বাইডেনের শপথকে ঘিরে সহিংসতার আশঙ্কা, ৫০ অঙ্গরাজ্যেই সতর্কতাবাইডেনের শপথকে ঘিরে সহিংসতার আশঙ্কা, ৫০ অঙ্গরাজ্যেই সতর্কতা নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের শপথ সামনে রেখে সহিংস বিক্ষোভের আশঙ্কায় রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ধারণা করা হচ্ছে, বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকরা সশস্ত্র তা-ব চালাতে পারে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, সম্ভাব্য পরিস্থিতি মোকাবিলায় ৫০টি রাজ্যের সবগুলো ও ডিস্ট্রিক্ট অব কলম্বিয়ায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
গত ৬ জানুয়ারি বাইডেনের বিজয় অনুমোদনের দিনে ট্রাম্প সমর্থকদের ক্যাপিটল ভবনে হামলার মতো প্রাণঘাতী ঘটনার পুনারাবৃত্তি রোধে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ওই দিন ক্যাপিটল ভবনে ট্রাম্পের কয়েকশ সমর্থকের হামলায় হতবিহ্বল হয়ে পড়েন যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতারা। কয়েক ঘণ্টার জন্য অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে ক্যাপিটল ভবন। পরে লাঠিপেটা ও কাঁদুনে গ্যাস ব্যবহার করে পুলিশ ভবন থেকে বিক্ষোভকারীদের সরালে পুনরায় অধিবেশন শুরু হয়।
আগামী বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের শপথ অনুষ্ঠানের আগেও ট্রাম্প সমর্থকরা দেশজুড়ে সশস্ত্র প্রতিবাদ করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বাইডেনের অভিষেক সামনে রেখে ট্রাম্প সমর্থকরা যুক্তরাষ্ট্রের সব রাজ্যের রাজধানীতে সশস্ত্র মিছিল নিয়ে নামতে পারে বলে সতর্ক করেছে ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-এফবি আই। এমন পরিস্থিতিতে বাইডেনের অভিষেক অনুষ্ঠান সামনে রেখে সারা দেশ থেকে ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যদের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে পাঠানো হচ্ছে। ওয়াশিংটন ডিসির ন্যাশনাল মল বন্ধ রাখা হয়েছে। রাজধানীর সড়কগুলোতে ব্যারিকেড বসিয়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
ইতোমধ্যেই অনলাইনে ট্রাম্পপন্থী ও কট্টর ডানপন্থী নেটওয়ার্কগুলোর করা পোস্টে ১৭ জানুয়ারি সশস্ত্র বিক্ষোভ এবং অভিষেকের দিন ২০ জানুয়ারি ওয়াশিংটন ডিসি অভিমুখে যাত্রার ডাক দেওয়া হয়েছে। এদিকে ওই সব কর্মসূচির ডাক পুলিশের ফাঁদ হতে পারে এবং কঠোর নিরাপত্তার বিষয়টি উল্লেখ করে কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠী অনুসারীদের এগুলোতে অংশ নেওয়া থেকে বিরত থাকতে বলেছে। তবে ওই পোস্টকে গুরুত্ব দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের রাজ্যগুলোতে পূর্ব সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নির্বাচনের সময় যে সব রাজ্যে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান শিবিরে বৈরিতা দেখা গেছে সেগুলোতে সহিংসতার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। মিশিগান কর্তৃপক্ষ এরইমধ্যে রাজ্য ক্যাপিটল ঘিরে ছয় ফুট নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করেছে। রাজ্যের পুলিশের পরিচালক জো গ্যাস্পার শুক্রবার বলেছেন, অন্তত ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি নাগাদ এই ভবন ঘিরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন থাকবে।
নিউ মেক্সিকো ও উটাহ রাজ্যের গভর্নররা জরুরি অবস্থা জারি করেছেন। ক্যালিফোর্নিয়া, পেনসিলভেইনিয়া, মিশিগান, ভার্জিনিয়া, ওয়াশিংটন ও উইসকনসিনসহ অনেক রাজ্যে পরিস্থিতি মোকাবেলায় ন্যাশনাল গার্ড সদস্যদের মোতায়েন করছে। টেক্সাস শনিবার থেকে বাইডেনের অভিষেক পর পর্যন্ত রাজ্য ক্যাপিটল বন্ধ রাখছে। টেক্সাসের জননিরাপত্তা বিভাগের পরিচালক বলেছেন, বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ‘সহিংস উগ্রপন্থিরা’ ঢুকে যেতে পারে বলে গোয়েন্দারা মনে করছেন। ভার্জিনিয়ার গভর্নর রালফ নরথাম বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, “মনে খারাপ উদ্দেশ্য নিয়ে আপনি যদি এখানে আসার বা ওয়াশিংটনে যাওয়ার চিন্তা করেন তাহলে এখনই তা বাদ দিয়ে ঘরে ফেরেন। আপনাকে এখানে স্বাগত জানানো হবে না এবং আপনাকে আমাদের দেশের রাজধানীতেও স্বাগত জানানো হবে না।”বাইডেনের টিম য্ক্তুরাষ্ট্রবাসীকে কোভিড-১৯ মহামারীর মধ্যে রাজধানীতে না আসার আহ্বান জানিয়েছে। ওয়াশিংটন ডিসির মেয়রসহ স্থানীয় কর্মকর্তারা জনগণকে নতুন প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠান দূর থেকে দেখার পরামর্শ দিয়েছেন।