আদর্শ খাবার বলতে কি কিছু আছে? বা এমন কোনো খাবার আছে, যা খেলে আমাদের সব ধরনের পুষ্টির চাহিদা পূরণ হয়? আসলে এমন খাবার নেই। তবে কিছু খাবার রয়েছে যা এতো বেশি পুষ্টিগুন সমৃদ্ধ এগুলোকে ব্যালেন্সড ফুড বলা হয়। অর্থাৎ এগুলো আমাদের দেহের বেশিরভাগ পুষ্টির যোগান দিতে সক্ষম।
বিশ্বের ১০০০ টি খাবারের তালিকা থেকে সবচেয়ে বেশি পুষ্টিগুন রয়েছে এমন কিছু খাবারের তালিকা তৈরি করেছে যুক্তরাজ্যের গবেষকরা। এরমধ্যে রয়েছে- অ্যামন্ড এবং আখরোট। অ্যামন্ড এমন এক খাবার যাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ফ্যাটি এসিড যা ডায়াবেটিস ও হার্ট ভালো রাখতে সহায়তা করে।
নিন্মে এমন কিছু খাবারের গুনাগুন তুলে ধরা হলো…..
আতাফল: আতাফলে রয়েছে প্রাকৃতিক চিনি ভিটামিন এ,সি,বি১, বি২ এবং পটাশিয়াম।
সামুদ্রিক কই বা পোয়ামাছ: সামুদ্রিক কই বা পোয়া মাছ, কড মাছ,নীল পাখনা রটুনা। সামুদ্রিক কই বা পোয়া মাছ সবচেয়ে উচ্চমাত্রা সমৃদ্ধ খাবার গুলোর মধ্যে একটি। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের স্যামন,ইল,সামুদ্রিক চিতল বা ফ্ল্যাটফিশ পুষ্টিগুনের জন্য এই তালিকায় স্থান করে নিয়েছে।
চিয়া সিড বা তিসি বীজ: চিয়া সিড বা তিসি বীজে বিভিন্ন ধরনের ডায়া টেরিফাইবার প্রোটিন, ভিটামিন , লিনোলেনিক এসিড এবং ফেনোলিক এসিড রয়েছে এতে। মিষ্টি কুমড়া ও বীজ মিষ্টি কুমড়া ও এর বীজ এ রয়েছে আয়রন ও ম্যাঙ্গানিজের ভালো উৎস। কাঁচা কিংবা পাঁকা যে জাতেরই হোক না কিনা মিষ্টি কুমড়ার পুষ্টি গুনের কোন কমতি নেই।
শুকনো ধনিয়া পাতার গুড়ো বা ধনিয়া পাতা: শুকনো ধনিয়া পাতার গুড়ো, তাজা ধনিয়া পাতা কিংবা এর ডাটা পুরো গুল্মটিই আসলে উৎস পুষ্টিগুনে ভরপুর। এতে থাকে ক্যারোটিন যা জ্বর কাশি এবং বিভিন্ন রোগ নিরাময় করে থাকে।
মটরশুটি ও বরবটি: প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, মিনারেল এবং ,দ্রবণীয় ভিটামিন রয়েছে মটরশুটিতে। বরবটি সবজি এবং এর বীজ বা ডাল সবকিছুতেই রয়েছে পুষ্টি। উচ্চ মাত্রায় কার্বোহাইড্রেট এবং প্রোটিন রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের সিমের বিচির কথাও উঠে এসেছে এই তালিকায়।
পাতাসহ পেঁয়াজ: পাতাসহ বিভিন্ন ধরনের পেঁয়াজ, ডগা সহ ফুলে প্রচুর ভিটমিন রয়েছে। বিশেষ করে ভিটমিন এ এবং কে এর ভালো উৎস। এছাড়া পেঁয়াজ পাতায় প্রচুর অ্যান্টি অক্সিজেন রয়েছে।
লাল ও সবুজ বাঁধাকপি: সব ধরনের বাঁধাকপি পুষ্টিগুনে ভরপুর,তবে লাল বাঁধাকপিতে পুষ্টিমানএকটু বেশি। এছাড়া রয়েছে চাইনিজ বাঁধা কপি যা একটু লম্বাটে ধরনের হয়। এতে ক্যালরির পরিমান অনেক কম থাকে।
পালংশাক: পালংশাকে ম্যাগনেশিয়াম, ফলেট ও ভিটামিন এ পাওয়া যায়। বেটা ক্যারোটিন, জিজ্যানথিন এর ভাল উৎস। হিমায়িত পালংশাক পুষ্টি নষ্ট হওয়া রোধ করে এবং ধরে রাখে। আর এ জন্যই তাজা পালংশাকের তুলনায় এতে বেশি পুষ্টিগুন থাকে বলে ধরা হয়। তবে তাজা পালংশাক কম নয়। তাজা পালংশাকে ভিটামিন এ ক্যালিসিয়াম, ফসফরাস এবং আয়রন থাকে প্রচুর পরিমানে। এটিতে এতো ভালো পুষ্টিগুন রয়েছে যে সেরা খাবারে তালিকায় ২বার করে উঠে এসেছে।
মরিচ মরিচের গুড়ো বিভিন্ন ধরনের ফাইটেকেমিক্যাল যেমন- ভিটামিন সি, ই, এবং এ থাকে। সেই সাথে থাকে বিভিন্ন ধরনের ফ্যনোলিক উপাদান এবং ক্যারোটিন ওয়েট্। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের মরিচ যেমন ইয়ালাপিনো, কাঁচা মরিচে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মত পুষ্টিগুন।
পুদিনা: পুদিনা গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ যা মূলত হৃদপিন্ড ভাল রাখে। এতে রয়েছে অ্যান্টিফাংগাল এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান।
সরিষা শাক: সরিষা শাকে সিনিগ্রিন নামে একেধরনের উপাদান থাকে। যা যেকোন ধরনের প্রদাহ দূর করে।
লেটুস/ বাটার লেটুস/ গ্রিন লেটুস পুষ্টিগুনে ভরপুর লেটুস। যত তাজা, তত পুষ্টি।
কলা: বিভিন্ন জাতের কলায় রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল এবং ডায়াবেটিক প্রতিরোধী উপাদান। যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো।
টেমেটো: কাঁচা ও পাকা দুই ধরনের টমেটোই পুষ্টিগুন সম্পন্ন। পাঁকা টমেটোতে রয়েছে ফরেট, পটাসিয়াম, ভিটামিন এ, সি এবং ই। তবে কাঁচা টমেটো পাকার তুলনায় বেশি পুষ্টিগুন সম্পন্ন বলে বিজ্ঞানীরা বলছেন।
ডালিম: ডালিমে রয়েছে প্রচুর পরিমানে অ্যান্থোসায়ানিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের উৎস। এছাড়া প্রদাহ রোধের উপাদানও রয়েছে। বিশ্বে শীর্ষ পুষ্টিগুন সম্পন্ন খাবারের এই তালিকায় আরো রয়েছে, আদা, ডুমুর, মিষ্টি আলু, শুকনো খেজুর, গাজর, কচু শাক, ব্রকলি, ফুলকপি, কমলা এবং কমলা জাতীয় ফল। সূত্র : বিবিসি