করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলায় সরকারের অবহেলা-অজ্ঞতায় কারণে চরম অব্যবস্থাপনা সৃষ্টি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আজকে সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক ব্যাপার করোনাভাইরাসের আক্রান্ত হলে সেখানে কোনো চিকিৎসার ব্যবস্থা নাই। যে হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসার কথা বলা হচ্ছে, সে হাসপাতালগুলোতে আসলে কোনো চিকিৎসা নাই। কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে যারা নার্স আছেন তাদের খাবারের কোনো ব্যবস্থা নাই। এই যে চরম একটা অব্যবস্থাপনা, এই অব্যবস্থাপনা তৈরি হয়েছে তার একটা মাত্র কারণ হচ্ছে- সরকারের চরম অবহেলা এবং অজ্ঞতা অথবা সেই মানসিকতাই তাদের তৈরি হয়নি কিভাবে এই জিনিসটাকে মোকাবিলা করতে হয়। আজ সোমবার (১৩ এপ্রিল) বিকেলে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের (জেডআরএফ) উদ্যোগে সাধারণ মানুষের হাত ধোয়ার জন্য বেসিন স্থাপন কর্মসূচীর উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল। এসময় বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, প্রকৌশল মাহবুব আলম প্রমুখ। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- জেডআরএফের অধ্যাপক ড. মো: মোর্শেদ হাসান খান, প্রকৌশলী মোঃ আসাদুজ্জামান চুন্নু, মোঃ ফরিদি, প্রকৌশলী উমাসা উমায়ুন মনি চৌধুরী ও প্রকৌশলী কামরুল হাসান সাইফুল, আতিকুর রহমান রুমন, মেহেদী হাসান, শায়রুল কবির খানসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
জেডআরএফের সভাপতি ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে এবং নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনারের সার্বিক তত্ত্বাবধানে জেডআরএফের প্রকৌশলীরা জনগণকে ঘন ঘন হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বেসিন বসানোর উদ্যোগ নিয়েছে। রাজধানীর তেজগাঁওয়ের বেগুনবাড়ি কলোনিবাজার এলাকায় সোমবার বেসিন স্থাপনের মাধ্যমে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন হলো। তারেক রহমান দলের নেতাকর্মীদেরকে সাধ্যমতো যার যার এলাকায় হাত ধোয়ার বেসিন বসানোরও নির্দেশনা দিয়েছেন। কেউ বেসিন বসাতে আগ্রহী হলে এক্ষেত্রে জেডআরএফের হটলাইনে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় কারিগরী সহায়তা মিলবে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ভিডিও কনফারেন্সে কর্মসূচীর উদ্বোধনকালে জেডআরএফের এই কার্যক্রমকে স্বাগত ও সংশ্লিষ্টদেরকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আজকে আমরা দেখছি যে, জেলাগুলোতে যেখানে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন তাদের পরীক্ষার ব্যবস্থা নেই, তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই। একটা জটিল ভয়াবহ অমানবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আমরা এই অবস্থা থেকে বেরনোর জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কথা বলেছি। আসুন আজকে আমরা যে যেখানে আছি, যে যতটুকু পারি, যেভাবে পারি আমরা যেন মানুষের জন্যে এই চরম দুর্দিনে তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করি। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠিসহ বিভিন্ন শ্রেণীর জন্য ৮৭ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্রস্তাবসমূহ তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, সবকিছু বন্ধ হয়ে যাওয়াতে সাধারণ দিন আনে দিন খাওয়া মানুষ অসহায়ত্বের মধ্যে আছে, অনেকে না খেয়ে আছে। প্রান্তিক মানুষ অনেকে আছেন তারা খাওয়া পাচ্ছেন না। সরকার এ বিষয়ে কোনো বাস্তব কাযর্করী পদক্ষেপ নিচ্ছে না। তারা একটা প্যাকেজ দিয়েছে যে, প্যাকেজে পুরোপুরিভাবে শুধু যারা বিত্তশালী, যারা বিভিন্ন ব্যাংকের সাথে জড়িত, বিভিন্ন গার্মেন্টসের সাথে জড়িত তাদের জন্যে এই প্যাকেজগুলো করা হয়েছে। তাও শুধু ঋণের জন্য। আমরা দেখেছি এই প্যাকেজটা একটা ব্যাংক ঋণের প্যাকেজ। সাধারণ মানুষের জন্য কোনো বরাদ্দ আমরা দেখতে পারছি না। আমরা পত্রিকাগুলোতে দেখছি ১০ টাকা কেজি চাল দেয়া হচ্ছিল গরীব লোকের জন্যে তা চলে যাচ্ছে আওয়ামী লীগের নেতাদের ঘরে…। আমরা দেখছি যে, গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীগুলোতে শ্রমিকরা বেতন চাচ্ছে তাদের বেতন না দিয়ে পেটানো হচ্ছে। আজকে এক ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। করোনাভাইস সংক্রমণ থেকে রক্ষায় দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়া এবং দুর্দিনে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহবান এবং দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া অসুস্থতাবস্থায় এই ভাইরাস থেকে পরিত্রাণে দেশবাসীর জন্য আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া করার কথাও জানান বিএনপি মহাসচিব।সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, করোনা ভাইরাস থেকে প্রতিরোধে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বারবার হাত ধোয়ার নির্দেশনা দিচ্ছে। সেটা মেনেই জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন সাধারণ মানুষের হাত ধোয়ার জন্য রাজধানীতে বেসিন স্থাপন করলো। এটা নি:সন্দেহে প্রশসংনীয় উদ্যোগ।
তিনি বলেন, আজকে করোনার মুক্তির জন্য দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ঘরে বসে দোয়া করছেন এবং আমাদের দেশনায়ক তারেক রহমান সার্বিক নির্দেশনা দিচ্ছেন সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। কেননা আজ গোটা বিশ্ব এক অদৃশ্য শক্তির কবলে আটকা। এখন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং আল্লাহর কাছে দোয়া করতে হবে।–এইচ আর/ খবরপত্র