গত দিনের পর
চ. ষাটের দশক : ইসলামী ব্যাংকের বাস্তব পরীক্ষার যুগ
১. কলেজ অব ইসলামিক রিসার্চ প্রতিষ্ঠা : ষাটের দশকের শুরুতে ১৯৬১ সালে মিসরে ইসলামী গবেষণার সর্বোচ্চ কেন্দ্ররূপে ‘কলেজ অব ইসলামিক রিসার্চ’ কায়েম করা হয়। ১৯৬৪ সালের ৭ মার্চ এই কলেজের উদ্যোগে প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে ৪০টির বেশি দেশের শতাধিক অর্থনীতিবিদ ও চিন্তাবিদ অংশগ্রহণ করেন। তারা সুদভিত্তিক প্রচলিত ব্যাংকব্যবস্থার বিকল্প হিসেবে ইসলামী ব্যাংকিং পদ্ধতি গড়ে তোলার উপায় নিয়ে আলোচনা করেন। সম্মেলনে সর্বসম্মত অভিমত ঘোষণা করা হয় যে, ভোগ বা উৎপাদন যেকোনো উদ্দেশ্যে ঋণের ওপর ধার্যকৃত বাড়তি অর্থ, পরিমাণে যা-ই হোক না কেন, তা রিবার পর্যায়ভুক্ত। সম্মেলনে ইসলামী ব্যাংকিং কার্যক্রমের কিছু ইসলামী পদ্ধতিও অনুমোদন করা হয়।
২. পিলগ্রিমস সেভিংস করপোরেশন প্রতিষ্ঠা : ষাটের দশকের শুরুতে ১৯৬২ সালে মালয়েশিয়ায় প্রতিষ্ঠিত হয় শরিয়াহভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘পিলগ্রিমস সেভিংস করপোরেশন’। কিস্তিতে টাকা জমা করে হজ করার সুবিধা দিতে এই প্রতিষ্ঠানের সৃষ্টি হয়। ৩. মিতগামথ লোকাল সেভিংস ব্যাংক প্রতিষ্ঠা : ১৯৬৩ সালে মিসরের কায়রো থেকে এক শ’ মাইল দূরে ‘মিটাগামার’ নামক এক গ্রামে আধুনিক বিশে^র প্রথম ইসলামী ব্যাংক প্রতিষ্ঠা লাভ করে। আধুনিক বিশে^র অন্যতম ইসলামী অর্থনীতিবিদ ড. আহমদ আবদুল আজিজ আন-নাজ্জার ‘মিতগামথ লোকাল সেভিংস ব্যাংক’ নামক শরিয়াহভিত্তিক এই ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠা করেন। মিসরের নীল নদের ব-দ্বীপে অবস্থিত এই ইসলামী ব্যাংকটি আমানত হিসাব, ঋণ হিসাব, ইক্যুইটি গ্রহণ, সরকারি বিনিয়োগ ও সামাজিক সেবা প্রদানের মাধ্যমে এর কার্যক্রম শুরু করে। খুব দ্রুত ব্যাংকটি ব্যাপক সাফল্য লাভ করে। ব্যাংকটির সাফল্য এবং সুখ্যাতি ব্যাপকভাবে দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে ১৯৬৩ থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত মিসরে মোট ৯টি ইসলামী ব্যাংক প্রতিষ্ঠা লাভ করে। কিন্তু মিসর সরকারসহ ইসলামবিরোধী লবি ইসলামী ব্যাংকের সফলতায় ঈর্ষান্বিত হয়ে উঠলে সরকারের ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে মিসরে ইসলামী ব্যাংকের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়। (চলবে)