দখলদারদের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে রাজধানীজুড়ে ড্রোনের সহায়তায় নজরদারি চলবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘অবৈধ দখলবাজদের উচ্ছেদের জন্য কোনও ধরনের নোটিশ দেওয়া হবে না। তাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স থাকবে ডিএনসিসি।’ শুক্রবার (২২ জানুয়ারি) সকাল ১০টার পর রাজধানীর মিরপুর-১১ এর ৪ নম্বর অ্যাভিনিউয়ে দ্বিতীয় দিনের মতো উচ্ছেদ অভিযানকালে তিনি এ কথা বলেন।
আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘রাস্তার পাশে বৈদ্যুতিক খুঁটি অপসারণের জন্য ঢাকা বিদ্যুৎ বিতরণ কর্তৃপক্ষকে (ডেসা) অবহিত করা হয়েছে। রাস্তা বর্ধিত করা হলে এসব বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলো দৃষ্টিকটু হবে, দ্রুত এসব ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে বলা হয়েছে।’ মেয়র বলেন, ‘স্বাধীনতার পর ৪৯ বছর ধরে এই সড়কটি দখল করে রাখা হয়েছে, এটা উদ্ধার করা হচ্ছে। গতকাল ৮৫ শতাংশ উচ্ছেদ করা হয়েছিল, বাকিটার উদ্ধার কাজ চলছে। উচ্ছেদের পর এটা যাতে আর দখল না হয়, সেদিকে নজর রাখা হবে।’
তিনি বলেন, ‘মিরপুর ১১ এর চার নম্বর অ্যাভিনিউয়ের উচ্ছেদ কার্যক্রম আরও কয়েকদিন চলবে। দখলবাজদের খপ্পরে পড়ে প্রতিনিয়ত রাস্তা ও ফুটপাত দখল হয়ে যাচ্ছে। দখলবাজদের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে সিটি করপোরেশন মাঠে রয়েছে। সব ধরনের অপতৎপরতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রাস্তাটি কয়েকদিনের মধ্যে পরিচ্ছন্ন করে সৌন্দর্য্য বর্ধনের কাজ করা হবে। এ জন্য ৩০ কোটি টাকা বাজেট হয়েছে। রাস্তা থেকে শুরু করে খাল বিভিন্ন স্থাপনা অবৈধ দখলদারদের কব্জায় চলে যাচ্ছে।’ অবৈধ দখলদারদের প্রতিরোধ করতে সব ধরনের নজরদারি থাকবে বলেও জানান মেয়র। ডিএনসিসির কর্মকর্তারা বলছেন, সড়ক প্রসস্ত করার জন্য রাজউকের জমিতে স্থাপনায় উচ্ছেদ কার্যক্রম চালানো হয় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে। বৃহস্পতিবার যেসব ভবন অর্ধভাঙা হয়েছিল আজ তা সম্পূর্ণ ভাঙা হবে। সেইসঙ্গে স্থাপনার ভাঙা অংশ অপসারণ করা হবে। গতকাল চার শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। আজ সকাল থেকে বিভিন্ন স্তুপ সরানোর প্রক্রিয়া চলছে। সিটি করপোরেশনের গাড়ি দিয়ে করা হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, গতকাল থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সেজন্য ভোগান্তিতে রয়েছেন তারা। উচ্ছেদ অভিযানের আগে তেমন সময় না পাওয়ায় অনেক জিনিসপত্র লুট হয়ে গেছে বলেও অভিযোগ করেন অনেকে। অনেকে দাবি করেন, পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করে বাসাবাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। শুক্রবার উচ্ছেদ অভিযান শুরুর পর উচ্ছেদ এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। মোতায়েন করা হয় বিপুল সংখ্যক পুলিশ। এ সময় পুলিশ মহড়া দেয় ওই এলাকায়। গত বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের পূর্বঘোষণা অনুযায়ী উচ্ছেদ করতে এলে দখলদারদের বাধা ও হামলার শিকার হয় পুলিশসহ সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা। স্থানীয় বিহারি ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কয়েক দফা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।