সোমবার, ১১ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৫৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
মানবতা বিরোধী ও গণহত্যাকারী সংগঠন আওয়ামী লীগ কর্তৃক দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল সমন্বিত খামার স্থাপন ও সম্প্রসারণ এবং বাযো গ্যাস প্রযুক্তি বিষয়ক কর্মশালা রায়গঞ্জে প্রতিবন্ধী কৃষকের ধান কেটে দিলেন কৃষক দলের নেতা কর্মীরা মানিকগঞ্জে গণপ্রকৌশল দিবস উপলক্ষ্যে র‌্যালি-আলোচনাসভা সৎ, যোগ্য নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে বৈষম্যহীন দেশ গড়ার আহবান জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে ৭নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে পটুয়াখালী বিএনপির র‌্যালি গত এক যুগে পুলিশের এসআই নিয়োগে অনিয়ম দুর্নীতি ও আওয়ামীকরণের অভিযোগ প্রেসক্লাবে তারেক রহমানের পিপিই বিতরণ করার অপরাধে বহিস্কৃত শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাব সম্পাদক ফিরে পেলেন সদস্যপদ চকরিয়া থানার পুলিশ মিরাজ ও মিজান সহ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে শেরপুরে ডি.কে.আই.বি’র সদর উপজেলা শাখার নবনির্বাচিত কমিটির শপথ গ্রহণ

কুষ্টিয়া ভেড়ামারায় গঙ্গা-কপোতাক্ষের (জিকে) দুটি পাম্প মেশিনই আবারও বন্ধ

সাইফুল ইসলাম ভেড়ামারা (কুষ্টিয়া) :
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২১

পদ্মায় পানি সংকটে

আবারও পদ্মা নদীতে পানি কমে গেছে। এতে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় দেশের অন্যতম বৃহৎ সেচ প্রকল্প গঙ্গা-কপোতাক্ষের (জিকে) দুটি পাম্প মেশিনই আবারও বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ। পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কুষ্টিয়াসহ চার জেলার কৃষকরা চরম বিপাকে পড়েছেন। গত শুক্রবার (১৬ এপ্রিল) দুপুর আড়াইটা থেকে পাম্প দুটির পানি সরবরাহ শূন্যে নিয়ে আসা হয়। বুধবার (২১ এপ্রিল) পাম্প হাউসের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান এই প্রতিনিধিকে এসব তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, পদ্মায় পানি কমে গেছে। পানি সংকটের ফলে অনেক সমস্যা হচ্ছিল। কারণ পানি ৪.৫ মিটার আরএলের নিচে নামলে পাম্প মেশিনের কয়েল ও বিয়ারিংয়ের তাপমাত্রা বাড়ে। এতে করে মেশিনে শব্দ ও ঝাঁকুনি হয়। এসব সমস্যার কারণেই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে তাদের নির্দেশনায় পাম্প দুটি বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছি। এর আগে একই সমস্যার কারণে গত ২৬ মার্চ সন্ধ্যা থেকে ২ এপ্রিল সকাল পর্যন্ত টানা সাতদিন বন্ধ রাখা হয়েছিল পাম্প দুটি। তারপর পানি সরবরাহ শুরু হয় গত শুক্রবার (১৬ এপ্রিল) দুপুর আড়াইটার দিক থেকে আবারও পাম্প দুটি বন্ধ রয়েছে। পাম্প বন্ধ থাকলে নদীতে পানি থাকে না। নদীতে পানি না থাকায় টিউবওয়েল দিয়েও পানি ওঠে না। জিকে পাম্প বন্ধ থাকার ফলে এই অঞ্চলের মানুষের কষ্ট বেড়ে গেছে। একদিকে ফসলের ক্ষতি হচ্ছে, অন্যদিকে টিউবওয়েল দিয়ে পানি না ওঠায় চরম ভোগান্তি হচ্ছে এই অঞ্চলের মানুষদের। সেচ প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, গঙ্গা-কপোতাক্ষ (জিকে) প্রকল্পের আওতায় বোরো মৌসুমে এবার প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। চার জেলায় ১৯৪ কিলোমিটার প্রধান খালের মাধ্যমে তা দেওয়ার কথা ছিল। পাম্প হাউসের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, পদ্মায় পানির লেভেল গত সপ্তাহে কমে আসায় শুক্রবার (১৬ এপ্রিল) দুপুর আড়াইটার দিক থেকে পাম্প দুটির সরবরাহ শূন্য করতে হয়েছে। ওই সপ্তাহে পানি পাওয়া গেছে ৪.১ থেকে ৪.১৮ মিটার রিডিউসড লেভেল (আরএল) পর্যন্ত। জানা গেছে, চার জেলার কৃষির গুণগত মান বৃদ্ধি, স্বল্প ব্যয় এবং উৎপাদন বাড়ানো এই প্রকল্পের লক্ষ্য ছিল। চার জেলার ১৩ উপজেলার ৪ লাখ ৮৮ হাজার একর জমি প্রকল্পের আওতাধীন ছিল। এটি ছিল প্রথম দিকে। পরে পদ্মা নদীতে পানি কমায় পাম্পের প্রধান খালের মুখে পলি ও বালুচর জমে। পানি না থাকায় একে একে ভরাট হতে থাকে জিকে প্রজেক্টের খালগুলো। পরে প্রকল্পের আওতাও কমে আসে। ২০২১ সালের ১৫ ও ১৭ জানুয়ারি সেচ সুবিধা দিতে গঙ্গা-কপোতাক্ষ (জিকে) সেচ প্রকল্পের দুটি পাম্প চালু করা হয়। কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, মাগুরা এবং ঝিনাইদহের কৃষকদের এই সুবিধা দেওয়ার কথা ছিল। এগুলো একযোগে সেকেন্ডে ১ হাজার ২০০ কিউসেক পানি সরবরাহে সক্ষম। চালুর পর থেকে পাম্প দুটি ১০ মাস নিরবচ্ছিন্নভাবে চালানোর কথা ছিল। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, জিকে সেচ প্রকল্পের প্রধান পানির উৎস পদ্মা নদী। পাম্পটি চালু করতে যেমন প্রয়োজন ইনটেক চ্যানেলে পানি তেমনি প্রয়োজন সমুদ্রপৃষ্ট থেকে পানির স্তর ১৮ ফুট উঁচু হওয়া। কিন্তু পদ্মা নদীতে প্রয়োজনীয় পানির লেভেল নেই। ফারাক্কার বিরূপ প্রতিক্রিয়া এবং পানি চুক্তি করেও পানির ন্যায্য হিস্যা না পাওয়ায় পদ্মা এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে। পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ও লালন শাহ সেতুর এক কিলোমিটার ভাটিতে দেশের অন্যতম সেচ প্রকল্প গঙ্গা-কপোতাক্ষ (জিকে) প্রকল্প। সেচের মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধির স্বার্থে সরকার ১৯৫৪ সালে ভেড়ামারা জিকে সেচ প্রকল্পের কাজ হাতে নেয়। ১৯৬৯ সালে প্রকল্পের কাজ শেষ হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এভাবে চলতে থাকলে জিকে সেচ প্রকল্প একদিন পানির অভাবে বন্ধ হয়ে যাবে। প্রকল্পটি সচল এবং দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলকে খাদ্যে স্বনির্ভর করতে সময়ের দাবি হয়ে উঠেছে এন্ট্রি ফারাক্কা তথা গঙ্গা ব্যারেজ নির্মাণ। প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, ১০ এপ্রিল থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত ভারতের পানি নেওয়ার সময়। চুক্তি অনুযায়ী ২০ এপ্রিল থেকে বাংলাদেশ পানি পাবে। সেখান থেকে ২০ তারিখে বাংলাদেশে পানি আসা শুরু হবে। সেখান থেকে পানি আসতে ৪-৫ দিন সময় লাগবে। অর্থাৎ ২৫ তারিখে পানি পৌঁছাবে ভেড়ামারায়। সে অনুযায়ী ২৫ তারিখে থেকে পানি সরবরাহ শুরু হবে। পাম্প দুটি চালু করে দেওয়া হবে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com