জেলার গোমতী নদীর উত্তর পাড়ে তিনটি পুরাকীর্তির সন্ধান মিলেছে। এগুলো ১৩০০ বছরের পুরনো বলে জানিয়েছে কুমিল্লা প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর। শালবন বিহার থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব দিকে সদর উপজেলায় পাঁচথুবী ইউনিয়নে এ পুরাকীর্তির সন্ধান মিলেছে। সেখানে ইটাল্লা গ্রামে মিলেছে মোহান্ত রাজার বাড়ির সন্ধান। এখন এটি বড় মাটির স্তূপে পরিণত হওয়ায় স্থানীয় লোকজনের কাছে জায়গাটি ‘মন্তের মুড়া’ নামে পরিচিত।
অধিদপ্তরের আঞ্চলিক প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক ড. আতাউর রহমান বাসসকে জানান, প্রাচীন ইট দিয়ে ঘেরা মোটা একটি প্রাচীর পাওয়া গেছে। এর পাশেই শরীফপুর গ্রামে সন্ধান মিলেছে বৈষ্ণবরাজার বাড়ির। যদিও এখন বাড়ির অস্তিত্ব নেই। পরিত্যক্ত ইটপাথরের স্তূপ হয়ে আছে। এ স্তূপটিকে স্থানীয়রা ‘বৈষ্ণব মুড়া’ নামে ডাকে। আর বসন্তপুর গ্রামে পাওয়া গেছে বসন্ত রাজার বাড়ির খোঁজ।
এ পুরাকীর্তিগুলো খনন করা হবে বলে জানিয়ে ড. আতাউর বলেন, বিভিন্ন বই পড়ে ধারণা করা হয় যে কুমিল্লার ওই এলাকায় কিছু পুরাকীর্তি থাকতে পারে। এরপর স্থানীয় লোকজন ও প্রশাসনের কাছ থেকে খোঁজখবর নিয়ে সেখানে গিয়েছি। সঙ্গে ছিলেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক মুর্শেদ রায়হান ও প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের কয়েকজন কর্মকর্তা। এলাকা ঘুরে তারা এ তিনটি পুরাকীর্তি খুঁজে পান।
তারা জানান, পাঁচটি বদ্ধ স্তূপ থাকার কারণে এলাকাটির নাম হয় পাঁচথুবী। স্তূপগুলো অনেক দিন ধরে অবহেলায় নষ্ট হয়েছে। পাঁচটি স্তূপের তিনটি এখন পর্যন্ত শনাক্ত করা গেছে। বাকি দুইটির খোঁজ চলছে। এরইমধ্যে এলাকার সাধারণ মানুষ স্তূপগুলো কেটে ঘরবাড়ি বানিয়েছে। প্রাচীন ইট খুলে নিয়ে তারা নানা কাজে ব্যবহার করেছে। গবেষক আহসানুল কবির বাসসকে বলেন, এ পুরাকীর্তি ১৩০০ থেকে ১৫০০ বছর আগের। এগুলো প্রাচীন ঐতিহ্য। আমাদের ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করবে। এ পুরাকীর্তিগুলো রক্ষা করা জরুরি। এগুলো সংরক্ষণ করে সরকার রাজস্ব আয় বাড়াতে পারে। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতœতত্ত্বের শিক্ষক মুর্শেদ রায়হান বাসসকে বলেন, আমরা পরিদর্শনে গিয়ে তিনটি পুরাকীর্তি দেখেছি। সেগুলো থেকে অনেকে মাটি কেটে নিয়ে ধ্বংস করেছে। এগুলো সংরক্ষণ করা প্রয়োজন। ড. আতাউর বলেন, ধারণা করছি, সব স্থাপনা একই সময়ের। আমরা আশা করি দ্রুতই এগুলোর সংরক্ষণ ও সংস্কারের ব্যবস্থা করতে পারব।