ঢাকার ধামরাই উপজেলার কালামপুর এলাকায় ভালুম আতাউর রহমান খান স্কুল এন্ড কলেজের পূর্ব পাশের মাঠে অবহেলা ও অযতেœ পড়ে রয়েছে স্মৃতিসৌধটি। এখানে বধ্য ভূমি ছিল। একত্রে প্রায় ১৪ জনের মতো লোককে পাকবাহিনীরা ধরে এনে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। তাদের স্মৃতির স্বরণে এখানে স্মৃতি সৌধ তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু সীমানা প্রাচীর না থাকায় স্মৃতিসৌধ চত্বরে অনাকাঙ্ক্ষিত লোকজনের পদচারণা, গরু-ছাগল প্রবেশ অনায়াসেই করছে। রাতের বেলায় মাদকসেবীদের আড্ডাও বসে বলে জানান একাধিক ব্যক্তি।এতে স্মৃতিসৌধের পরিবেশ ও পরিচ্ছন্নতা নষ্ট হচ্ছে।নষ্ট হচ্ছে পবিত্রতাও। সারা বছর ধরে অবহেলিত অবস্থায় পড়ে থাকে। ১৬ ডিসেম্বর আসলে স্মৃতিসৌধের কথা সবার মনে পড়ে।এর মধ্যে স্মৃতিসৌধটি দেখার কোন লোক থাকে না। মুক্তিযোদ্ধে শহীদদের স্মৃতির স্বরণে নির্মান করা হয়েছে সৌধটি।অথচ সারা বছর অবহেলায় পড়ে থাকে। কথাগুলো বলছিলেন স্থানীয় এলাকার ষাটোর্ধ বাসিন্দা মো. জালাল উদ্দিন। সরেজমিনে দেখা যায়, স্মৃতিসৌধের উপর হেলান দিয়ে কয়েকটি পাতিল শুকাতে দেওয়া হয়েছে। এর পাশ দিয়ে চলে গেছে কালামপুর হতে ধানতারা পর্যন্ত আঞ্চলিক সড়ক। রাস্তাটি বেশ সরগরম থাকে। স্মৃতিসৌধের পাশ দিয়ে ময়লার ড্রেন চলে গেছে তার দূর্গন্ধ সব সময় বাতাসে ভাসতে থাকে। ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা অজিত কুমার চক্রবর্তী বলেন, কালামপুর এই স্থানটি বধ্যভূমি ছিল।এখানে ১৪ জনকে একত্রে গুলি করে হত্যা করা হয়। তাদের সম্মানার্থে এখানে সৌধটি নির্মিত হয়েছে। মূল স্তম্ভ নির্মিত হলেও বাকি অনেক কাজের অগ্রগতি নেই।সৌধের চারপাশে একটু উচু বাউন্ডারি তৈরি করে দিলে ভিতরে কেউ ঢুকতে পারবে না।স্থানটির পবিত্রতা রক্ষা পাবে। তিনি আরো বলেন, যদি কালামপুর বাজার কমিটি বা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দায়িত্ব নেন তাহলে স্থানটির সঠিক রক্ষনাবেক্ষন করা যাবে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০১৩ সালের ২৬ মার্চ কালামপুর বধ্যভূমির ভিত্তি প্রস্তর কাজের উদ্বোধন করেন সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব এম এ মালেক। উপজেলা প্রশাসনের অর্থায়নে মেসার্স শাহীন এন্টারপ্রাইজ নামক একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্টান কাজটি করেন। মূল স্তম্ভ নির্মিত হলেও সৌধের চারপাশে আলাদা বাউন্ডারি না থাকায় অবহেলায় পড়ে রয়েছে শহীদদের স্বরণে নির্মিত স্মৃতিসৌধটি। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, সীমানা প্রাচীর না থাকায় স্মৃতিসৌধের রক্ষানাবেক্ষন হচ্ছে না। মাদকসেবী বা অন্যান্য লোকজন অনায়াসে চলাচল করছে। কালামপুরের এই স্বাধীনতা স্মৃতিসৌধটি সঠিকভাবে রক্ষনাবেক্ষনের ব্যবস্থা করা দরকার। কারণ, ভিতরে মিনারের উপরে কুকুর, ছাগল শুয়ে থাকে।পাশের দোকানের কারণে লোকজন সেখানে প্রস্রাবও করে। দেখা যায়, বিজয় দিবস পালনের লক্ষে স্মৃতিসৌধ ঘষে-মেজে পরিষ্কার করা হয়েছিল। সৌধের মূল স্তম্ভে রঙ করছিলেন। ধূয়েমূছে পরিষ্কার করা হয়েছিল। স্থানীয়রা বলেন, ১৬ ডিসেম্বর, তাই পরিষ্কার করে রঙ করা হয়েছিল। এখন থেকে সারা বছর আর কোন খোজ খবর নিবে না। এ বিষয়ে কালামপুর বাজার বনিক সমিতির সভাপতি মোঃ রবিউল করিম বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা দেশের সূর্য সন্তান। তাদের সম্মানে যে স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়েছে আমি তার চারপাশে বাউন্ডারি করে দিবো। এতে শহীদদের স্বরণে নির্মিত স্মৃতিসৌধটির পবিত্রতা রক্ষা পাবে। এ বিষয়ে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড এর সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান বলেন, কালামপুরের এই বধ্যভূমিতে ১৪ জনকে পাকবাহিনীরা গুলি করে হত্যা করেছিল। তাদের স্বরনে নির্মিত সৌধটির সঠিক রক্ষনাবেক্ষন হচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে আমি বর্তমান সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব বেনজীর আহমদ এর সাথে কথা বলবো। সৌধটির যেন সঠিক মূল্যায়ন হয়।