চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে চলতি বছরে বোরোর বাম্পার ফলন হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশী ধান উৎপাদন হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। ফলে গ্রাম বাংলার পাড়ায় পাড়ায় ব্যস্ততা বেড়েছে কৃষাণ-কৃষাণীর ঘরে তোলার মহোৎসব। তবে গত বছরের মতো এই বছরও কভিডের প্রাদুর্ভাবে অনেক কৃষক ধান কাটার শ্রমিক সংকটে ভুগছেন। সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়,ধানের ব্যাপক সমারোহে ভরপুর সবুজ প্রান্তর। জমিতে জমিতে ধানের গন্ধে মৌ মৌ করছে চারপাশ। ইতিমধ্যে উপজেলার প্রত্যেকটি ইউনিয়নে শুরু হয়েছে পুরোদমে ধান কাটা, মাড়াই আর ঘরে তোলার মহোৎসব। এবার ধানের ব্যাপক ফলন হওয়ায় কৃষকরা আশানুরূপ ফলন গোলায় তুলতে পারবে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর অফিস। এ সময় কথা হয় উপজেলার সুন্দররপুরের কৃষক মোঃ রাশেদের সাথে। তিনি জানান, অনুকূল আবহাওয়া, রোগবালাই ও পোকার আক্রমণ না থাকায় অন্যান্য বছরের চেয়ে অনেক বেশি ধানের ফলন হবে বলে আশা করছেন তিনি। তবে উৎপাদিত ধানের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, বাজারে ধানের দাম কম। অথচ কৃষি উপকরণের দাম বাড়ছেই। এতে উৎপাদন খরচ বেশি হচ্ছে। ধান চাষে অব্যাহত লোকসান হওয়ায় কৃষক ধান চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। কাঞ্চন নগর ইউনিয়নের কৃষক মো: রহিম জানান,অনাবৃষ্টিতে বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পাইন্দং ইউপির বেড়াজালী গ্রামের কৃষক জেবল হোসেন জানান, এবার বোরোর ভালো ফলন হয়েছে। তবে দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ার অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। এছাড়াও করোনার কারণে অতিরিক্ত মজুরী দিয়েও ধান কাটার শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে পাকা ধান জমিনেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় বোরোর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ হাজার ৫০ শত হেক্টর জমি। তবে আশা করা হচ্ছে চলতি বছরের আবহাওয়া ভালো,কৃষি বিভাগের সার্বিক নজরদারি ও পরামর্শের কারণে এবারে রোগ ও পোকা মাকড়ের আক্রমণ কম।যার ফলে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যেতে পারে। এদিকে, বোরো ধানের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি ফুটলেও ধানের বাজার ন্যায্যমূল্য নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন কৃষক। এছাড়াও করোনার প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় দেশে চলছে সরকার ঘোষিত লকডাউন।লকডাউনের কারণে ধান কাটার শ্রমিকের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। বাড়তি মজুরী দিয়েও শ্রমিক পাচ্ছে না। যার ফলে ধান কাটা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভূগছে কৃষকরা। উপ সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণকারী কর্মকর্তা সুমন চন্দ্র পাল জানান,সবে মাত্র ধান কাটা শুরু হয়েছে। চলতি বছরের বোরোর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ হাজার ৫ শত হেক্টর জমি।