে দেখা গেছে, তাড়াশ পৌর শহরের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনের সড়কের পাশে দুইটি স্থানে গরুর মাংস বিক্রি করা হচ্ছে। পশ্চিম ওয়াপদা বাঁধের বটতলা মোড়ে ও বিনসাড়া বাজারেও মাংস বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। কোনো মাংসের দোকানে মূল্য তালিকা টাঙানো নেই। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকার মোক্তার হোসেন নামে একজন মাংসের ব্যবসায়ী বলেন, আপনি কিনলে ছয়শ পঁঞ্চাশ করে রাখবো প্রতিকেজি। অন্যদের কাছে সাতশ বিক্রি করছি। মফিজ নামে আরেকজন ব্যবসায়ী বলেন, আমরা সাতশ টাকার কমে মাংস বিক্রি করিনা। বারুহাস ইউনিয়নের বিনসাড়া গ্রামের আব্দুল আলিম, সায়বার, মিঠু ও পেঙ্গুয়ারি গ্রামের আরিফুল ইসলাম বলেন, আমরা চারজন একত্রে ব্যবসা করি। এক কেজি গরুর মাংস বিক্রি করছি ছয়শ আশি টাকা করে। বারুহাস গ্রামের রোমান হোসেন বলেন, গরুর দাম কমে গেছে। কিন্তু মাংস কিনতে হয় সাতশ টাকা কেজি। তাড়াশ পৌর এলাকার আসানবাড়ী গ্রামের নাছিমা খাতুন নামে একজন গৃহিনী বলেন, পঁচাশি হাজার টাকা দিয়ে একটি ষাড় গরু কিনেছিলাম। ছয় মাস লালন পালন করতে পঁয়তাল্লিশ হাজার টাকা খরচ হয়ে যায়। গরুটি বিক্রি করতে হলো এক লাখ ছয় হাজার টাকায়। অপরদিকে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, আমার বাড়ি বগুড়া শহরে। শুক্রবার সকালে স্বপ্ন থেকে মাংস নিলাম ছয়শ ত্রিশ করে। খোকন পার্কের সামনে বিক্রি হয় প্রতিকেজি ছয়শ টাকায়। সরকার গরুর মাংসের মূল্য নির্ধারণ করেন নি। সুযোগ পেয়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন মাংস ক্রেতাদের। এ প্রসঙ্গে উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পৌর প্রশাসক খালিদ হাসান বলেন, প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আমিনুল ইসলামের সাথে কথা বলে দেখি কী করা যায়।