দীর্ঘদিন পর শেরপুর সদরের পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের খনন কাজ চলছে। খননের সময় নদ থেকে উত্তোলিত বালু রাখা হচ্ছে নদের পাশে পরিত্যক্ত সরকারি খাস জায়গায়। পরবর্তীতে বালুর পরিমান বেশী হওয়ায় স্থানীয় সাতপাকিয়ায় ব্যাক্তিমালিকানার কয়েকজন কৃষকের জমিতেও রাখা হয়। কিন্তু এই বালু রাখাকে কেন্দ্র করে জেলা জুড়ে চলছে নানা গুঞ্জন। অনেকে আবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেমে দিচ্ছে পোস্ট। বিপাকে পড়েছে প্রশাসনও। নানা আলোচনার মধ্যে প্রশ্ন ওঠেছে শেরপুর ব্রহ্মপুত্র সেতুর পাশে ব্যক্তি মালিকানাধীন জমিতে জমা করা বালুগুলো তাহলে কার? সবশেষে এই প্রশ্নের জট খুলেছে খোদ বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ বিআইডাব্লিওটিএ। ইতোমধ্যে খননের বালু তাদের মালিকানাধীন এই মর্মে একটা সাইনবোর্ড ঝুঁলিয়েছেন তারা। সরজমিনে এবিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রায় পৌনে আটাশ শত কোটি টাকা ব্যয়ে বিআইডাব্লিওটিএ ব্রহ্মপুত্র নদীর খনন কাজ চলমান রয়েছে। পার্শ্ববর্তী জামালপুর জেলার পাশাপাশি নদের শেরপুর অংশেও খনন কাজ অব্যহত রেখেছে প্রতিষ্ঠানটি। আর নদী থেকে উত্তোলিত বালুগুলো নদীর পারে ব্যক্তিমালিকানা জমির পাশাপাশি খাস জমিতে রাখা হচ্ছে। তবে নিয়মানুযায়ী উত্তোলিত বালুগুলোর প্রকৃত মালিক বিআইডাব্লিওটিএ এবং বালুগুলোর নিলাম কর্তৃপক্ষ শেরপুর জেলা প্রশাসক। সূত্র জানায়, নদী থেকে উত্তোলিত এসব বালু জেলার সরকারি, আধাসরকারী, বেসরকারি ও দাতব্য প্রতিষ্ঠান, হাট বাজার, স্কুল, মাদ্রাসা এবং মসজিদে মাটি ভরাটের কাজে জনস্বার্থে ব্যাবহার করতে পারবেন। আবার নিলাম করেও বিক্রি করতে পারেন। এব্যাপারে সাতপাকিয়ার জমি মালিক ইয়ানুস মিয়া বলেন, আমাদের জমিতে ড্রেইজিং এর বালু রাখছে বিআইডব্লিউটিএ। শুনছি এই বালু ডিসি অফিস থেকে নিলাম করা হবে। আমাদের নিচু জমি বালি দিয়ে উঁচু হয়েছে এটাই আমাদের লাভ। পরে দোকানপাট তৈরি করে ব্যবসা করতে পারবো। তবে যুবদলের এক শীর্ঘ নেতার নামে কেউ কেউ মিথ্যা অসত্য তথ্য ছড়াচ্ছে তা সঠিক নয়। একই গ্রামের আরেকজন খোকা মিয়া জানান, আমাদের অব্যবহৃত ব্যাক্তিমালিকানা জমিতে সরকারীভাবে বালু রাখছে। তাই আমরা কেউ বাঁধা প্রদান করিনি। তবে জেলা যুবদল নেতার বিরুদ্ধে অনেকে সমালোচনা করছে যা ভিত্তিহীন। স্থানীয় হাসান মিয়া ও শাহীন মিয়া বলেন, জমি আমাদের বালু সরকারের। আমাদের জমি অনেক নিচু ও গর্ত ছিলো। ড্রেইজিংয়ের বালুতে আমাদের জমির গর্ত ভরাট হয়েছে। এই সহজ বিষয়টিকে নিয়ে রাজনীতি করা দুঃখজনক। এবিষয়ে বিআইডাব্লিওটিএ জামালপুরের অস্থায়ী অফিসের সহকারী প্রকৌশলী মো. সাব্বিরের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, নদী থেকে বালু উত্তোলন করে আমরা নদীর পাড়ে খাস জমিতে রাখি। পরবর্তীতে স্থান সংকুলান না হওয়ায় নদী তীরবর্তী জমি মালিকদের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে বালু রেখেছি। আমরা বালু উত্তোলন করলেও, এই বালুর মালিক জেলা প্রশাসক। আমরা পরিমাপ করে জেলা প্রশাসক অফিসকে জানিয়েও দিয়েছি। জেলা প্রশাসক নিলাম আহ্বান করলে সংশ্লিষ্ট জামির মালিকরা অগ্রাধিকার পাবেন। এব্যাপারে শেরপুরের জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, বালু উত্তোলনের পর নিলামের মাধ্যমে বিক্রির ব্যপারে বিএডব্লিউটিএ কে বিক্রির ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে হবে। বালু আমাদের নিয়ন্ত্রণে থাকলে সেখানে আমাদের সাইনবোর্ড লাগানো থাকতো। কিন্তু নদী তীরবর্তী স্থানে সাইনবোর্ড ঝুলানো বিএডব্লিউটিএর। এছাড়া এখনো এবিষয়ে বিআইডাব্লিওটিএ থেকে কোন তথ্য আমার দপ্তরে এসেছে কিনা তা সেটি খোঁজ নিতে হবে।