বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩৫ অপরাহ্ন

আমদানি করা যাবে আকরিক স্বর্ণ

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় বুধবার, ২৭ জানুয়ারী, ২০২১

‘স্বর্ণ নীতিমালা ২০১৮’ সংশোধনের উদ্যোগ
দেশে বিদ্যমান ‘স্বর্ণ নীতিমালা ২০১৮’ অনুযায়ী, ব্যবসায়ীরা স্বর্ণালঙ্কার ও স্বর্ণবার আমদানি করতে পারেন। এখন এই নীতিমালা সংশোধন করে আকরিক বা আংশিক অপরিশোধিত স্বর্ণ আমদানির সুযোগ করে দেয়া হচ্ছে।
সূত্রে প্রকাশ, ব্যবসায়ীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার এ সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। এ লক্ষ্যে বিদ্যমান ‘স্বর্ণ নীতিমালা ২০১৮’ সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, বিদ্যমান নীতিমালায় স্বর্ণবার ও স্বর্ণালঙ্কার আমদানির বিধান থাকলেও অপরিশোধিত স্বর্ণ আকরিক/আংশিক পরিশোধিত স্বর্ণ আমদানির বিষয়ে কোনো কিছু উল্লেখ নেই। এ পরিপ্রেক্ষিতে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান অপরিশোধিত স্বর্ণ আকরিক/আংশিক পরিশোধিত স্বর্ণ আমদানি করে তা নিজস্ব পরিশোধনাগারে পরিশোধন করে বিভিন্ন গ্রেডের স্বর্ণবার ও স্বর্ণমুদ্রা তৈরি, বিপণন ও রফতানির আগ্রহ করে এ-সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়নের আবেদন জানিয়েছে।
জানা যায়, ভারত, আফ্রিকার কয়েকটি দেশ, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সসহ বিশ্বের উন্নত দেশগুলো অপরিশোধিত স্বর্ণ পরিশোধন করে থাকে। এ জন্য উন্নত প্রযুক্তি, অত্যাধুনিক মেশিন ও দক্ষ জনবলের প্রয়োজন। কিন্তু বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত অপরিশোধিত/আংশিক পরিশোধিত স্বর্ণ পরিশোধন করার মতো কোনো পরিশোধনাগার নেই।
এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, সংশোধিত নীতিমালায় স্বর্ণ পরিশোধনে আন্তর্জাতিক স্বীকৃত পদ্ধতি অনুসরণ করে পরিশোধনাগার স্থাপন ও স্বর্ণমানের বিশুদ্ধতার বিষয়ে বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
জানা যায়, ২০১৮ সালের অক্টোবরে স্বর্ণ নীতিমালা কার্যকর হওয়ার পর স্বর্ণবার ও স্বর্ণালঙ্কার আমদানির লক্ষ্যে ডিলার নির্ধারণে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি গাইড-লাইন নির্ধারণ করেছে। প্রণীত গাইড-লাইনের আলোকে স্বর্ণবার ও স্বর্ণালঙ্কার আমদানিতে স্বর্ণ খাতের ১৮টি প্রতিষ্ঠান ও একটি ব্যাংককে ‘গোল্ড ডিলার’ হিসেবে লাইসেন্স দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এসব ডিলারের মাধ্যমে বর্তমানে দেশে বৈধ পথে স্বর্ণ আমদানি হয়ে থাকে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, স্বর্ণ নীতিমালার সংশোধিত প্রস্তাবে উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যের মধ্যে সংশোধিত নীতিমালায় নতুনভাবে সরকার, স্বর্ণ ও পরিশোধনাগারের সংজ্ঞা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে স্বর্ণবার ও স্বর্ণালঙ্কারের সাথে স্বর্ণমুদ্রা এবং অপরিশোধিত স্বর্ণ আকরিক/আংশিক পরিশোধিত স্বর্ণ সংযোজন করা হয়েছে। স্বর্ণ পরিশোধনাগার স্থাপন ও পরিচালনায় আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পদ্ধতি অনুসরণের লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় মানসম্মত পরিচালনা পদ্ধতি প্রণয়ন করবে এবং নীতিমালায় এ-সংক্রান্ত একটি নতুন অনুচ্ছেদ সংযোজন করা হয়েছে। এতে স্বর্ণমান ও বিশুদ্ধতা সনদ প্রদানের ক্ষেত্রে বিএসটিআই কিংবা বিএসটিআই কর্তৃক স্বীকৃত অ্যাক্রিডিটেড সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে সুনির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। স্বর্ণবার রফতানির ক্ষেত্রে রফতানিকারকের অবশ্যই নিজস্ব স্বর্ণ পরিশোধনাগার থাকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে এবং এ-সংক্রান্ত একটি নতুন অনুচ্ছেদ সংযোজন করা হয়েছে; অনুমোদিত স্বর্ণ ডিলার কর্তৃক চালানভিত্তিক সম্ভাব্য বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয়ের পরিমাণ বাংলাদেশ ব্যাংককে অবহিত করার পর ১৫ কার্যদিবসের পরিবর্তে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংককে অনাপত্তি পত্র দিতে হবে। অনুমোদিত স্বর্ণ ডিলার কর্তৃক নিজস্ব ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে স্বর্ণবার/স্বর্ণালঙ্কার আমদানির ক্ষেত্রে জামানতের বিধান বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া কর্ম-পরিকল্পনা হালনাগাদ করাসহ বিশেষ প্রয়োজনে উপযুক্ত কারণ দেখিয়ে সরকার (বাণিজ্য মন্ত্রণালয়) কিছু ক্ষেত্রে নীতিমালায় প্রয়োজনীয় সংশোধন/সংযোজন/পরিবর্তন করতে পারবে বলে নীতিমালায় নতুন অনুচ্ছেদ সংযোজন করা হয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, অপরিশোধিত স্বর্ণ/আংশিক পরিশোধিত স্বর্ণ আমদানি ও পরিশোধন প্ল্যান্ট স্থাপনের মাধ্যমে পরিশোধন করা সম্ভব হলে শিল্পায়নের এক নতুন দিগন্তে প্রবেশ করবে বাংলাদেশ এবং বিশ্বে স্বর্ণ পরিশোধনকারী দেশের তালিকায় যুক্ত হবে বাংলাদেশের নাম। এতে বিনিয়োগ আকর্ষণ ও প্রযুক্তি আহরণসহ দক্ষ জনবলের সৃষ্টি হবে। দেশে স্বর্ণবারের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি স্বর্ণমুদ্রা ও স্বর্ণবার সরাসরি রফতানি করাও সম্ভব হবে, যা রফতানি পণ্যে বৈচিত্র্য আনয়ন এবং আমদানি প্রতিস্থাপক হিসেবে কাজ করবে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com