মঙ্গলবার, ০১ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:৩৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
জাতিসংঘে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অনন্য ভাষণ গণতান্ত্রিক ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজের স্বপ্ন এবং চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশ-চীন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে আগ্রহী অন্তর্র্বতী সরকার : নাহিদ ইসলাম শাপলায় ৪০০ পরিবারের জীবিকা আওয়ামী লীগের ‘আলোচিত’ সাবেক সংসদ সদস্য জান্নাত আরা হেনরী গ্রেপ্তার এবার ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা পেল বিমান ও নৌ বাহিনী শ্রমিকরা গত ১৫ বছরে ন্যায্য পারিশ্রমিক পাননি: ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য ছাত্র জনতার বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষার মধ্য দিয়ে সকল ষড়যন্ত্র ভেসে যাবে : সালাহউদ্দিন আহমেদ মিরাজকেই সাকিবের বিকল্প ভাবছেন নির্বাচকরা এই আনন্দে হাসতেও পারছি না, কাঁদতেও পারছি না: মিঠুন পানি কমেছে তিস্তায়, বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক

কারো ক্ষমতা থাকলে মসজিদ-মাদ্রাসায় হাত দিয়ে দেখাক: শামীম ওসমান

নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপডেট সময় রবিবার, ২১ মার্চ, ২০২১

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান বলেছেন, যারা সংখ্যালঘু তাদের রক্ষার দায়িত্ব এদেশের মুসলমানদের। সংখ্যালঘুদের সম্পত্তি বা দেবোত্তর সম্পত্তি যদি কেউ গিলে খেতে চায় সেটাও রক্ষা করার দায়িত্ব মুসলমানদের। ঠিক তেমনি মসজিদ-মাদ্রাসায় যদি কেউ হাত দেয়, তবে আমি একাই এর প্রতিবাদ করবো, প্রতিরোধ করবো। আমি আছি, কারো ক্ষমতা থাকলে নারায়ণগঞ্জে মসজিদ ও মাদ্রাসায় হাত দিয়ে দেখাক। গত শনিবার (২০ মার্চ) রাতে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার আলীরটেক ইউনিয়নে ওলামা পরিষদ আয়োজিত ওয়াজ মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শামীম ওসমান বলেন, ওয়াজ মাহফিলে এসে ভেবেছিলাম কথাগুলো পরে বলবো। কিন্তু আজকে বললাম, কারণ কালকে নাও থাকতে পারি। আমি চুপ করে থাকলে আমার মৃত্যুর পর আল্লাহ আমাকে ধরবেন যে ‘আমি তোকে বানাইসি তুই কী করসোস’।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সারা বাংলাদেশে একসঙ্গে ৫৬০টি মডেল মসজিদ করছেন। নারায়ণগঞ্জের ম-লপাড়ায় একটি ওয়াকফ এস্টেটের ৮৩ শতাংশ জায়গা আছে। সেখানে সাড়ে ৫০০ বছর পুরোনো একটা মসজিদ আছে। ওয়াকফর প্রতিনিধিদের ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও জেলা প্রশাসক অনুরোধ করার পর তারা ওই প্রাচীন মসজিদটি রেখে মডেল মসজিদের জন্য ৪৩ শতাংশ জায়গা দিলেন। কিন্তু এক নারী তখন সেখানে জোর করে ঢুকে গেলেন। তারা আমার কাছে আসলো এবং কাগজও দেখালেন। কোর্টও তাদের পক্ষে গেলো। পরে তিনি বললেন, ‘সামনে তিনি পার্কিং স্পেস বানাবেন’। আসলে তার লক্ষ্য দোকান বানানো। কারণ দোকান হইলেই বিক্রি করা যায়।
সংসদ সদস্য বলেন, নারায়ণগঞ্জের আলেমদের আওয়াজ নেই কেন? মোদির দেশে কী হইসে, তা নিয়া হাত-পা কাইটা ফালাইতে চান। অথচ এখানে মসজিদ-মাদ্রাসা দখল হয়ে যাচ্ছে আর আলেমরা নিশ্চুপ।
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জে আমার বাসার সামনেই চাষাড়া বাগে জান্নাত মসজিদটি। আমি ছোট বেলায় সেখানে খেলেছি। সেখানে একটি কবরস্থান ছিলো, যেখানে অনেক কামেল লোকের কবরও ছিলো। সেখানে মসজিদ ও মাদ্রাসা হয়েছে। পর্চায় লেখা আছে, এখানে কবরস্থান ছিলো এবং এই জায়গা শুধু ইসলাম ধর্মের ধর্মীয় কাজে ব্যবহার হবে। তাই হয়েছে। তবে নারায়ণগঞ্জে সেই নারীই বললেন, ‘মসজিদ ও মাদ্রাসাটা ভাঙতে হবে। মসজিদটি ভেঙে পেছনে নেয়া হবে আর মাদ্রাসাটা উঠিয়ে দেয়া হবে। মাদ্রাসা উঠিয়ে সেখানে পার্ক করবেন, মসজিদের নিচে দোকান করবেন’।
শামীম ওসমান বলেন, ধর্মে আছে সবচেয়ে নিকৃষ্ট জায়গা বাজার আর সবচেয়ে উৎকৃষ্ট জায়গা মসজিদ। আল্লাহ সম্মান প্রদানকারী এবং আল্লাহই সম্মান কেড়ে নিতে পারে। সেই আল্লাহর ঘরে যদি আঘাত আসে আর আমি চুপ করে বসে থাকি তাহলে মৃত্যুর পর আমাকে তার জবাব দিতে হবে।
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জে একটা নিষিদ্ধ পল্লি ছিলো। আল্লাহ আমাকে দিয়ে সে পাপ মোচন করিয়েছেন। তখন থেকেই বিভিন্ন ইমাম আলেমদের সঙ্গে আমার সম্পর্কে ভালো। তাই তাদের ওপর এতো আঘাত।
নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আরো বলেন, নারায়ণগঞ্জের এতো আলেম গেলো কই? যারা সংখ্যালঘু তাদের রক্ষার দায়িত্ব মুসলমানদের। ওয়াকফার সম্পত্তি যেমন রেজিস্ট্রার হয় না তেমনি দেবোত্তর সম্পত্তিও রেজিস্ট্রার হয় না। একাত্তরে কয়েক ধরনের মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। কেউ দেশ বাঁচাতে যুদ্ধ করেছেন, কেউ ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা, কেউ লুটেরা মুক্তিযোদ্ধা। আমি সব দেখেছি, মনে আছে। এতো ভুয়া সম্পদ কোথা থেকে আসে।
তিনি বলেন, আমার জীবনে চাওয়া-পাওয়ার আর কিছুই নেই। এদেশে অনেক মন্ত্রী হয়েছেন, এমপি হয়েছেন কিন্তু মানুষের ভালোবাসা আমার মতো অনেকেই পাননি। কারণ, আমি দেশে ফেরার পর লাখ লাখ লোক মানুষের সমাগম হলো। র‌্যাব-পুলিশ-বিজিবি-সেনাবাহিনী সব এসেছিলো গ্রেপ্তার করতে। এলাকার মানুষ মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে আমাকে রক্ষা করলো। আমরা তিন পুরুষ ধরে মানুষের এই ভালোবাসা পাচ্ছি। অথচ নারায়ণগঞ্জে কেউ কেউ ভোটের আগে অনেকে গরীবের গালে গাল লাগিয়ে ছবি তোলেন। তখন গরীবের ঘামের গন্ধ লাগে না। আর ভোট শেষ হলেই, রাস্তায় হকার আছে। পিটাও সবারে। শামীম ওসমান বলেন, আল্লাহ সাক্ষী, আমি সেদিন দেখলাম হকারদের মারছে। আমি রাস্তায় পাড়া দিলে দশ হাজার লোক এক লাখ হতে সময় লাগে না। কিন্তু আমি বেঈমানি করেছি, যাইনি। নিজের কাছে যখন অসহায় লেগেছে আমি শুধু দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করেছি আর আল্লাহর কাছে দোয়া করেছি। এসব করবেন না। কোরআনে নামাজ পড়ার কথা যতোবার আছে তার চেয়ে বেশি আছে মানুষকে খাবার দেওয়ার কথা। তাদের বাসায় যখন বাচ্চারা ক্ষুধায় কান্না করবে আর তার মা যখন আল্লাহকে ডাকবে যেই ‘হাক’ খুব মারাত্মক। ধ্বংস হয়ে যাবে সব। মাহফিলে আরো উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগ নেতা শাহ নিজাম, জাহাঙ্গীর, ওলামা পরিষদ নেতা মাওলানা ফৌরদাসুর রহমানসহ প্রমুখ।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com