শীতকালীন সবজি বাঁধাকপির এবার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে দিনাজপুরের বিরামপুরে। আগর প্রতিটি বাঁধাকপি ২৯ থেকে ৩০ দরে বাজারে বিক্রি করছে কৃষকরা। ভাল দাম পাওয়ায় আরও বেশি বাঁধাকপির চাষ শুরু করেছে চাষীরা। বিঘাপ্রতি ১৫ হাজার টাকা ব্যয় করে, তা থেকে আয় আসবে প্রায় ১ লাখ টাকা। লাগানোর তিন মাসের মধ্যে ফসল কেটে বাজার জাত করতে পারে বাঁধাকপি চাষীরা। কার্তিক মাসের শুরু থেকে মাঠে রোপন করা হয়েছে বাঁধাকপির চারাবীজ। তিন মাসের মধ্যে তা তুলতে পারবে কৃষকরা। বাঁধাকপি চাষে প্রথমে গোবর, পটাস-৩০ কেজি,ফসফেট-৩০কেজি, ইউরিয়া সার-২০, জিব-১ বস্তা, বরন-১ কেজি, সালফার-২ কেজি,ম্যাগনেসিয়াম ৩ কেজি ও ১ কেজি হাইগোল্ড দিয়ে জমি তৈরি করে কৃষকরা। জমি তৈরির পর বীজের দু’পাশ বেঁধে দেয় তারা। চারাবীজ বোপনের কয়েক দিন পর, যখন বাঁধাকপির চারাগুলো একটু বড় হতে থাকে, তখন আবারও কৃষকরা ইউরিয়া-১৫ কেজি ও ফসফেট ২০ কেজি ছিটিয়ে দিয়ে থাকে তারা। এক সপ্তাহ পর পর জমিতে পানি সেচ দিতে হয়। গাছ বড় বা পাতা ছড়াতে শুরু করলে কীটনাশক মাস্টারপ্লাস তরল-৫০০ মিলি পানিতে মিশিয়ে ক্ষেতে স্প্রে করে। আবার যদি ক্ষেতে পচন ধরে তাহলে টাইকোজিপ-১ কেজি স্প্রে করেন। মাঝে-মধ্যে লুটাফস-৩০০ গ্রাম এবং ব্যাগজিম-৫০০ মিলি ভিটামিন স্প্রে করতে হয়। বিরামপুর উপজেলার দয়েরপাড় গ্রামের মাহাবুব রহমান বলেন, আল্লাহ দিলে এই বাঁধাকপির ভাল ফলন হয়েছে এবং বেশি দাম পাবো। এইবার আমি ২ বিঘা জমিতে বাঁধাকপির চাষ করেছি। ভাল ফলন হয়েছে, বিঘাপ্রতি আমার ১৫ হাজার কাটা খরচ হয়েছে। এই আবাদের উপর আমি নির্ভরশীল, সারা বছর কোন না কোন সবজি চাষ করে থাকি। সারাদিন ফসলের পিছোনে পড়ে থাকি আমি। আমার প্রতিটি বাঁধাকপির গাছে ফল ভাল হয়েছে, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বাঁধাকপি তুলে বাজার জাত করবো। এবছর কপির দাম বাজারে ভাল আছে। সংসারে বাবা-মা ও দুই ছেলে এক মেয়েসহ আমরা ৭ জন পরিবারের সদস্য। আবাদের উপর চলে আমার সংসার, আশা করছি একবিঘা জমির বাঁধাকপি প্রায় ১ লাখ টাকা বিক্রি করবো। ঐগ্রামের আরও একজন বাঁধাকপি চাষী আজগর আলী বলেন, দেড় বিঘা জমিতে এইবার আমি বাঁধাকপির আবাদ করেছি। সপ্তাহ আগে থেকে আমি বাঁধাকপি বাজার জাত করছি। প্রতিটি কপি ৩৩ থেকে ৩৫ টাকা দরে বাজারে বিক্রি করেছি। অন্যন্যা বছরের চেয়ে এবছর ভাল দাম পাইছি। বিরামপুর উপজেলা কৃষি অফিসার শ্রী নিক্সোন চন্দ্র পাল জানান, চলতি মৌসুমে এই উপজেলায় ৩০০ হেক্টর জমিতে বাঁধাকপির চাষ করবে কৃষকরা। বর্তমান ১৫০ হেক্টর জমিতে বাঁধাকপির চাষ হয়েছে, বাঁকিটা চলোমান রয়েছে। অন্য বছরের চেয়ে এবছর বাঁধাকপির ভাল ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।