পাল্টা পদক্ষেপ নিতে এক সপ্তাহের বেশি দেরি করল না চীন। গত সপ্তাহে চীনের সরকার নিয়ন্ত্রিত টেলিভিশন চ্যানেল চীনা গ্লোবাল টেলিভিশন নেটওয়ার্কের (সিজিটিএন) লাইসেন্স বাতিল করেছিল যুক্তরাজ্য। এর এক সপ্তাহের মধ্যে চীন তাদের দেশে নিষিদ্ধ করে দিল বিবিসি ওয়ার্ল্ড নিউজের সম্প্রচার। সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
চীনের সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, দেশটির জাতীয় রেডিও ও টেলিভিশন মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য, বিবিসি ওয়ার্ল্ড নিউজ চীনের সম্প্রচার নীতি লঙ্ঘন করেছে। মন্ত্রণালয় মনে করছে, বিবিসির চীন সংক্রান্ত খবরের প্রতিবেদন সত্য ও নিরপেক্ষ নয়। এর ফলে চীনের জাতীয় স্বার্থ ও সার্বভৌমত্ব ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। চীনের এমন পদক্ষেপের পর ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাব টুইট করেছেন, ‘চীনের পদক্ষেপ সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব করছে, যা অগ্রহণযোগ্য। চীন বিশ্বজুড়ে সংবাদমাধ্যম ও ইন্টারনেটের ব্যবহারে বাড়াবাড়ি রকমের নিষেধাজ্ঞা জারি করে রেখেছে। তাদের সাম্প্রতিকতম এই পদক্ষেপ বিশ্বের সামনে চীনের ভাবমূর্তি নষ্ট করবে।’ এ ছাড়া চীনের সিদ্ধান্তেরর নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রও। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, এমন পদক্ষেপ চীনে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা অবদমনের অংশ।
দুবছর আগে সিজিটিএন ইউরোপে তাদের খবর সম্প্রচার করার জন্য লন্ডনে দপ্তর খোলে। কিন্তু গত সপ্তাহে যুক্তরাজ্যের সম্প্রচার মন্ত্রণালয় জানায়, সিজিটিএনের সম্পাদকীয় নীতির ওপর চীনের কমিউনিস্ট পার্টি ছড়ি ঘোরাচ্ছে। এটি ব্রিটিশ আইন বিরোধী। এরপর যুক্তরাজ্যে তাদের সম্প্রচারের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়।
তখনই বোঝা গিয়েছিল, চীনের পাল্টা পদক্ষেপ নেওয়া কেবল সময়ের ব্যাপার। সপ্তাহ ঘুরতে না ঘুরতে চীন ঠিক তা-ই করল। চীনের যুক্তি, জিনজিয়াংয়ে উইঘুর নারীদের ধর্ষণ ও অত্যাচারের যে খবর বিবিসি প্রকাশ করেছে, তা অসত্য। বিবিসি যদিও চীনের ওই বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেছে। বিবিসি এক বিবৃতিতে বলে, ‘চীন এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ায় আমরা হতাশ। বিবিসি বিশ্বের সবচেয়ে বিশ্বস্ত আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম। সারা বিশ্ব থেকে ন্যায্য ও নিরপেক্ষভাবে কোনো ভয় কিংবা পক্ষপাতিত্ব না করে বিবিসি খবর সংগ্রহ করে।’ বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনে কেবল আন্তর্জাতিক হোটেল ও কিছু কূটনৈতিক এলাকায় বিবিসি সম্প্রচারিত হতো। যার অর্থ হলো চীনের সাধারণ মানুষ বিবিসি দেখতে পেত না।