শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:২৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
জব্দ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে সাবেক ভূমিমন্ত্রীর রিট আরেক হত্যা মামলায় সাবেক বিচারপতি মানিককে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে মানহানির মামলায় খালাস পেলেন তারেক রহমান উৎপাদনে ফিরলো কর্ণফুলী পেপার মিল ২০৫০ সালের মধ্যে ৪ কোটি মানুষের মৃত্যু হবে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী সংক্রমণে দিল্লিতে মেয়ের সঙ্গে থাকছেন শেখ হাসিনা, দলবল নিয়ে ঘুরছেন পার্কে পিআইবির নতুন ডিজি ফারুক ওয়াসিফ, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের এমডি এম আবদুল্লাহ ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পোশাক শিল্প আইন আপনার হাতে তুলে নেয়ার কারো কোনো অধিকার নেই :স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সেনাবাহিনীকে ক্ষমতা দেয়ার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করতে বললেন মির্জা ফখরুল

রেডিও টিকে আজও ধরে রেখেছি

মোসলেম উদ্দিন হিলি (দিনাজপুর) :
  • আপডেট সময় সোমবার, ৫ এপ্রিল, ২০২১

কালের স্রোতে আর আধুনিকতার ছোঁয়ায় বিলুপ্তের পথে রেডিও। কিন্তু আজও রেডিওর অস্তিত্ব ধরে রেখেছেন দিনাজপুরের হিলি মতিয়ার রহমান। স্কুলের বারান্দায় না গেলেও, রেডিও থেকে অনেক কিছুর শিক্ষা অর্জন করেছেন তিনি। তাই তো রেডিওকে শিক্ষকের সাথে তুলোনা করেন এই মতিয়ার রহমান। হিলি-বিরামপুর সড়কের ডাঙ্গাপাড়া নামক রাস্তার পাশে একটি ছোট মদির দোকান। সেখানে পাঁচ ছেলে আর দুই মেয়ে, তাদের নয় জন নাতি-নাতনী, মোট ১৭ জন সদস্যদের নিয়ে বসবাস করেন ৬৬ বছর বয়সী মতিয়ার রহমান। তিন বছর হলো তার স্ত্রী মারা গেছেন। বর্তমান তার নিতান্তই সঙ্গী সেই ৩০ বছরের পুরনো একটি ডিলটন কোম্পানির রেডিও। ৭৬০ টাকা দিয়ে কিনে ছিলেন রেডিও টি। আধুনিকতার ছোঁয়ায় মানুষের রুচির পরিবর্তন ঘটেছে, কিন্তু রেডিওর প্রতি অনীহা আসেনি তার। এটা যেন তার একটি বড় ধরনের নেশা, সব ছারলেও, রেডিও টি ছাড়েননি তিনি। রেডিও ফারসি ভাষা, ইংরেজি টেন্ড্যাস্টার আর বাংলায় বেতার। এক সময় রেডিওই ছিলো মানুষের একমাত্র সংবাদ মাধ্যম এবং বিনোদন কেন্দ্র। দেশ-বিদেশের সকল তথ্য, এই রেডিও র মাধ্যমে মানুষ জানতে পার তো। ১৯৭১ সালের মুক্তিযোদ্ধের প্রথম ঘোষণা দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র থেকে মেজর জিয়াউর রহমান দেন। খবর শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। তখনকার দিনে সকাল ৭ টা থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ের খবর আর বিনোদনের জন্য রেডিও হাতে নিয়ে বসে থাকতো মানুষ। মানুষের একমাত্র বিনোদন আর সংবাদের মাধ্যমি ছিলো রেডিও। আজ যুগের পরিবর্তনে রেডিও প্রায় হারিয়ে গেছে। আধুনিক যুগের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি মানুষ ব্যবহার করছে। ভিসিয়ার, ভিসিডি, টিভি আর মোবাইল ফোনের আবিষ্কারে, মুখ থুবড়ে পড়েছে এই রেডিও। বলতে গেলে চোখেই পড়ে না এই মাধ্যমটির। স্থানীয় আফজাল হোসেন বলেন, আমার জন্ম ৮০ সালে, বুদ্ধি হওয়ার পর থেকেই, আমি রেডিও দেখে আসছি। এটাই ছিলো তখনকার একটা সব কিছুর মাধ্যম। খবর সহ গান বিভিন্ন বেতার কেন্দ্রে শুনতাম। এখন কেউ আর রেডিও শোনে না। পার্শ্ববর্তী এক দোকানদার মুরাদ হোসেন বলেন, এই মতিয়ার চাচাকে আমি সেই ছোট বেলায় থেকে দেখে আসছি, তিনি রেডিও ছাড়া কিছু বোঝে না। সারাক্ষণ রেডিও টি হাতে আর ঘাড়ে নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। মতিয়ার রহমান বলেন, রেডিও আমার কাছে শিক্ষকের মতো, আমি কখন লেখা-পড়া করিনি। এই রেডিওর নিকট থেকে অনেক কিছু শিক্ষা অর্জন করেছি। জীবনে অনেক কিছুই হারিয়ে গেছে, কিন্তু এটাকে হারাতে দেয়নি। আমি প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৭ টায় বিবিসি খবর, সকাল সাড়ে ৮ টায় তেহরানের খবর এবং রাত ১০ টায় ভয়েস আপ আমেরিকার খবর শুনি। মাঝে মধ্যে পুরাতন শিল্পদের গান হলে শনি। তিনি আরও বলেন, রেডিও থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের খবর জানতে পারি। রেডিও থেকে যে শিক্ষা পেয়েছি, তাতে অনেক অজানা তথ্য জেনেছি। এখনকার ছাত্রদের অনেক প্রশ্ন করছি, তারা ঠিক মতো বলতে পাড়িনি। ঘরে টিভি থাকলেও তা দেখি না। আজও ধরে রেখেছি, হারাতে দেয়নি। আমার শেষ ইচ্ছে, বাঁকি জীবনটা এই রেডিও টিকে ধরে রাখবো।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com